শ্রীপুরে ত্বীন ফল চাষে সফলতা-ব্যর্থতার গল্প

মরুভূমির ত্বীন ফল চাষে লাভবার হচ্ছেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার অনেক কৃষক। তারা আরও বড় পরিসরে এ ফল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে একইসঙ্গে ফলটি চাষ করে লোকসান গুণতে হচ্ছে বলে দাবি উপজেলার অনেক সাধারণ কৃষকের। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ফলটি খেতে ভারি মিষ্টি ও সুস্বাদু হলেও শ্রীপুরের সাধারণ মানুষের কাছে রয়েছে এর ভিন্ন প্রতিক্রিয়া। বিশেষ করে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের দক্ষিণ বারতোপা গ্রামের অনেকেই এই ফল চাষ করে রীতিমত এখন বিরক্তি প্রকাশ করছেন।
শিক্ষাদর্শ একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, পত্রপত্রিকায় এই ফলের স্বাদের খুব নামডাক শুনে প্রথমে আমরা অনেকেই হাজার টাকা কেজি ধরে কিনে খেয়েছি কিন্তু স্বাদ নেই। তাই আমাদের এলাকার কেউ এটা চাষে আগ্রহী নয়।
বারতোপা গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, আমি কয়েকটি চারা লাগিয়েছিলাম কিন্তু আশানুরুপ ফল পাইনি। খেয়ে দেখেছি তেমন মিষ্টিও না।
অন্যদিকে, একই গ্রামে মর্ডান এগ্রো ফার্ম এন্ড নিউট্রিশন নামের ফল বাগানে ৩-৪ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ত্বীন ফল চাষ করা হয়েছে। তারা আরো জমি ক্রয় করেছেন এটি চাষ করার জন্য।
বাগানের ম্যানেজার দিবাশিষ শাহা বলেন, আমরাই প্রথম দেশে বাণিজ্যিকভাবে এই ফল চাষ শুরু করি এবং বর্তমানে আমরা সফল। সঠিক নিয়মে যে কেউ চাষ করলেই এই ফল চাষে সফলতা ধরা দেবে। অন্যথায় লোকসান গুণতে হবে।
তিনি আরও জানান, তাদের বাৎসরিক বিক্রি বা বিক্রির বাজার কেমন তা জানতে চাইলে সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করছেন বলে জানান।
উপজেলার ভাংনাহাটি গ্রামের হাজী আবদুস সাত্তার এগ্রো ফার্ম অ্যান্ড নিউট্রিশন নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে ত্বীন ফলের চাষ করেছেন।
এই ফার্মের ম্যানেজার মেহেদি হাসান জানান, এখানে মিশরীয় ব্রাউন, সৌদি ইয়োলো জাতের প্রায় তিন হাজার চারা রোপণ করা হয়েছে। গাছ কাটিং করে প্রস্তুত করেছেন কলমের চারা। সেই চারা চাষিদের মধ্যে বিক্রির প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।
তিনি আরো জানান, এ ফলের বাজার মূল্য প্রায় এক হাজার টাকা কেজি। প্রতি চারার মূল্য ৫০০ টাকা। তবে ৬-১০টি নিলে প্রতিটি চারার মূল্য ৪০০ টাকা এবং ১০টির অধিক চারা ক্রয় করলে প্রতিটি চারার দাম ৩০০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএসএম মূয়ীদুল হাসান ঢাকাটাইমসকে জানান, ত্বীন একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল। যা মরু অঞ্চলে হয়। বছরের ৩৬৫ দিনই উচ্চ ফলন পাওয়া যায়। রোগবালাই নেই বললেই চলে। চারা লাগানোর তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই ফল দিতে শুরু করে। একটি ত্বীনগাছ ফল দিয়ে থাকে অন্তত ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত। বাংলাদেশের কৃষকরা এ ফল চাষে আগ্রহী হলে কৃষি বিভাগ তাদের সবধরণের সহায়তা করবে।
(ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/পিএল)

মন্তব্য করুন