জামালপুর পৌর ঈদগাহের একি হাল!

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১০ মে ২০১৯, ১৭:৩৯
অ- অ+

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় গুরুত্ব না দেয়ায় জামালপুর কেন্দ্রীয় পৌর ঈদগাহ মাঠ সারাবছর ধরেই থাকে জঙ্গলে ঢাকা। প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ মাঠের এই নাজুক অবস্থা দেখে বিস্মিত হলেও মাঠটির এই অবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কেউই সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে মাঠ ব্যবস্থাপনায় থাকা জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সারাবছর ধরেই এই মাঠ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

জামালপুর কেন্দ্রীয় পৌর ঈদগাহ মাঠটি শত বছরের পুরনো। প্রায় দুই বিঘা জমির এই মাঠে দুই ঈদে এক সাথে প্রায় চার হাজার মুসল্লি এখানে ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন। ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিমতীর ঘেষা প্রধান সড়কের পাশে এই ঈদগা মাঠের পেছনে জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, বামে হজরত শাহ জামাল (রহ.)-এর মাজার ও সদর থানা এবং ডানে জেলা জজ আদালত।

একদিকে প্রধান সড়কের পাশে, অন্যদিকে সরকারি অফিস আদালত এলাকার মাঝে অবস্থিত এই ঈদগাহ মাঠজুড়ে গাছগাছরায় জঙ্গলে পরিণত হয়ে আছে। এমন জঙ্গল শহরের আর কোথাও চোখে পড়ে না।

সন্ধ্যার পর থেকেই অন্ধকার নেমে আসে এই মাঠে। নেই বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা। প্রতিরাতেই বসে মাদকাসক্তদের আড্ডা। মাদক সেবন থেকে শুরু করে মাদকবেচাকেনাও চলে দেদারছে। মাঠটি সারা বছর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখে দুই ঈদের জামাতে নামাজ ছাড়াও সারা বছর মৃত ব্যক্তিদের জানাজা ও ইসলাম ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষের অনেকেই মতাম দেন।

জামালপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রতি বছর এই মাঠ ইজারাও দিয়ে থাকে। এই মাঠের বর্তমান ইজাদার জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের গাড়িচালক বাদশার স্ত্রী। চাকরিতে বহাল থাকার কারণে স্ত্রীর নামে ইজারা নিয়ে মূলত বাদশা নিজেই ইজারা চুক্তি অনুযায়ী মাঠ দেখাশোনা করেন। তিনি এক বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন আট হাজার টাকায়। এখানে ইজারাদারের আয়ের উৎসের মধ্যে ঈদগাহ মাঠের চারদিকে কিছু আম-কাঁঠাল ও অন্যান্য ফলজ গাছ রয়েছে। এসব গাছের ফল বিক্রি করে ইজারার টাকা উঠিয়ে থাকেন। কিন্তু তিনি সারা বছর এই মাঠ পরিষ্কার করেন না। ফলে মাঠটি জঙ্গলে পরিণত হয়ে সাপ থেকে শুরু করে ক্ষতিকর পোকা-মাকর ও মশার আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। ইজারাচুক্তিতে সারাবছর ধরে মাঠ পরিষ্কার রাখার কথাও উল্লেখ নেই বলে দাবি করেছেন বাদশা।

বাদশা বলেন, ‘আমি চাকরি করি তো, তাই স্ত্রীর নামে এই ঈদগাহ মাঠ ইজারা নিয়েছি। ইজারা চুক্তিতে মাঠ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কথা বলা নেই। ফলফলান্তির গাছের ফলও ঠিকমতো উঠাতে পারি না। ফলের মৌসুম এলে গাছের বেশিরভাগ ফল চুরি হয়ে যায়। চিন্তা করছি যে এবার মেয়াদ শেষ হলে আমি আর এই মাঠের দায়িত্ব নিবো না।’

ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি বলেন, ‘পৌর পরিষদ থেকে এই মাঠের সংস্কার বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাজে কোনো বাজেট রাখি না। বেশকিছু ফলজ গাছসহ মাঠের দেখাশোনা করার জন্য প্রতি বছর ইজারা থেকে সামান্য কিছু টাকা আয় হয়। ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ধর্মীয় বিষয় বিবেচনায় রেখে ইজারার টাকা এবং বিশেষ বরাদ্দের টাকায় বছরের দুই ঈদে পৌরসভার পরিচ্ছন্ন শাখার কর্মীদের দিয়ে পরিষ্কার করিয়ে দেই। এই মাঠ সারা বছর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। দেখি এবারের ঈদের পর থেকে মাঠটি সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগ নিবো।’

জামালপুর কেন্দ্রীয় পৌর ঈদগা মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ঈদগাহ মাঠ সারা বছর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাই ভালো। শিগগির এই মাঠ থেকে সব জঙ্গল পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নিবো। একই সাথে সব সময় যাতে এই মাঠ পরিষ্কার থাকে সেই ব্যবস্থাও নেয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১০মে/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দেশের ৭টি অঞ্চলে ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস
ভোলায় সন্তানের গলায় অস্ত্র ধরে গৃহবধূকে ‘ধর্ষণ’
গাজায় ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরও ৭৪ ফিলিস্তিনি নিহত
Blending the Education with Nature
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা