বাবা-মায়ের ঝামেলা মেটাতে থানায় ১০ বছরের শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ জুন ২০১৯, ১৯:৩২ | প্রকাশিত : ২২ জুন ২০১৯, ১৯:২১

সন্দেহ থেকে বাবা-মায়ের ঝগড়া হয় প্রায়ই। কখনো হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। বিষয়টি কষ্ট দেয় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের। তাই নিজে থেকেই বাবা-মায়ের ঝামেলা মেটানোর চিন্তা করে ছেলেটি। পরে এলাকার থানায় ছুটে যায় সে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে সমস্যার কথা খুলে বলে সে।

বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দফায় ছেলেটির বাবা-মাকে থানায় ডেকে ঝামেলা মিটেয়ে দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

এমন ঘটনাটি ঘটেছে খোদ রাজধানীর সূত্রাপুর থানায়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিজের ফেসবুকে এক পোস্টে এ নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন তিনি। ছোট্ট ছেলেটির ব্যবহারেও মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কাজী ওয়াজেদ।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে কাজী ওয়াজেদ লিখেছেন, বিস্কুট খাওয়ার জন্য বলতেই বললো, থ্যাংক ইউ স্যার, বিস্কুট খাবো না। আর খাবেই বা কিভাবে? কান্নাজড়িত কণ্ঠে যে কিছু খেতে ইচ্ছে করে না। তাছাড়া প্রথমে একবার সৌজন্যতা দেখিয়ে না বলতেই হয়। ছোট্ট ছেলেটির মধ্যে সেই ভদ্রতাটুকু বেশ আছে লক্ষ্য করলাম।

ছেলেটির সাহসের তারিফ করতেই হয়। গতকাল (বৃহস্পতিবার) কাঁদতে কাঁদতে থানায় আসে। অভিযোগ, বাবা শুধু শুধু মা-কে সন্দেহ করে। আর এসব নিয়ে ঝগড়া ঝাটি, হাতাহাতি, যা দেখতে ভালো লাগে না ৩য় শ্রেণিতে পড়া দরিদ্র পরিবারের ছেলেটির।

বাবা মায়ের ঝামেলা মেটানোর জন্য নিজে থেকেই থানায় আসে সে। গতকালই বাবা মা-কে থানায় এনে কথা বলার জন্য অফিসার পাঠালেও পাওয়া যায়নি বাবাকে।

শুক্রবার বাবা আর মা-কে ডেকে এনে বোঝানো হলো যাতে তাদের কোন আচরণের কারণে ছেলেটির স্বাভাবিক জীবনে কোন প্রভাব না পড়ে। ছেলেটিও খুব খুশি হল। যতটুকু বোঝা গেল ছেলেটি পারিবারিক শান্তি আর নিরাপত্তা চায়। চায় টেনশনমুক্ত থেকে সুন্দরভাবে পড়ালেখা করতে।

কথাবার্তায় অত্যন্ত মার্জিত আর শব্দ চয়নে মেধার মিশ্রণ। পারিবারিক দৈন্যতার মাঝেও ছেলেটির মাঝে বড় হওয়ার একটা আকুতি বেশ স্পষ্ট। কাছে বসিয়ে নিচু স্বরে আর্থিক কোন সমস্যা আছে কিনা জিজ্ঞেস করতেই বললো, নেই স্যার। বুঝলাম এই ছোট ছেলেটির সামর্থ না থাকলেও আত্মসম্মানবোধে কোন ঘাটতি নেই।

শুক্রবার ২য় দিনে তিনবার বলার পর একটা বিস্কুট হাতে নিলেও খেতে দেখলাম না। শুধু তাই নয়, যাওয়ার সময় বাবা মায়ের সামনেই নিজ থেকে চেয়ে নিল আমার ফোন নম্বর। ছোট্ট ছেলেটি খুব স্মার্টলিই বললো স্যার, প্রয়োজনে আপনাকে ফোন দিবো। ছোট এই ছেলেটির আচারণ আর কথাবার্তায় বিস্মিত না হয়ে পারিনি। মনে মনে ভাবলাম, এমন সাহসী আর স্মার্ট ছেলেই তো আমরা চাই। ওর কথাবার্তা আর আচরনে মনে হল ও যাবে অনেক দূর, ভাল কিছু পাবো আমরা ওর কাছ থেকে !

(ঢাকাটাইমস/২২জুন/বিইউ/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :