নায়িকা শিমু হত্যাকাণ্ড যেন ভারতের ক্রাইম পেট্রলের কাহিনি

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১১:৪২ | প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৩৯

গত সোমবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ। সেটি দুই টুকরো করে দুটি বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়েছিল। এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটান স্বয়ং শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলিম নোবেল। এরপর তিনিই থানায় যান স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়েরি করতে।

এ যেন হুবহু ভারতীয় ক্রাইম থ্রিলার ‘ক্রাইম পেট্রল’-এর কাহিনি! এই অনুষ্ঠানটির অনেক এপিসোডে ঠিক একই ধরনের হত্যাকাণ্ডের কাহিনি দেখা যায়, যেমনটা ঘটেছে বাংলাদেশি অভিনেত্রী শিমুর ক্ষেত্রে। ক্রাইম পেট্রলের বহু এপিসোডে দেখা গেছে, একজন লোককে তারই পরিবারের কোনো এক সদস্য বা সবাই মিলে খুন করে, পরে তারাই লাশ নিয়ে কান্নাকাটি করে, বা লাশ গুম করে থানায় যায় মিসিং ডায়েরি করতে।

শিমুকে হত্যা করে ঠিক তেমনই নাটক সাজিয়েছিলেন তার স্বামী নোবেল। কিন্তু ক্রাইম পেট্রলে একটা সংলাপ আছে, অপরাধ যত নিঁখুতই হোক না কেন বা অপরাধী যত সুচতুরই হোক, সে কোনো না কোনো ভুল করেই, যার মাধ্যমে পরবর্তীতে তার অপরাধের বিষয়টি সামনে চলে আসে। তেমনই ছোট একটা ভুল করে হত্যাকাণ্ডের এক দিন পরই ধরা পড়েন শিমুর হত্যাকারী তথা তার স্বামী নোবেল এবং তার সহযোগী বন্ধু।

গত সোমবার কেরানীগঞ্জ এলাকায় শিমুর বস্তাবন্দি লাশ দেখার পর স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর যায় পুলিশের কাছে। পুলিশ গিয়ে বস্তার ভেতর থেকে লাশের খণ্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। ওই দিন রাতেই শিমুর দাদা শহিদুল ইসলাম খোকন তার মরদেহ শনাক্ত করেন।

প্রথম থেকেই সন্দেহের তীর ছিল নায়িকার স্বামী নোবেলের দিকে। এরপর ঘটনার তদন্তে নেমে সোমবার রাতে তাকেই প্রথমে আটক করে ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (ব়্যাব)। পরে তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। একটি গাড়িও জব্দ করা হয়। থানায় পুলিশের জেরার মুখে স্ত্রীকে খুন করার কথা স্বীকার করে নেন নোবেল। জানান তার সঙ্গে ফরহাদ নামে এক বন্ধু ছিল। গ্রেপ্তার করা হয় তাকেও।

এ বিষয়ে সে সময় কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক কাজী রমজানুল হক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, নিহত শিমুর গলায় একটি দাগ রয়েছে। শিমুর স্বামী স্বীকার করে যে, তিনিই গলা টিপে হত্যা করেছেন স্ত্রীকে। শনিবার মধ্যরাতে দাম্পত্য কলহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি। এরপর তিনি শিমুর লাশ কেটে বস্তাবন্দি করেন। পরদিন সেই বস্তা গাড়িতে করে সারাদিন ঢাকা শহরে ঘোরেন নোবেল।

অবশেষে রাতে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর এলাকার আলীপুর সেতুর নিচে ফেলে আসেন। পরে বাড়ি ফিরে শিমুর বোনকে সঙ্গে নিয়েই রাজধানীর কলাবাগান থানায় স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই মন্তব্য করেন, ভারতের ক্রাইম পেট্রল দেখেই হয়তো স্ত্রীকে খুন করার পর মিসিং ডায়েরি করতে থানায় ছুটে যান নোবেল। যাতে সন্দেহের তীর তার দিকে না যায়।

ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :