কোনোভাবেই আপনার পিন বা ওটিপি নাম্বার কাউকে দেবেন না

মাহবুব কবীর মিলন
 | প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০২০, ১১:০৩

ধরুন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা। কারো কোনো দোষ নেই। নিখুঁত সব। কিন্তু গ্রাহকের দুর্বলতা বা অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে অসংখ্য প্রতারক গজিয়ে উঠেছে মাঠে। তারা জনগণকে সমানে প্রতারিত করে যাচ্ছে। অসহায় মানুষগুলো চরমভাবে আর্থিক ক্ষতগ্রস্ত হচ্ছে।

যদি দোষ ধরেন, তবে দোষ জনগণের। তাহলে কি করবেন? হাত তালি দেবেন? মরুক ব্যাটা জনগণ! জনগণ না বুঝে, ভুল বুঝে, ভয়ে, আতংকে, সঠিক মনে করে, লোভে, অসহায় হয়ে তার পিন এবং ওটিপি নাম্বার দিয়ে দেয় প্রতারককে। কারণ প্রতারকের প্রতারণার ধরণ এমন যে, শুধু অশিক্ষিত নয়, অনেক উঁচু স্তরের মানুষও প্রতারিত হচ্ছে অহরহ।

পিন নাম্বার আর ওটিপি নাম্বার দিলেন তো আপনার মোবাইল ব্যাংকে (বিকাশ, রকেট, নগদ ইত্যাদি) থাকা সব টাকা গায়েব। এই প্রতারণার সাথে এজেন্টরাও অনেকেই দায়ি। আবার বলছি, তাহলে কি করবেন? কি করা উচিৎ সরকারি/বেসরকারি পর্যায়ে?

আজ আমার বন্ধু ইনকাম ট্যাক্স কমিশনার Bazlul Kabir Bhuiyan অনেক আক্ষেপ আর দুঃখ নিয়ে লিখেছেন তাঁর স্ট্যাটাসে। "এক এতিম খানার সুপার ভাইজার ম্যাডামকে কিছু টাকা পাঠালাম বিকাশ করে। তিনি পেলেন। কয়েক ঘন্টা পর জানালেন সকল টাকা বিকাশ একাউন্ট থেকে চুরি হয়ে গেছে।

কয়েক মাস আগে গোপাল গন্জের বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানালেন তাঁদের একজন হত দরিদ্র ছাত্রের বড় একটা সার্জারী অপারেশন হয়েছে। কিছু সাহায্য করতে পারব কিনা জানতে চাইলেন। পাঠালাম ওনার বিকাশে। কিছুক্ষণ পর জানালেন ঐ টাকাসহ ওনার টাকাও উধাও।

আমার এক স্যার কিছু গরীব শিক্ষার্থীদের মাসিক সাহায্য করেন বিকাশের মাধ্যমে। একদিন তিনি ৪০ জনকে সাহায্য পাঠালেন কয়েক মাস আগে। তারমধ্যে কয়েকজনের টাকা চুরি বিকাশ একাউন্ট থেকে।"

বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) নীতিমালায় জানিয়েছে, একজন ব্যক্তি, কোন এমএফএস প্রোভাইডারের সাথে একাধিক একাউন্ট চলমান রাখতে পারবে না। একটি এনআইডির বিপরীতে একটি একাউন্ট। অসাধু উপায় বন্ধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এই ব্যবস্থা নিয়েছে।

বিকাশ জানিয়েছে, তারা গ্রাহকের সুবিধার্থে মাল্টিপল ডিভাইস লগ ইন সিস্টেম চালু করেছে। অর্থাৎ আপনার পিন এবং ওটিপি দিয়ে আপনি ইচ্ছামত আপনার একাউন্ট মাল্টিপল ডিভাইসে লগ ইন করে ট্রানজেকশন করতে পারবেন।

এটাই প্রতারকদের অস্ত্র। দরকার শুধু পিন আর ওটিপি নাম্বার। সরকারি নীতিমালা শতভাগ ফলো করা হলো, মাল্টিপল ডিভাইস লগ ইন সুবিধাও চালু করা হল। বরবাদ হল বোকা জনগণ। তাহলে কি করতে হবে? প্রস্তাব দিয়েছি বাংলাদেশ ব্যাংকে। যদি হতভাগাদের জন্য কিছু করা যায়। কোনভাবেই আপনার পিন বা ওটিপি নাম্বার কাউকে দেবেন না বা মেসেজ ফরোয়ার্ড করবেন না।

লেখক: অতিরিক্ত সচিব, রেলওয়ে মন্ত্রণালয়

ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :