নখে রোগের নখদর্পণ
মানুষের মধ্যে যে কোনও রোগের পূর্ব লক্ষণ থাকে। চোখ দেখে অনেক চিকিৎসক বলে দিতে পারেন জন্ডিস হয়েছে কি না। আবার নখের অবস্থা দেখেও কিছু রোগ চেনা যেতে পারে।
চিকিৎসকের ভাষায়, নখ শরীরের ভিতরের আয়না । এটা বোধহয় অনেকেরই অজানা ।
শরীরের অনেক রোগের প্রতিফলন ঘটতে পারে নখে। চিকিৎসকরা নখ দেখে শরীরে অনেক কঠিন অসুখ সম্পর্কে আন্দাজ করতে পারেন।
নখের নানা রকম দাগ , ব্যথা ও অন্য সমস্যায় কমবেশি ভোগেন প্রত্যেকেই। হয়ত, নখ বলেই সেভাবে পাত্তা দেন না বেশিরভাগ মানুষ। তবে মনে রাখতে হবে, নখের কোনও অসুখ শুধুমাত্র তাতেই সীমাবদ্ধ নয় ।
অনেক সময়ে নখ মোটা, ভারী হয়ে যায়। হাল্কা হলুদ ভাব দেখা দেয়। তখন বুঝতে হবে ছত্রাকের সংক্রমণ হচ্ছে। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে নখ তাড়াতাড়ি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমন কোনো সমস্যা দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
নখ অনেক সময় মাঝখান থেকে ফুলে যায়। অনেকটা ফেঁপে থাকার মত । এটি শরীরের কোনও বড় অসুখের ইঙ্গিত হতে পারে। আবার অনেকের এই উপসর্গ জন্ম থেকেই । একে ক্লাবিং বলা হয়ে থাকে । জন্মগত হার্টের অসুখের ক্ষেত্রে নখে ক্লাবিং হয়। অনেক সময় সিওপিডির প্রতিফলন হয়ে থাকে লখে।
কিছু ফাংগাল ইনফেকশন হয়ে থাকলেও তার প্রতিফলন নখে হয়। সে ক্ষেত্রে দেখা যায় নখের আকার-আকৃতি পরিবর্তন হয়ে যায়। নখের কোয়ালিটিও নষ্ট হয় । দেখতেও খারাপ লাগে ।
আবার নখে বেশকিছু ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হয়ে থাকে, যেগুলো খুবই যন্ত্রণাদায়ক ।
নখে সাবান পনি বা ময়লা পানি জমা হলে তার থেকেও ইমফেকশন হয়ে থাকে । সেটির চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। নইলে খারাপ দিকে যেতে পারে ।
এছাড়া আরও কয়েকটি বড় অসুখের প্রতিফলনও নখে হয়। যেমন, সোরিয়াসিস। অনেকে কে শুধুমাত্র চর্মরোগ বলেই জানেন। কিন্তু সোরিয়াসিস শুধু চর্মরোগ নয়। এর শিকড় অনেক গভীরে । সোরিয়াসিস এর প্রতিফলন ঘটতে পারে নখে। এই রোগ হলে নখগুলি হলুদ রঙের হয়ে যায়। অথবা এতে হলদেটে ছাপ দেখা যায়।
আপনার নখ যদি সাদা হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে শরীরে আয়রনের ঘাটতি হয়ে থাকতে পারে। অ্যানিমিয়ার অন্যতম লক্ষণ হল নখ সাদা হয়ে যাওয়া । সহজে ভেঙে যাওয়া।
নখের রঙের কোনো বদল এলে কখনও তা অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ তা ক্যানসারের বার্তাও নিয়ে আসতে পারে। ত্বকের এক ধরনের ক্যানসার ধরা পড়ে নখের রঙের পরিবর্তন দেখেই। প্রথমে নখের তলায় একটি কালো দাগ দেখা দিতে পারে। তার পর ধীরে ধীরে নখের রং উধাও হয়ে যায়।
ভিটামিন ডি-র অভাবে নখ সহজে ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। একে ব্রিটেল নেল বলা হয় ।
নখের ভিতরে অল্প অল্প ছোট ছোট রক্তক্ষরণ হতে পারে। নখের রক্তবাহিকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই রক্তক্ষরণ হতে পারে।
লিউকোমিয়া রোগীদের ক্ষেত্রে অন্য নখের তলায় রক্তক্ষরণ হতে পারে । নখ ভঙ্গুর হয়ে যায়।
জন্ডিসের লক্ষণও নখের উপর পড়ে। হলুদ ছাপ পড়ে নেলবেডে।
যারা দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদেরও নখের ক্ষতি হয় । নখের গোড়া চামড়া নষ্ট হয়ে যায়।
(ঢাকাটাইমস/৩০ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)