কোন বয়সে চোখে ছানি পড়ে?

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:০১
অ- অ+

চোখকে বলা হয় মনের আয়না। মনের কথা বলে দেয় আমাদের দৃষ্টি! আমাদের চোখের গঠন এতটাই জটিল যে, সেটা মাঝে মাঝে কল্পনাকে হার মানায়। চোখের কার্যপদ্ধতি অনেকটা ক্যামেরার পদ্ধতির মতোই।

মানুষের চোখের ভেতর ক্রিস্টালের মতো পরিষ্কার লেন্স থাকে। এটি দিয়ে আমরা দূরে-কাছের দৃশ্য সমন্বয় করি। এটিতে কোনো অস্বচ্ছতা তৈরি হলে একে আমরা ছানি বা ক্যাটারেক্ট বলি। এটি সাধারণত ঘোলাটে ও সাদা রঙের হয়।

আমাদের চোখে স্বচ্ছ একটি লেন্স বা দর্পণ রয়েছে। যার ভেতর দিয়ে আলো গিয়ে চোখের পেছনের রেটিনায় বা দৃষ্টি সংবেদনশীল অংশে গিয়ে পড়ে এবং দৃষ্টির অনুভূতি তৈরি হয়।

কাঁচ যেমন অস্বচ্ছ হয়ে গেলে আর কাঁচের ভেতর দিয়ে কোনো কিছু দেখা যায় না, তেমনি চোখের লেন্স যদি অস্বচ্ছ হয়ে যায়, চোখের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে লোপ পেতে থাকে। চোখে ছানি পড়লে স্বাভাবিক দৃষ্টির সমস্যা হয়। সব কিছুই আস্তে আস্তে ঘোলা বা অস্বচ্ছ দেখা যায়।

চোখে ছানি পড়ার প্রধান কারণ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে লেন্সের উপাদান প্রোটিনের গঠন নষ্ট হয়ে যাওয়া। এছাড়া আরও যেসব কারণে সমস্যা হতে পারে ১. দীর্ঘমেয়াদি কিছু রোগ যেমন ডায়াবেটিস, চোখের ইনফেকশন ইত্যাদি ২. বংশগত ৩. দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন ৪. ধূমপান ও অ্যালকোহলে আসক্তি ৫. সূর্যের অতিরিক্ত তাপ কিংবা অতিবেগুনি রশ্মিতে কাজ করা ৬. চোখে আঘাত পাওয়া ৭. ভিটামিনের ঘাটতি।

চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে জানা যায় ছানির সমস্যা সাধারণত ৪০ বছরের পর দেখা গেলেও আদতে এই রোগ আসার কোনও বয়স হয় না। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় সদ্যজাত শিশুরও এই সমস্যা রয়েছে। অপারেশনের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা হয়ে থাকে।

ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে খুব সহজেই এই রোগ বাসা বাধে। এছাড়াও হাই মায়োপিয়া কিংবা বংশগত ফান্ডাস ডিস্ট্রোফি-এর মতো অসুখেও ছানির সমস্যা দেখা দেয়।

ছানি বা ক্যাটার‍্যাক্টের ফলে আমাদের লেন্সের বেশ কিছু প্রোটিন (ক্রিস্টালিন) -এর গঠন নষ্ট হতে শুরু করে। এর ফলে এক অস্বচ্ছ আবরণ তৈরি হয়।

বর্তমানে ফেকো, এসআইসিএস, ইসিসিই-এর মতো উন্নতমানের চিকিৎসা দিয়ে অতি সহজেই রোগ নিরাময় এবং দৃষ্টি স্বাভাবিক হয়ে যায়। অযত্ন না করলে ছানি খুব সহজেই সেরে যায়।

তবে ছানির সমস্যা এড়ানোর জন্য চোখের যথন নেওয়া খুব প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস বা অন্য কোনও রোগ থাকলে চোখের ডাক্তারের কাছ থেকে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো খুব প্রয়োজনীয়।

চোখের জন্য উপকার সেই সব খাবার খাওয়া উচিত। ভিটামিন-এ (ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার), ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইটো নিউট্রেয়ান্ট রয়েছে এমন খাওয়ার খান। গাজর যেমন চোখের জন্য খুব উপকারী।

শরীরের অন্যান্য অঙ্গের চেয়ে চোখের লেন্স ভিটামিন সি বেশি ধারণ করে। যদি আপনার চোখে ছানি (প্রাথমিক পর্যায়ে) হয়ে থাকে তাহলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে সম্পূরক ভিটামিন সি গ্রহণ করুন।

চোখে ছানি আছে এমন অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যে তাদের প্রোটিন জাতীয় খাবার হজম করতে সমস্যা হয়। এই অতিরিক্ত প্রোটিন চোখের লেন্স-এ গিয়ে জমা হয়ে ছানি তৈরি করতে পারে। তাই ছানি প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত পেঁপে খাওয়া উচিত।

ছানি পড়া চোখের জন্য রসুন খুবই উপকারী। আপনার চোখ পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে দৃষ্টি যে রকম পরিষ্কার মনে হবে, রসুনও ঠিক সেই কাজটি করে থাকে। তাই প্রতিদিন ২-৩ কোয়া রসুন খেতে পারলে উপকার পাওয়া যাবে।

চোখে ছানি হলে চোখ জ্বালা করে এবং লাল হয়ে যায়। এক্ষেত্রে দুধের মধ্যে সারারাত কাজুবাদাম ভিজিয়ে রেখে সেই দুধ যদি চোখের পাতায় লাগানো যায় তাহলে চোখ জ্বালা করা এবং লাল হয়ে যাওয়া অনেকটাই কমে যায়।

গম ঘাস ( গমের কচি চারা ) যা আপনার চোখের ছানি দূর করতে সক্ষম। এজন্য আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় গম ঘাসের জুস রাখুন বা সম্পূরক হিসেবে গ্রহণ করুন।

মেডিকেল জার্নাল অনুযায়ী শাক বিটা ক্যারোটিন ও এন্টিওক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা চোখের ছানি প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিনই শাক খান।

একাধিক মেডিকেল জার্নাল অনুযায়ী, কাঁচা শাক-সবজি ভিটামিন এ এর উৎস। তাছাড়া এগুলো বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা চোখের ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে।

(ঢাকাটাইমস/৩০জানুয়ারি/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শোকের দিনে পাকিস্তানকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: সিলেট জেলা বিএনপির দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
মানবিক বিপর্যয়ে রাজনীতি নয়: ব্যারিস্টার আনিসুল
এনসিপির পদযাত্রা আগামীকাল চাঁদপুর থেকে আবার শুরু হচ্ছে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা