মশার কামড়ের চুলকানি থেকে রক্ষা পাবেন যেভাবে
দিনের বেশিরভাগ সময় আমরা কাজকর্মের মধ্যে থাকি। এর মধ্যে অবসাদ গ্রহণ করা আমাদের জন্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ যা মূলত কাজের উৎসাহ বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু এই সময় যদি মশা আপনার এই অবসাদ গ্রহণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তবে কেমন লাগবে? এই মশার কামড়ের চুলকানি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে আপনার কাছে হয়তো এসবের অনেক কিছুই রয়েছে আমরা যা যা বলতে যাচ্ছি। তবুও জেনে রাখা দোষের কিছু না।
অ্যালোভেরা-
অ্যালোভেরা অনেক কিছুর জন্যই বেশ উপকারী একটি জিনিস। যেমন, যখন আপনি অনেক বেশি রোদে থাকবেন তখন এটি দেহকে শীতল হতে সহায়তা করবে। ব্রণের সমস্যায় ও এটি সাহায্য করে। কিন্তু এটি এর থেকেও বেশি কার্যকর মশার কামড়ের চুলকানি সাড়াতে। অ্যালোভেরা শীতল হয়ে ত্বককে প্রশান্ত করে এবং চুলকানি কমায়। আবার এমন যদি হয় আপনি চুলকাতে চুলকাতে চামড়া তুলে ফেলেছেন সেক্ষেত্রেও অ্যালোভেরা ত্বকের নিরাময়ে সাহায্য করে।
কলার খোসা-
এটি শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে বেশ কার্যকর। মশার কামড়ের ওপর কলার খোসার ভেতরের দিকটি ঘষতে থাকুন। কলার খোসায় বিদ্যমান শর্করা মশার কামড় থেকে আদ্রতা সরিয়ে ফেলে যা চুলকানির হ্রাস করতে সাহায্য করে।
আইস কিউব-
আপনি যদি মশার কামড়ের শিকার হন তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্রিজের দিকে যান, কয়েকটি আইস কিউব বের করুন, একটি তোয়ালে বা রুমালের মধ্যে আইসক্রিমগুলো রেখে সেটি মশা কামড়ানোর স্থানে রাখুন। প্রক্রিয়াটি বিশ মিনিট ধরে অব্যাহত রাখুন। অতঃপর দেখবেন কোনো ধরনের চুলকানি অনুভব করবেন না এবং ফোলাভাবও অদৃশ্য হয়ে যাবে।
লবণ-
প্রাকৃতিক রোগ নিরাময় ওষুধ গুলোর মধ্যে লবণ একটি। লবণ মূলত মশা কামড়ায় স্থানটিকে শুকিয়ে ফেলে। তাই চুলকানি ও দূর হয়ে যায়। এই পদ্ধতিতে প্রথমে মশা কামড়ানোর স্থানটি ভিজিয়ে নিতে হবে। অতঃপর কিছু লবণ নিয়ে হালকা গরম পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে একটি কাপড় দিয়ে আপনার ক্ষতস্থানে মালিশ করতে হবে। আর এভাবেই আপনি এই চুলকানি থেকে মুক্তি পাবেন।
টুথপেস্ট-
টুথপেস্ট এমন একটি পদার্থ যা আপনার দাঁত ব্রাশ করার থেকেও অনেক বেশি কাজে লাগে। এটি ব্রোণ শুকাতে সাহায্য করে, গ্লাস পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি মশার কামড়ের চুলকানি দূর করতেও সাহায্য করে। তবে এক্ষেত্রে গোলমরিচ মিশ্রিত টুথপেস্ট ব্যবহার করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। মশা কামড়ানোর স্থানে টুথপেস্ট হালকা করে ত্বকে মেখে রাখুন কিছুক্ষণ পর দেখবেন স্থানটি শুকিয়ে গিয়েছে এবং আপনি চুলকানি থেকে মুক্তি পেয়েছেন৷
বেকিং সোডা-
বেকিং সোডা আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত না হলেও অল্পকিছু পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। অতঃপর ক্ষতস্থানে এই পেস্ট লাগিয়ে রাখুন এবং ১৫ মিনিটের মধ্যে আপনার চুলকানি দূর হয়ে যাবে।
লেবুর রস-
প্রাকৃতিক এসিড মশার কামড় দ্বারা সৃষ্ট চুলকানি দূর করতে সহায়তা করে। লেবু এবং চুনের রস এই চুলকানি বন্ধ করে এবং সংক্রমণ রোধ করে। তবে এ ব্যাপারে সর্তকতা অবলম্বন করুন যেন ঘরে বসেই এই রস ব্যবহার করা হয়। ভুলেও রোদের মধ্যে এই রস নিয়ে যাবেন না। নতুবা রসের মধ্যে থাকা এসিড আপনার ত্বকে অপ্রীতিকর দাগ সৃষ্টি করতে পারে।
টি ট্রি অয়েল-
টি ট্রি অয়েল এমন একটি জিনিস যা আপনার ফার্স্ট এইড বক্সে থাকা আবশ্যক। এটি প্রণ মাথার উকুন পায়ের ঘাম এবং মশার কামড়ের চুলকানির রোধে সাহায্য করে। এটির গন্ধ তেমন একটা ভালো না হলেও, এর কার্যকরিতা অতুলনীয়।
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার-
ঠিক লেবু এবং চুলের রসের মতোই অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার বেশ টক স্বাদযুক্ত। সেই সাথে এটি মশার কামড়ের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর। উক্ত স্থানে এই ভিনেগারের সামান্য অংশ ছড়িয়ে দিয়ে এবং কয়েক মিনিটের জন্য রেখে দিন৷ তারপর কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনি ফলাফল পেয়ে যাবেন। এছাড়াও আপনি যদি পোকামাকড়ের কামড় থেকে সৃষ্ট কোনো ক্ষত দূর করতে চান, তবে গোসলের পানিতে ২/৩ কাপ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে গোসল করে নিন। যদিও এই গোসলের পরে আপনি খুব ভালো ঘ্রাণ পাবেন না, তবে অবশ্যই এটি আপনার চুলকানির সমাধান দিবে।
অ্যালকোহল-
না, আপনি যা ভাবছেন তা না। কোন মদের বোতল বা একটি ককটেল আপনার চুলকানি দূর করতে পারবে না। আমরা বলছি খাঁটি অ্যালকোহলের কথা যা আপনি কোন ফার্মেসি বা রসায়নাগারে পাবেন। জীবাণুমুক্ত করার জন্য সুতি কাপড় বা তুলার ওপরে অ্যালকোহল রেখে উক্ত জায়গায় মাখিয়ে নিন৷ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চুলকানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
ঢাকাটাইমস/০২মে/একে