করোনায় রেস্তোরাঁর খাবার কি নিরাপদ?
করোনা আবহে অনেকে বাহিরের খাবার নিয়ে সংশয়ে ভুগছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে যতটা সম্ভব সতর্ক থাকার চেষ্টা করছেন বেশিরভাগ মানুষ। বাইরে না গিয়ে বরং অনলাইনেই কেনাকাটার পাট সারতে চাইছেন অনেকে। খাদ্য সামগ্রী এবং অন্যান্য জিনিসপত্র অর্ডার করছেন অথবা বাইরে গিয়ে খাবার খাচ্ছেন। তবে হোটেল, রেস্তোরাঁ বা বাইরে থেকে আসা খাবারগুলো আপনার জন্য কতটা নিরাপদ।
চিকিৎসকরা বলছেন, গরম খাবার বা নিজে হাতে খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া যায় এমন ফল ছাড়া বাইরের অন্য কিছু খাবার না খাওয়াই ভাল। করোনা সংক্রমণে বাইরের খাবারের অভ্যাস একেবারে কমে গিয়েছে। রোগ ঠেকানোর ৮০ শতাংশ চাবিকাঠি যেখানে লুকিয়ে আছে হাতের পরিচ্ছন্নতার উপর, সেখানে অন্যের হাতে বানানো, অন্যের হাতে পরিবেশন করা ও অন্যের হাতে ধোওয়া বাসনে খেলে নিরাপত্তার প্রাথমিক শর্ত বিঘ্নিত হবে, এই আতঙ্ক কাজ করেছে অনেকের মধ্যেই।
খাবার অর্ডার দেয়ার ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হবে কিনা তা নিয়ে অনেকে সংশয়ে থাকেন। অনলাইনে খাবার অর্ডার করা কি আপনার জন্য নিরাপদ? বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ফুড বা ফুড প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, কারণ ভালোভাবে রান্না করা হলে এই ভাইরাস বেঁচে থাকে না, তাই অনলাইনে অর্ডার করা খাবার সম্পূর্ণ নিরাপদ।
খাবারের যে কোনও পদ যে তাপমাত্রায় তৈরি হয়, তাতে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস থাকা সম্ভব নয়। তবে খাবার তৈরি ও পরিবেশনের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা কতটা মানা হচ্ছে, সেটাই সবচেয়ে আগে দেখতে হবে। ডেলিভারির ক্ষেত্রে যে পাত্রে করে এই খাবার আপনার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্লাস্টিকের, ডিসপোজেবল।
চিকিৎসকদের মতে, পাত্র থেকে যত না ভয়, তার চেয়ে বেশি ভয় হতে পারে ডেলিভারি বয় ও গ্রাহকের কাছাকাছি আসায়।
কিন্তু তা বলে কি মানুষ বাইরে খাচ্ছেন না? সবার রোগ হচ্ছে এমনও নয়। ভাল-মন্দ খাবারের পসরা নিয়ে রেস্তরাঁও আহ্বান জানাচ্ছে। এ সময়ে সব দিক বজায় রেখে একটু মুখের স্বাদ বদলাতে গেলে কী করতে হবে, তা জানতে আগ্রহী সবাই। বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন এ বিষয়ে, জেনে নেওয়া যাক।
হোম ডেলিভারিতে আপত্তি নেই, যদি সেই খাবার বাড়িতে এনে ভাল করে গরম করে নেওয়া হয়। সে ডাল-ভাত-মাছের ঝোল হতে পারে, হতে পারে বিরিয়ানি-রোল-পিৎজা-মমো।
ঘরোয়া খাবার হলে মোটামুটি নিয়মিত খেলেও অসুবিধা নেই। ফাস্ট ফুড বা জাঙ্ক ফুড হলে নয়মাসে, ছয়মাসে খাওয়াই ভাল।
চিকিৎসকের মতে, নামী রেস্তোরাঁ থেকে হোম ডেলিভারি করালে প্যাকেটে হেলথ কার্ড লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যিনি রান্না করেছেন, যিনি খাবার প্যাক করেছেন, তাদের ও ডেলিভারি বয়ের শরীরের তাপমাত্রাও লিখে দেওয়া হচ্ছে সাবধানতার কারণে। তবে সে খাবারও গরম করে খাওয়া উচিত।
ডিসপোজেবল কাপে চা-কফি খেলে এমনিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কারণ চা-কফির তাপে জীবাণু বেঁচে থাকতে পারে না। তবে সেই কাপে অন্য কেউ হাত দিলে তা নিরাপদ থাকে না।
অনেকের ইচ্ছে ফুচকা খাওয়ার। বিশেষজ্ঞদের মত, হাত স্যানিটাইজ করে, চোখে-মুখে হাত না দিয়ে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যদি কেউ ফুচকা বানান, তবে তা খেতে অসুবিধা নেই। তবে সাধারণভাবে হাত দিয়ে বানানো হয় এমন খাবার যেখান সেখান থেকে এখন না খাওয়াই ভাল।
আপাতত রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া ঠিক নয়। তা-ও যদি কেউ খেতে যান, তাকে খেয়াল রাখতে হবে সেখানে যেন সব রকম সতর্কতা মেনে চলা হয়।
(ঢাকাটাইমস/৩০ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)