বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর পরিত্যক্ত ভবনে নৌ থানা

ব্যুরো প্রধান, বরিশাল
 | প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০১৭, ২২:৫৭

নদীবেষ্টিত এ অঞ্চলের নৌপথের নিরাপত্তার লক্ষ্যে বিভাগে প্রথম নৌ-থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চলতি মাসের গত ১৩ জুলাই বরিশাল সদর আরটিওপি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি বরিশাল সদর নৌ থানা হিসেবে কার্যক্রম চালুর জন্য নৌ-পুলিশের ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান আদেশ প্রেরণ করেন। ওই দিনই নৌ পুলিশের পরিদর্শক নিরস্ত্র (ওসি) মো. বেলাল হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

নদীবেষ্টিত এ জেলার বিশাল নৌপথের এবং নৌ-বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তায় বরিশাল সদর, মুলাদী, বাকেরগঞ্জ ও হিজলাসহ মোট চারটি ফাঁড়ি ছিলো নৌ-পুলিশের। সদ্যঘোষিত থানাযুক্ত হওয়ায় এ জেলায় তিনটি ফাঁড়ি ও একটি থানার মাধ্যমে নৌ-পথের নিরাপত্তা পালন করবে নৌ-পুলিশ।

বিআইডব্লিউটিএর যে পরিত্যক্ত টিকেট কাউন্টারে সদর নৌ-ফাঁড়ির কার্যক্রম চলত সেখানেই সদর নৌ-থানার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ওই পরিত্যক্ত টিকেট কাউন্টার ও গুদাম ঘরে একজন ওসি, একজন এসআই, একজন টিএসআই, দুই জন এটিএসআই, তিনজন এএসআই, নায়েক দুই জনসহ ১৬ জন কনস্টেবল ঠাঁসাঠাঁসি করে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফাঁড়ি উন্নীত এ থানার অবস্থা খুবই নাজুক। পরিত্যক্ত এ ভবনে একটি থানার কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা নৌ-বন্দর সব সময় ব্যস্ততম এলাকা। এ এলাকার নিরাপত্তাসহ নৌ-পথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে এ থানার পরিবেশ-পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হবে। ভবনের একটি কক্ষে ওসি এবং সেকেন্ড অফিসারকে অফিস করতে দেখা গেছে। পার্শ্ববতী কক্ষে (গোডাউন) ৮টি খাটে পালাক্রমে ডিউটি শেষে বিশ্রাম নেন সদস্যরা। বেহাল এ ভবনে নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে বলে আশংকা করেন কর্মরতরা।

নৌ-বন্দর সংলগ্ন স্থানে দীর্ঘদিন এ ফাঁড়ির কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় যাত্রী নিরাপত্তা অটুট ছিল। কেননা সার্বক্ষণিক নৌ-পুলিশ এ বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করত।

নৌ-পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান ভবনের আধুনিকায়ন কিংবা এখানেই নতুন ভবনে থানা ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালিত হলে বিগত দিনের ন্যায় বাড়তি সেবা পাবে যাত্রীরা।

লঞ্চ মালিকরা জানান, নৌ-দুর্ঘটনা রোধে নৌ-পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। সদর ফাঁড়ি থানা হওয়ায় তাদের কার্যক্রম আরো বেগমান হবে বলে তাদের প্রত্যাশা।

বরিশাল নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোতালেব হোসেন জানান, বিভাগের ১০টি ফাঁড়ি এবং নবনির্মিত থানার কার্যক্রম জোরদার করতে হলে নৌ-পথের অত্যাধুনিক যানবাহনের প্রয়োজন। কেননা নৌ-পথের চোরাচালান, মৎস্যসম্পদ রক্ষায় যেসকল যানবাহন রয়েছে- তা অপ্রতুল। বর্তমানে চোরকারবারিসহ মৎস্য শিকারিরা দ্রুত গতির নৌ-যান ব্যবহার করে। এখানকার ফাঁড়িগুলোর জন্য যে ওয়াটারবাইক কিংবা স্পিটবোর্ড রয়েছে তা দিয়ে অভিযান সফল করা অনেকাংশেই সম্ভব হয় না। তাই উত্তাল নদীতে অপরাধীদের পাকড়াও কিংবা মৎস্যসম্পদ রক্ষা করতে আধুনিক জলযানের প্রয়োজন।

থানা ঘোষণার পূর্বে দীর্ঘদিন ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা ইনচার্জ (বর্তমানে সেকেন্ড অফিসার) এসআই শফিকুল ইসলাম জানান, গত এক বছরে তার নেতৃত্বে সদর নৌ-ফাঁড়ির সদস্যরা এক লাখ মিটার বাঁধা জাল আটক করে, যার বাজার মূল্য রয়েছে অর্ধকোটি টাকা, ৫ লাখ মিটার কারেন্ট জাল যার বাজার মূল্য এক কোটি টাকা, ২৫০ মণ জাটকা ইলিশ আটক করে। এসব অভিযান পরিচালনার সময় দুশ জনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ৫০ জনকে জেল-জরিমানা ও বাকিদের জরিমানা করা হয়।

নৌ-পুলিশ সূত্র জানায়, বড় বড় নদীতে ডাকাতরা মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাতেও হানা দিয়ে লুটপাট চালানোর পর অনায়াসে নিরাপদে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় কেবলমাত্র আধুনিক নৌযান থাকায়। কিন্তু নৌ-টহলের জন্য কোস্টগার্ডের আদলে আধুনিক নৌযান, আধুনিক টহলযান, স্পিডবোট, দ্রুতগতির ইঞ্জিনবোর্ড যুক্ত করা হলে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

(ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/টিটি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :