ফুসফুস সুস্থ রাখে যেসব খাবার

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:২৫ | প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:৪৪

করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নতুন করে মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। চিকিৎসকেরা মহামারির এই সময় দেহকে সুস্থ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। করোনাভাইরাস এখনও পৃথিবী থেকে চলে যায়নি। যে কোনো সময় অসাবধানতায় মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ফুসফুসে সংক্রমণ হতে পারে। ফুসফুসে সংক্রমণ হলে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট, যার ফলে মৃত্যুও হতে পারে। তাই ফুসফুসকে সুস্থ রাখা জরুরি। এ সময় ফুসফুসের যত্ন নেয়া সবচেয়ে জরুরি। শ্বাসনালির মাধ্যমে গলা থেকে এই ভাইরাস ফুসফুসে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে এর কার্যক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে। ফলে দেখা দেয় মারাত্মক শ্বাসকষ্ট, কাশি ও ক্লান্তিবোধ।

শুধু ফুসফুসের সুস্থতার জন্যই নয়, সম্পূর্ণভাবে সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস খুব জরুরি। তবে ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য সবার প্রথমে ধূমপান ত্যাগ করার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দেখে নেওয়া যাক কোন কোন খাবার রোজকার তালিকায় রাখলে ফুসফুস সুস্থ থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বিটে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি এবং অনেক উপকারী অ্যান্ট অক্সিডেন্টস রয়েছে। যা ফুসফুস সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

হলুদ বিভিন্নভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের উপকার করে। নিয়মিত খাবারে হলুদের ব্যবহার ফুসফুস সুস্থ রাখে।

রোজকার ধূমপানের ফলে মারাত্মক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের ফুসফুস। ধূমপানের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ফুসফুস সুস্থ রাখতে প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। তাই রোজকার খাবারের তালিকায় গোল মরিচ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

গ্রিন টি শুধুই স্বাদের জন্য খাওয়া হয় না। স্বাস্থ্যের উন্নতিতে দারুণ উপকারী গ্রিন টি। এতে থাকে অ্যান্টি অক্সিডেন্টস ফুসফুসের কোষ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

টমেটোতে প্রচুর লাইকোপেন থাকে। এই লাইকোপেন এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। যা ফুসফুস সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। টমেটোর রস ফুসফুসের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

নিয়মিত আপেল খেলে শুধুই ফুসফুস সুস্থ থাকে না, তার সঙ্গে ফুসফুসের বিভিন্ন রোগও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

কুমড়ার নাম শুনেই নাক সিটকান অনেকেই। কিন্তু ফুসফুস সুস্থ রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার। এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

বেরিতে প্রচুর পরিমাণে উপকারী উপাদান রয়েছে। ব্লু বেরি, স্ট্রবেরিতে পাওয়া যায় ফ্ল্যাভনয়েড, যা ফুসফুসের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এগুলোতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্টস ফুলফুস সচল রাখতে সাহায্য করে। বয়সজনীত কারণে ফুসফুসে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয়, সেগুলো প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে বেরি।

শাকসবজি শরীরের প্রত্যেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গের জন্যই জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা। সমীক্ষায় জানা যায়, সবুজ শাকসবজি ফুসফুসের ক্যানসারের আশঙ্কা প্রবলভাবে হ্রাস করে। ফলে পালংশাক, মেথি, ব্রকোলি, সবুজ ক্যাপসিকাম প্রভৃতি এবং নানা মওসুমি সবজি আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় থাকা জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, লাল ক্যাপসিকাম, টমেটোর মতো সবজি ও ফলে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফুসফুসের পক্ষে উপকারী। শ্বাসনালির প্রদাহ কমাতে টমেটোর রস বেশ কার্যকরী। তা ছাড়া লাল রঙের ফল ও শাকসবজি সেই সমস্ত রোগীর জন্যও বিশেষ দরকারি, যাঁরা দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের সমস্যায় জর্জরিত।

আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, গুড় ফুসফুসকে উষ্ণ রাখতে ও বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে। আর মধু ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে কার্যকর পাশাপাশি এটি এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টিমাইক্রোবিয়াল ও এন্টিইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করে।

অ্যাভোকাডোর মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, এর মধ্যে রয়েছে রোগ নিরাময়কারী গুণ। এটি ফ্রিরেডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীরকে সুরক্ষিত রাখে। ফুসফুসকে ভালো রাখতে বেশ উপকারি খাবার অ্যাভোকাডো।

শ্বাসনালীর প্রদাহ হ্রাস করতে কফিও আমাদের কাজে লাগে। এতে রয়েছে পলিফেনল, যা ফুসফুস চাঙ্গা রাখতে বিশেষ সহায়ক। তবে কফি অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে ঘনিয়ে আসতে পারে বিপদ।

বেশ কিছু মশলা আছে যেগুলো ফুসফুসের কার্যকারিতা সঠিক রাখতে, প্রদাহ জনিত সমস্যা রোধে ও নানা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। যেমন কাঁচাহলুদ এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। বায়ুবাহিত দূষিত এলাকা প্রভাব থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করে। কফ ও অ্যাজমা সমস্যা সমাধানে কার্যকর। পেঁয়াজ, রসুন ও আদা এন্টিইনফ্লামেটরি হিসেবে কাজ করে। নানা সংক্রমণ থেকে ফুসফুসকে রক্ষা, ফুসফুসের রক্ত সঞ্চালন উন্নত ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। কালোজিরা এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ও শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে কার্যকর।

ভিটামিন-ডি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি দেখা দিলে ফুসফুসের রোগ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। সূর্যের আলো এর অন্যতম উৎস্য। পাশাপাশি দুধ, ডিম, দই, মাছ, মাংস ইত্যাদি থেকেও পাওয়া যায় ভিটামিন-ডি।

বাজারের প্যাকেটজাত খাবারে লবণের আধিক্য ফুসফুসের পক্ষে ভীষণ ক্ষতিকারক। ফলে রান্না করা খাবারে পরিমিত মাত্রার লবণের ব্যবহারে সুস্থ থাকবে ফুসফুস।

ফুসফুস ভালো রাখতে প্রচুর পানি খেতে হবে। নিয়মিত পানি পানে রক্ত চলাচলের মাত্রা বাড়ে এবং ফুসফুস আর্দ্র ও ভালো থাকে।

(ঢাকাটাইমস/২৮ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :