ঘরে খাঁটি ঘি তৈরির উপায়

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০:২৮

প্রাচীনকাল থেকে ঐতিহ্যবাহী রান্নায় খাদ্যের স্বাদ-পুষ্টিগুণ বৃদ্ধিতে ঘি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বাঙালির রসনায় ঘি একটি অন্যতম প্রধান উপাদান। খাদ্যরসিক বাঙালির রসনার তৃপ্তিতে ঘিয়ের জুড়ি নেই। তাছাড়া পোলাও, কোরমা, বিরিয়ানিসহ যেকোনো মুখরোচক খাদ্যে ঘি এর ব্যবহার প্রায় বাঞ্ছনীয়।

ঘিকে বলা হয় ক্লারিফায়েড বাটার। এতে রয়েছে ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ চর্বি। বাকি ০১ শতাংশ জলীয় উপাদান, চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ও দুধের পোড়া অংশ। ঘি মূলত সম্পৃক্ত চর্বি তাই এটি বাইরের তাপমাত্রাতেই সংরক্ষণ করা যায়। গরু, ভেড়া বা ছাগলের দুধ থেকে ঘি বানানো যায়। তবে সাধারণত গরুর দুধ থেকেই ঘি তৈরি করা হয়। দুধ থেকে বাটার বা মাখন বানাতে হবে। তারপর সেই মাখন ভালোভাবে ফেটে নেওয়ার বা মথিত করার পর জ্বাল দিলে ঘি হবে।

ঘরেও এভাবেই ঘি বানানো হয়। তবে অনেকেই দুধের সর থেকে ঘি তৈরি করেন। দির্ঘদিন ধরে সর জমা কর তারপর সেটি বেটে বা ব্লেন্ড করে জ্বাল দিলে ঘি হয়।

ঘরে তৈরি ঘিয়ে ফসফোলিপিড থাকে যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কারখানায় বানানো ঘিয়ে আবার এই ফসফোলিপিড থাকে না।

ঘিয়ের ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। হাড়, চুল ও চোখের জন্যও এটি উপকারী তাছাড়া অন্ত্র থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করতেও সাহায্য করে ঘি।

গবেষণায় দেখা গেছে ঘিয়ের চর্বির গঠন যেমন তাতে পাওয়া যায় ডিএইচএ। এই ডিএইচএ একধরনের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। আমরা যে খাবার খাই তার থেকে খাদ্য উপাদান শোষণ করতে সাহায্য করে ওমেগা থ্রি। ঘি ছাড়াও ওয়ালনাট, মাছের তেল ও ফ্লাক্সসিড বা তিসিতে পাওয়া যায় এই ওমেগা থ্রি। ডিএইচএ ক্যানসার, হৃদরোগ, ইনস্যুলিন রেজিস্ট্যান্স, আর্থ্রাইটিস ও এডিএইচডি (এটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার) প্রতিরোধে সাহায্য করে।

আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে ঘি নানারকম রোগ থেকে বাঁচিয়ে দীর্ঘজীবন লাভে সাহায্য করে। এটি সম্পৃক্ত চর্বিতে দ্রবণীয় পরিপোষক উপাদান শোষণে সাহায্য করে। এছাড়াও বিশ্বাস করা হয়, ঘি অস্থি সংযোগে পুষ্টি যোগায় ও পিচ্ছিলকারি উপাদান সরবরাহ করে।

ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে ঘি। এছাড়া মুখের ঘাসহ যেকোন সমস্যা দূরে রাখে।

বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাবার তৈরি করতে ঘি ব্যবহার করা হয়। শুধু তা-ই নয়, ঘি স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ উপকারী। তবে বিশুদ্ধ ঘি বাজারে খুব একটা পাওয়া যায় না। এজন্য বাসায় বসে বিশুদ্ধ ঘি তৈরির করে নিতে হবে। এবার জেনে নিন বাড়িতে বসে যেভাবে বিশুদ্ধ ঘি তৈরি করবেন।

অনেকেই দোকান থেকে কেনার বদলে বাড়িতেই ঘি তৈরি করতে পছন্দ করেন। ঘরে তৈরি ঘি খাঁটি এবং স্বাস্থ্যকর।

কিন্তু বাড়িতে ঘি তৈরি করা বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। বিশেষত শীতকালে ঘি তৈরি করতে সময় লাগে বলে অনেকেই কিনে নেন।

প্রথম ক্রিম সংগ্রহ করুন। এই ক্রিম থেকে প্রায় এক কেজি ঘি বের করা যেতে পারে।

ক্রিম সংগ্রহের জন্য প্রয়োজন দুধ। তবে তা অবশ্যই ফুল ক্রিম মিল্ক হতে হবে। এই দুধ যত বেশি ফোটাবেন তত বেশি ক্রিম বের হবে।

ক্রিম সংগ্রহের পর তা একটি পাত্রে এক সপ্তাহ থেকে ১৫ দিনের জন্য ফ্রিজে রাখুন। নির্দিষ্ট সময়ের পর ফ্রিজ থেকে ক্রিম বের করে ঘরের তাপমাত্রায় রাখতে হবে।

ক্রিম ঘরের তাপমাত্রায় রাখলে দেখা যাবে যে তা নরম হয়ে গেছে। ওই ক্রিমে এক টেবিল চা চামচ দই দিয়ে ভাল করে ফেটাতে হবে। এরপর এক ঘণ্টার জন্য একটি পাত্রে রাখতে হবে।

দই দেওয়ার কারণে বেশ খানিকটা নরম হবে ক্রিম। ফের ভাল করে ফেটাতে হবে। এরপর সামান্য গরম পানি দিতে হবে ওই মিশ্রণে।

দেখা যাবে ক্রিম থেকে পানি এবং মাখন আলাদা হয়ে গিয়েছে। আরও কিছুক্ষণ ফেটালে দেখা যাবে পানিতে মাখন ভাসছে। এবার একটি পাত্রে মাখন আলাদা করে রাখতে হবে।

এবার একটি পাত্র ভাল করে গরম করতে হবে। তার মধ্যে আলাদা করে রাখা মাখন ঢেলে দিতে হবে।

ওই পাত্র গরম হলে দেখা যাবে মাখন এবং ঘি আলাদা হতে শুরু করেছে। এবার ঘি ছেঁকে একটি পাত্রে রেখে দিন।

ঘি পুষ্টিকর ও নিরাময়কারী। কেউ কেউ ওজন কমানোর জন্য ঘি খেয়ে থাকে আবার কেউ ওজন বাড়াতে। হার্টের যেকোন সমস্যায় ঘি অত্যন্ত উপকারী। এজন্য শরীরের সুস্থতার কথা বিবেচনা করে ঘি খাওয়া শুরু করুন।

(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

কিডনি রোগ বাড়ছে শিশুদেরও! যেসব লক্ষণ দেখলেই সতর্কতা জরুরি

সস্তার পেয়ারার গুণে বশে থাকে ডায়াবেটিস-উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিল রোগ

যে পাঁচ সমস্যায় আক্রান্তরা গুড় খাওয়ার আগে একবার ভাবুন, নইলে...

সাজেদুর রহমান শাফায়েতের স্বপ্ন পৃথিবী ঘুরে দেখা

খাওয়ার পরপরই চা পান উপকার না ক্ষতি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জ্বরের মধ্যে যে পাঁচ খাবার খেলেই বিপদ! জানুন, সাবধান হোন

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের! সুস্থ থাকবেন যেভাবে

মুখে দুর্গন্ধের কারণে হা করতেও অস্বস্তি লাগে? সমাধান কী জানুন

লিভার ভালো রাখে লাউ! ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

কিডনি ভালো রাখে আমের পাতা! উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :