আগের ছয় মাসের সমান মৃত্যু জুলাইয়ে!

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০২১, ২২:৪৭| আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২১, ২২:৪৯
অ- অ+
ফাইল ছবি

দেশে করোনা মহামারির প্রকোপ চলছে প্রায় দেড় বছর ধরে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মাস গেছে গত জুলাই। এই মাসে ছয় হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে করোনায়। যা এর আগের ছয় মাসে মারা যাওয়া সংখ্যার কাছাকাছি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে করোনায় মারা গেছেন ছয় হাজার ৯৪৪ জন। আর শুধু জুলাই মাসেই মারা গেছেন ছয় হাজার ১৮২ জন।

গেল জুলাইয়ে প্রতিদিনই বেড়েছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। মাসের প্রথম সপ্তাহে মোট মৃত্যু হয় এক হাজার ১৪৬ জনের। আর দ্বিতীয় সপ্তাহে তা বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৪৪৬ জন। তৃতীয় সপ্তাহের হিসাব একই রকম থাকলেও মাসের শেষ সপ্তাহে করোনায় মারা গেছেন এক হাজার ৬২২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রিপোর্ট বলছে, রবিবার সকাল পর্যন্ত দেশে করোনায় মারা গেছে ২০ হাজার ৯১৬ জন। আর গত এক মাসে করোনায় মারা গেছে ছয় হাজার ২৭০ জন। এটি মোট মৃত্যুর ২৯.৯৭ শতাংশ। দেশে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮ জন। এর মধ্যে গত জুলাইয়ে সংক্রমিত হয়েছে তিন লাখ লাখ ৪৩ হাজার ১০০ জন, যা মোট সংক্রমণের ২৭.১৭ শতাংশ।

গত এক মাসে করোনাভাইরাসে টানা শতাধিক মৃত্যু হয়েছে। ১ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিনই কম-বেশি দেড়শজন করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে। গড়ে এই সাত দিন ১৫৫ জন করে করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে। ওই মাসের শেষ আট দিনে প্রতিদিনই মারা গেছে দুই শতাধিক। শুধু ওই আট দিনেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ৮৭০ জন।

গত মাসের শেষ সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ লাগাতার দুশো ছাড়িয়েছে। ২৪ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন ২২৮, ২৪৭, ২৫৮, ২৩৭, ২৩৯, ২১২, ২১৮ ও ২৩১ জন মারা যায়। গড়ে প্রতিদিন মারা যায় ২৩৩ জন। আর ওই এক সপ্তাহে করোনা সংক্রমিত হয় গড়ে ৩০.৪৭ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ২৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৮৪৪ জনের শরীরে। সব মিলিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৯১৬ জন। আর শনাক্তের মোট সংখ্যা ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮।

দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। প্রথম কয়েক মাস মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা বাড়লেও তা আস্তে আস্তে কমে আসে। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এরপর ৯৯ দিনে আরও এক লাখ রোগী শনাক্ত হওয়ায় ২৯ মার্চ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়ায়।

এরপর আসে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। ১৪ এপ্রিল সাত লাখ পেরিয়ে যায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। তবে মে মাসে শনাক্ত ও মৃত্যু অনেকটা কমে আসে। পরের এক লাখ রোগী শনাক্ত হতে সময় লাগে দেড় মাস; দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা আট লাখ ছাড়িয়ে যায় ৩১ মে।

দেশে করোনা পরিস্থিতির জটিল আকার ধারণ করে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার দ্বারা। ভারতের এই ধরন দেশে শনাক্ত হওয়ার পর হু হু করে বাড়তে থাকে মৃত্যু ও শনাক্ত। ২৯ জুন মোট শনাক্তের সংখ্যা পৌঁছায় নয় লাখে। এরপর মাত্র ১০ দিনে আরও এক লাখ রোগী শনাক্ত হলে ৯ জুলাই মোট শনাক্তের সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছে। সেই সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখে পৌঁছায় ২০ দিনে।

এবার করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা এ ব্যাপারে সরকারকে বারবার সতর্ক করেছেন। সরকারও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে জুলাইয়ের শুরুতে টানা ১৪ দিন কঠোর বিধিনিষেধ অব্যাহত রাখে। তবে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয় বিধিনিষেধ। ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধ চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকলেও তা শিথিল হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। দুই একদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/০১আগস্ট/এসআর/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
তারেক রহমানকে শরণখোলা বিএনপির নেতাদের চিঠি, কাউন্সিলে আঞ্জুমান আরার প্রার্থীতা বাতিলের দাবি
সনাতনী জনগণের মাঝে বিএনপির বার্তা পৌঁছে দিলেন কাজী আলাউদ্দিন
বিচার সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই দেশ পুনর্গঠন করতে হবে: নাহিদ ইসলাম
ভানভীরের ফাইফারে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেল টাইগাররা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা