‘ছবি তুলবেন ভাই, ডিজিটাল ক্যামেরায়’

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট ২০১৭, ১৪:২০

‘ছবি তুলবেন ভাই, ছবি। আমরা ছবি তুলে দেই। ডিজিটাল ক্যামেরায় দেব তুলে। ক্যামেরার রেজুলেশন ভালো আছে। কম টাকায় তুলে দিব, ছবি তুলে মেমোরি কার্ডে দিয়ে দিব। প্রতি ছবি ১০ টাকা। বেশি করে তুলে নিলে কম করে রাখব, চাইলে ছবি এডিট করে দিব। দাম একটু বেশি লাগবে ভাই। ক্যামেরা যখন নিয়ে আসেননি এখানকার কিছু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে স্মৃতি হিসেবে ছবি তুলে নিয়ে যান, মনে রাখার মতো এলাকা।’

এই কথাগুলো বলছিলেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার জাফলংয়ে কিছু স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কিছু উদ্যমী তরুণ ফটোগ্রাফার। এই তরুণদের নেই কোনো ছবি তোলার প্রশিক্ষণ। তাতে কী! আছে ছবি তোলার মতো নিখুঁত দুটি হাত। যা দিয়ে কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই এইস বেকার তরুণ সারাদিন কাঁধে ক্যামেরা ঝুঁলিয়ে পর্যটকদের ছবি তোলার কাজে ব্যস্ত থাকে।

এখানে ৩০ জনের বেশি তরুণ ফটোগ্রাফার রয়েছে। তাদের মধ্যে কথা হয় মেহেদী হাসান (২০) নামে এক যুবকের সাথে। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এখানে এসেছেন ছয় মাস আগে। বাবার নাম রাজু খান। জাফলং বাজারে তাদের একটি কসমেটিকসের দোকান আছে।

তার সাথে কথা বলে জানা যায়, দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে তিনিই বড়। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর নানা কারণে আর সুযোগ হয়ে উঠেনি লেখাপড়া করার। সংসারের হাল ধরতে প্রথমে নিজ এলাকায় বিভিন্ন কাজ করেছেন। এরপর গত ছয় মাস আগে এখানে এসে নিজ উদ্যোগে এই ফটো তোলার কাজে লেগে যান। সারাদিনে পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকা উপার্জন হয়। কোনোদিন তার চেয়ে বেশি। আবার কোনো দিন শূন্য। এভাবেই চলছে এখন তার জীবন।

একই এলাকা থেকে আসা জাহির হোসেন (২০) নামে আরেকজনের সাথে কথা হয়। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ভাই লেখাপড়া করতে না পেরে বিভিন্ন কাজ করেছি। এখন সবার সাথে মিলে এখানে আসা পর্যটকদের ছবি তোলার জন্য সারাদিন এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করি। অনেকেই ক্যামেরা নিয়ে আসে আর বেশির ভাগই ক্যামেরা ছাড়া আসায় আমাদের ভালোই ইনকাম হয়। সারাদিন আনন্দের সাথেই সময় চলে যায়। আমরা যেমন খুশি তেমনি এখানে আসা পর্যটকরাও এখানকার পাহাড় ও নদীর সাথে ছবি তুলে খুশি।’

মেহেদী হাসান ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা জানান, জাফলং এলাকাটি খুবই সুন্দর। তবে এখানে আসতে সড়কপথে প্রচণ্ড ভোগান্তি পোহাতে হয়। রাস্তার অবস্থা খুবই করুণ। তারা দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানান।

স্থানীয় করিম মিয়া, সাজিদ খানসহ এলাকাবাসী ঢাকাটাইমসকে জানান, এই যুবকেরা অনেক দিন ধরেই এই ছবি তুলে এখানে আসা পর্যটকদের। এরা বেকার না থেকে ভালো একটা কাজ করছে। কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই তাদের ছবি তোলা দেখে পর্যটকরাও মুগ্ধ।

(ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :