রোগ প্রতিরোধে কারিপাতার ম্যাজিক

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৭
অ- অ+

কারিপাতা কামিনী গোত্রের উদ্ভিদ। কারিপাতা আমাদের অনেকেরই পরিচিত একটি মসলা। কারি বা ঝোল তরকারি রান্নার জন্য এ গাছের পাতা ব্যবহার করা হয় বলে ইংরেজি নাম কারি লিফ, বাংলায় কারিপাতা। অবশ্য স্থানীয় আরও কিছু নাম আছে- মিষ্টি নিম, নিমভূত, বারসাঙ্গা ইত্যাদি। পাতা দেখতে অনেকটা নিমপাতার মতো।

পাতায় সালফারজনিত এক ধরনের উদ্বায়ী তেল থাকায় সুন্দর ঝাঁজাল গন্ধ পাওয়া যায়। কাঁচা পাতা ঘষলে গোলমরিচ, লবঙ্গ, মরিচ, আদা ইত্যাদি মসলার মিশ্রিত ঘ্রাণ পাওয়া যায়। মূলত এই সুগন্ধির জন্যই রান্নায় মসলাপাতা হিসেবে এর ব্যবহার। বিভিন্ন রান্নায় স্বাদ এবং ঘ্রাণ বাড়ানোর জন্য কারিপাতা ব্যবহার করা হয়। কারিপাতার পাশাপাশি তার রসও একই রকম উপকারি।

১০০ গ্রাম কারিপাতার মধ্যে থাকে ১৮০ ক্যালোরি শক্তি। এছাড়াও কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, মিনারেল ও নানারকম ভিটামিন থাকে কারিপাতার মধ্যে। তাই শুধুমাত্র স্বাদ ও গন্ধের জন্যই নয়, শরীর সুস্থ রাখতেই খান কারিপাতা । ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া, স্নায়ুর সমস্যা, চুলপড়ার সমস্যা, সবকিছুর সমাধান রয়েছে এই কারিপাতাতেই।

একনজরে জেনে নিন কারিপাতার উপকারিতা:

কারিপাতা বা কারি পাতার রসে থাকা আয়রন, জিঙ্ক এবং কপার থাকায় তা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। রান্নায় নিয়মিত কারিপাতা মেশালে ডায়াবেটিসের সমস্যা কমে। বেশি ভাল ফল পেতে কয়েকটি কারি পাতা একটু ভিজিয়ে চিবিয়ে নিতে পারেন। কারিপাতা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও কারিপাতার মধ্যে ফাইবার বেশি থাকায় হজমও ভালো হয়। তাই হঠাৎ করে সুগার বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা আসে না। ইনসুলিন ক্ষরণও ঠিকঠাক থাকে।

কারিপাতার মধ্যে যে সুগন্ধ রয়েছে তা ব্যাকটেরিয়া মারতেও সাহায্য করে। তাই কারিপাতা দিয়ে পানি ফুটিয়ে গোসল করলে গায়ের দুর্গন্ধ চলে যায়। অতিরিক্ত ঘাম হয় না। যার ফলে স্কিনও ভালো তাকে। ফুসকুড়ি, খোস, পাঁজরা এসব সমস্যা আসে না।

ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষমতা রাখে কারিপাতা । খাবারের মধ্যে কারিপাতা থাকলে কোলেস্টেরল থাকে নিয়ন্ত্রণে। আর যার ফলে হার্টের সমস্যার সম্ভাবনাও কমে।

খালি পেটে কারিপাতা খেলে হজমশক্তি বাড়ে। কারণ কারিপাতার মধ্যে যে এনজাইম থাকে তা শরীরে হজমে সাহায্যকারী এনজাইমের ক্ষরণে সাহায্য করে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। যে কারণে বিভিন্ন রান্নাতেও কারিপাতা ফোড়ন দেওয়া হয়।

অনেকের অল্প খেলেই বমি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারোর আবার খাবার গিলতে সমস্যা হলে মনে হয় বমি হয়ে যাবে। এই সবই পেটের সমস্যার সঙ্গে যুক্ত। আর তাই বমি ভাব কমাতে খান কারিপাতা।

কারিপাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। যা আমাদের মস্তিষ্কের খেয়াল রাখে। যাঁদের অ্যালঝাইমার্স রয়েছে তাঁদের জন্য কারিপাতা খুবই ভালো। এছাড়াও হঠাৎ করে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায় বয়স্কদের মধ্যে। তাঁদের জন্যও খুব ভালো হল এই কারিপাতা।

কারিপাতায় থাকে ভিটামিন এ। দৃষ্টিশক্তি ভালো করতে যা খুবই সাহায্য করে। এছাড়াও যাঁদের ছানি পড়ছে বা সেই সংক্রান্ত সমস্যা হয়েছে তাঁরা যদি প্রতিদিন খাবারে ঘি আর কারিপাতা খান তাহলে বেশ ভালো ফল পাবেন।

কাঁচা কারি পাতা চিবালে ওজন কমে, হজমশক্তি বাড়ে, ডিটক্সিফিকেশন হয়, ভালো কোলেস্টোরেলের মাত্রা বাড়ে। যে কারণে যাঁরা ডায়েট করছেন তাঁদের ব্রেকফাস্টে যদি উপমা বা চিঁড়ের পোলাও থাকে তাহলে সেই রান্নায় অবশ্যই কারিপাতা ব্যবহার করার কথা বলা হয়। শরীরচর্চার পর ৮ থেকে ১০টা কারিপাতা খেতে পারলে খুবই ভালো।

প্রতিদিন সকালে একগ্লাস পানির সঙ্গে কয়েকটি টাটকা কারিপাতা চিবিয়ে খান। এর পর ৩০ মিনিট কিছু খাবেন না। ৩০ মিনিট পর ব্রেকফাস্ট করুন, সঙ্গে অবশ্যই খান আমন্ড। কারিপাতার মধ্যে থাকে ভিটামিন সি, ফসফরাস, আয়রন, ক্যালসিয়াম, নিকোটিনিক অ্যাসিড। এইভাবে নিয়মিত খেলে চুলপড়া কমবেই।

এছাড়া কারি পাতা কেমোথেরাপি এবং বিকিরণ থেরাপির জন্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে সাহায্য করে।

(ঢাকাটাইমস/৬জানুয়ারি/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যুদ্ধবিরতিকে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক বিজয় বললেন শাহবাজ শরিফ
হজ পালনে সৌদি আরব পৌঁছেছেন ৩৭ হাজার ৮৩০ বাংলাদেশি
সোনার দাম কমলো, ভরি ১৭০৭৬১ টাকা
আজ যে অঞ্চলে ঝড় হতে পারে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা