নিজের মেজাজে চলেন ট্রাম্প, বিশ্বাস করেন না কাউকে: বোল্টন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ জুলাই ২০২০, ১১:৩০

বছর শেষে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ভোটের দামামা এরই মধ্যে বেজে উঠেছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে। একই কথা বলছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তারই মধ্যে ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন জানালেন, হোয়াইট হাউসের কাউকেই বিশ্বাস করেন না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এছড়া তিনি চলেন নিজের মেজাজ মতোই এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ নথিও পড়ে দেখেন না বলে দাবি বোল্টনের।

বছরের গোড়াতেও দেশের সাধারণ মানুষের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু একের পর এক অভিঘাত ক্রমশ তাকে দেশের মানুষের কাছে অপ্রিয় করে তুলেছে। একদিকে করোনা পরিস্থিতি, তার জেরে লকডাউন এবং কাজ চলে যাওয়া, অন্য দিকে জর্জ ফ্লয়েড হত্যা- সব মিলিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে ট্রাম্প প্রশাসন।

সাধারণ মানুষের বক্তব্য, কোনো কিছুই সামলে উঠতে পারছেন না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বিরোধীপক্ষও লাগাতার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন সম্প্রতি টুইট করে বলেছেন, 'ট্রাম্পের উচিত নিজের কাজ মন দিয়ে করা'।

এই পরিস্থিতিতেই ফের মুখ খুললেন সাবেক মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্ঠা জন বোল্টন। ১৮ মাস হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছিলেন বোল্টন। সম্প্রতি একটি বইও লিখেছেন তিনি। যেখানে ট্রাম্পের একাধিক সমালোচনা করেছেন। প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্ট শুনানি পর্বেও বার বার বোল্টনের নাম সামনে এসেছে। সিনেটে গিয়ে সাক্ষ্য দিতেও রাজি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি।

সাক্ষাৎকারে বোল্টন জানিয়েছেন, ট্রাম্পের পড়ার বিশেষ অভ্যাস নেই। গুরুত্বপূর্ণ নথিও গোটাটা পড়ে দেখেন না তিনি।

হোয়াইট হাউস অবশ্য দাবি করে, ট্রাম্পের কাছে সমস্ত তথ্য থাকে। কিন্তু বোল্টন তা মানতে চাননি। তার বক্তব্য, নিরাপত্তা বিষয়ক নথিও পুরোটা পড়ে দেখেন না ট্রাম্প। তিনি চলেন নিজের মেজাজে। তার যা ভালো মনে হয়, সেটাই করেন। এ প্রসঙ্গেই উত্তর কোরিয়ার প্রধান কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন বোল্টন। জানান, ওই বৈঠকেও ট্রাম্প নিজেকে খুব তৈরি করে যাননি। তাকে যা যা নথি দেওয়া হয়েছিল, তার প্রায় কিছুই তিনি মন দিয়ে পড়েননি এবং সে কারণেই কার্যত বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল তাকে। শেষ মুহূর্তে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার ডিল মেনে নিলে দেশে প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে তাকে।

হোয়াইট হাউসে তার অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন বোল্টন। তার বক্তব্য, কর্মীদের অধিকাংশকেই বিশ্বাস করেন না ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, হোয়াইট হাউসের মধ্যে একটা অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করে রাখেন তিনি। যাতে কেউ কাউকে বিশ্বাস না করেন। এটাই প্রেসিডেন্টের কাজের পদ্ধতি এবং সে কারণেই কেউ ট্রাম্পের সমালোচনা করতে পারেন না। সমালোচনা করার অর্থ কাজ থেকে বিদায় নেওয়া। চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে কেউ আর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন না। ভুলও ধরিয়ে দেন না।

বোল্টনের বক্তব্য, চীনের রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিং কিংবা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ঈর্ষা করেন ট্রাম্প। তাদের একচ্ছত্র ক্ষমতাই এর কারণ বলে মনে করেন তিনি।

এই প্রসঙ্গেই সৌদি আরবের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কের প্রসঙ্গে নিজের মতামত জানিয়েছেন বোল্টন। তার বক্তব্য, সৌদির সঙ্গে ট্রাম্প সুসম্পর্ক না রাখলে পুতিন সেখানে অস্ত্র বিক্রি করতেন। পুতিনের কাছ থেকে এমনটাই জেনেছেন তিনি। সে কারণেই সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক রাখা জরুরি ছিল।

ইমপিচমেন্ট নিয়েও নিজের মতামত জানিয়েছেন বোল্টন। তার বক্তব্য, যে কায়দায় ট্রাম্প নিজেকে ইমপিচমেন্টের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন, দেশের মানুষ তা খুব ভালো চোখে দেখেননি। তার বক্তব্য, সিনেটে ইমপিচমেন্টের গোটা প্রক্রিয়াটাই পক্ষপাতপূর্ণ ছিল। সকলের চোখেই তা ধরা পড়েছে।

ঢাকা টাইমস/০৯জুলাই/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

রেকর্ড ৬২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে রিও ডি জেনেরিও

পুতিনের নিন্দায় পশ্চিমারা, সম্পর্ক জোরদারের প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের

রাখাইনের আরেকটি শহর দখলে নিলো আরকান আর্মি

ইসরায়েলি হামলায় শীর্ষ ফিলিস্তিনি পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

ধর্ষণের অভিযোগে আর্জেন্টিনার চার ফুটবলার আটক

হামাসের সিনিয়র সামরিক নেতা মারওয়ান ইসা মারা গেছেন, দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

গাজায় ভোরে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত ২০ ফিলিস্তিনি

৪০ জিম্মির বিনিময়ে গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েলের

আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিমান হামলায় নিহত ৮

কলকাতায় নির্মাণাধীন ভবন ধসে নিহত ৪, ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা অনেকে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :