পরমতসহিষ্ণুতা ক্রমশ লোপ পাচ্ছে: আনিসুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:২৯
ফাইল ছবি

বর্তমান সময়ে পরমতসহিষ্ণুতা ক্রমশ লোপ পাচ্ছে বলে মনে করেন জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘এটিই সমাজের একমাত্র ছবি নয়। কোনো সমাজেরই তা হতে পারে না। আমাদের তরুণ-তরুণীরা রাতের পর রাত সঙ্গীত উৎসবে যোগ দিচ্ছে। তারা সাহিত্য সৃষ্টি করছে, চিত্রকলায় নতুনত্ব আনছে, কৃতিত্বের সঙ্গে চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে।’

মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মারক বক্তৃতায় এমন মন্তব্য করে আনিসুজ্জামান।

এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘বাংলা একাডেমি নিজস্ব গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। তবে চেষ্টা যে হয়নি তা নয়। কিন্তু সেটি সফল হয়নি। অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়, এ কাজটি সম্পন্ন করা যাবে না।’

একাডেমির রবীন্দ্র চত্বরে দেওয়া এ স্মারক বক্তৃতার শিরোনাম ছিল ‘বাংলা একাডেমি ও আমাদের সমাজ’। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

আনিসুজ্জামান বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আবশ্যকীয় বাংলা বইপত্র প্রকাশের কাজটাও তেমন অগ্রসর হয়নি। যারা জ্ঞানবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষকতা করেন, তাদেরকেই তো নিজেদের ক্ষেত্রের বইপত্র মাতৃভাষায় লিখতে হবে। তাদের থেকে সাড়া না পেলে তো একাডেমি নিজের থেকে কিছু করতে পারবে না। এক্ষেত্রে সমাজ যদি নিজের দায়িত্বটুকু স্বীকার না করে, তবে আমাদের পিছিয়ে পড়তে হবে।’

একাডেমির সভাপতি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ থেকে প্রেরণা নিয়ে বাংলা একাডেমির পরিসর এখন সবদিক দিয়ে প্রশস্ত হয়েছে। একাডেমির একটা বড় কাজ প্রকাশনা। একাডেমি থেকে বহু ধরনের অভিধান প্রকাশিত হয়েছে এবং তার অধিকাংশই বিস্ময়করভাবে জনপ্রিয় হয়েছে। একাডেমির আরেকটি কাজের দিক অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি থেকে সম্পাদিত বাংলা সাহিত্যকর্ম প্রকাশ করা।’

‘নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধিত গবেষণাকর্ম প্রকাশের প্রধান ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলা একাডেমি। লোকসংস্কৃতির নমুনা সংগ্রহ ও সম্পাদনায় একাডেমি বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে। একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলা এখন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জীবনের অপরিহার্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। সমাজের চাহিদাবশত স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় বইমেলা অনুষ্ঠানের দায়িত্ব একাডেমিকে নিতে হচ্ছে।’

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাংলা একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠান সমাজকে সংস্কৃতিপ্রিয় হতে সাহায্য করে। সমাজেও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসার একটা ক্ষেত্র থাকতে হবে। বাঙালির সংস্কৃতিপ্রিয়তার খ্যাতি আছে। তবে এখন তা কতখানি সত্য, তা ভেবে দেখার অবকাশ আছে।’

জাতীয় অধ্যাপক বলেন, ‘আমাদের স্থপতিরা বিরল আন্তর্জাতিক সম্মান বয়ে নিয়ে আসছেন দেশের জন্য। ভরসাটা এখানেই। এরাই সেই সমাজ যা বাংলা একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠানের সেবা নেবে এবং এমন প্রতিষ্ঠানকে সামনে চলার প্রেরণা দেবে। বাংলা একাডেমি নিঃসঙ্গ দ্বীপের মতো নয়। সমাজে তার অবস্থান, সামজেই তার ভিত্তি। সেই ভিত্তিটা যত শক্ত হয়, উভয়ের ততই মঙ্গল।’

স্মারক বক্তৃতা শেষে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সংবর্ধিত করা হয় একাডেমির প্রাক্তন মহাপরিচালক, সচিব, পরিচালক ও উপপরিচালকদের। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

(ঢাকাটাইমস/০৩ডিসেম্বর/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :