করোনাকালে বয়স্কদের যত্নে সচেতন আছেন তো?

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ০৬ মে ২০২০, ১৪:২৪ | প্রকাশিত : ০৬ মে ২০২০, ১২:৩২

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ঘরের বাইরে যেতে মানা। প্রায় দুই মাসের মতো ঘরবন্দি এই সময়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বাড়ির বয়স্করাই। বয়স বেশি হলে করোনার ছোবলের ভয়ও বেশি। অধিকাংশ বয়স্ক মানুষ ডায়াবেটিস, প্রেশারের মতো নানা সমস্যাই ভোগেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক কমে যায় বয়স্কদের। তাই এই সময়ে বয়স্কদের যত্নে থাকতে হবে সচেতন।

করোনা মহামারীর শুরু থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা লকডাইন ও আইসোলেশনের রীতি বয়স্কদের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে মেনে চলতে বলে আসছে। কিন্তু একটানা বাড়িতে থাকতে থাকতে তাদের মনের ওপরর চাপ পড়ে। শরীরের পাশাপাশি মনের ক্ষেত্রটিতেও সমান যত্ন প্রয়োজন।

মনোবিদদের মতে, বিকালের আড্ডা বা পাড়ায় ঘুরে আসা বন্ধ। চেনা মানুষজনকে দেখতে না পাওয়াও এই সময় বয়স্কদের মনে একইসঙ্গে বিরক্তি ও একঘেয়েমি তৈরি করছে। এসব থেকে মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। ট্রমা দানা বাঁধতে পারে।

মনের জোর ও মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়লে কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। কেউ কেউ জীবন সম্পর্কেও বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়তে পারেন। এসময় তাই কিছু কৌশলে যেমন বয়স্কদের বাড়িতে থাকার দিনগুলো আনন্দদায়ক করে তুলতে হবে।

শরীরের যত্নে খেয়াল রাখুন এসব নিয়ম

>>বয়স্করা ওষুধপত্র সময়মতো খাচ্ছেন কি-না দেখুন। প্রয়োজনে তাদের ওষুধের ডোজ বাড়া-কমা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।

>>হাড়ের সমস্যা না থাকলে বা চিকিৎসকের বারণ না থাকলে বয়স্কদের ছাদে হাঁটাহাঁটি বা জগিং করতে হবে। শরীর ও অসুখ বুঝে কিছু ব্যায়াম চিকিৎসার অঙ্গ হয়ে থাকে। তাই সেসব ব্যায়াম নিয়মিত করে যেতে হবে।

>>ঘন ঘন হাত ধোওয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহার অবশ্যই জরুরি।

>>ছাদে হাঁটতে বের হলে বা বাড়ির সামনে কোনও ফাঁকা জায়গায় গিয়ে রোদ পোহালেও মাস্ক পরুন বয়স্করা। গায়ে রোদ লাগানো খুবই জরুরি। তাই জানলা খুলে রোদ আসতে দিন বয়স্কদের ঘরে।

>>খুব বেশি তাপমাত্রার ফারাক এরা সহ্য করতে পারেন না। তাই অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা কোনওটাই যেন না লেগে যায় তা দেখতে হবে।

>>গরম পানিতে স্নান করতে হবে বয়স্কদের। তাদের খাবার রান্নায় আদা-দারচিনি-হলুদের মতো মশলা— যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে সেসব ব্যবহার করুন।

>>আদা, গোলমরিচ, দারচিনি, লবঙ্গ, কাঁচা হলুদ ফুটিয়ে পানীয় তৈরি করে লেবু মিশিয়ে চায়ের মতো খাওয়াতে পারেন।

>>হাতের কাছে রাখতে হবে তাদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় উপাদান ও চিকিৎসকের ফোন নম্বর। কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে তার চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না।

মন ভাল রাখার কয়েকটি উপায়

>>যেসব বন্ধুবান্ধব ও সঙ্গীদের আড্ডা ছেড়ে তারা ভাল নেই, তাদের সঙ্গে ফোনে বা ভিডিওকলের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দিন। প্রয়োজনে অনেকে মিলে অনলাইনে আড্ডাও দিতে পারেন। বয়স্ক সদস্য প্রযুক্তি ব্যবহারে এতটা দক্ষ নাও হতে পারেন, সে ক্ষেত্রে তাদের সাহায্য করুন।

>>ভাল বই পড়া, গান শোনা বা গাছেদের পরিচর্যা করার মধ্যেও বয়স্করা আনন্দ পান। সেসব উপাদানের যাতে অভাব না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

>>বাড়ির খুদে সদস্যটিকে বেশির ভাগ সময়টাই ছেড়ে দিন বাড়ির সবচেয়ে বড় মানুষটির কাছে। এই দুইয়ের সঙ্গ দুজনেরই মনের চাপ কমাবে। হুহু করে সময়ও কাটবে। বাড়িতে পোষ্য থাকলে তার সঙ্গেও সময় কাটাতে পারেন বয়স্ক মানুষটি। এতেও মন ভাল থাকবে।

>>এমন কোনও কাজ করবেন না যাতে বয়স্ক মানুষটি মনে দুঃখ পান। যেমন সময় কাটানোর জন্য অনেক বয়স্ক মানুষই টিভি দেখেন। বয়স্ক মানুষটি তার পছন্দের অনুষ্ঠান দেখার সময় টিভির চ্যানেল বদলে দেবেন না। এতে তিনি নিজেকে গুরুত্বহীন বলে ভাবতে পারেন। প্রয়োজনে নিজেদের পছন্দের অনুষ্ঠান মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে দেখুন।

>>তার খাওয়া-স্নান-ওষুধ খাওয়া এসব কাজ যেন ঘড়ি ধরে সময়মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে তিনি যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন না তেমনই তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দেখে আনন্দ পাবেন।

>>নিজেরাও অনেকটা সময় কাটান বাড়ির বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে। তাদের শরীর ভাল থাকলে হালকা কিছু কাজের দায়িত্বও দিন।

(ঢাকাটাইমস/০৬মে/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :