হিরো আলমের নামে এত জিডি হয় কেন?

ফেসবুক ও ইউটিউবের ভাইরাল তারকা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। এ পর্যন্ত তিনি যত কাজ করেছেন, সেগুলো নিয়ে আলোচনার চেয়ে সমালোচনাই বেশি হয়েছে। নিজের কাজের জন্য বিতর্কিতও হয়েছেন কয়েক বার। তার নামে থানায় জিডি হয়েছে একাধিক বার। সেই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রাজধানীর কলাবাগান থানায় হয়েছে হিরো আলমের নামে আরও একটি জিডি।
কিন্তু কেন এত জিডি হয় স্বঘোষিত এই হিরোর বিরুদ্ধে? সম্প্রতি হিরো আলমের নামে জিডি করেছেন তারেক আজিজ নিশক নামে এক মিউজিক ভিডিও নির্মাতা। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত বছরের ৭ জুলাই কোপা-আমেরিকার ফাইনাল খেলা উপলক্ষে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য লিওনেল মেসিকে নিয়ে ‘উই লাভ মেসি’ শিরোনামে একটি গান তৈরি করে টিভি চ্যানেলে আপলোড করেন ওই ভিডিও নির্মাতা।
তারেক আজিজের দাবি, ‘গানটি পরে হিরো আলম কোনো অনুমতি ছাড়াই তার ‘হিরো আলম অফিসিয়াল’ এবং ‘হিরো আলম’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেন। নিষেধ করলে উল্টো আমার চ্যানেলে স্ট্রাইক দেন এবং ফোনে আমার চ্যানেলটি নষ্ট করার হুমকি দেন।’
যদি মিউজিক ভিডিও নির্মাতা তারেক আজিজের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হিরো আলম। তার দাবি, ‘আমার সুনাম নষ্ট করতে একটি চক্র হঠাৎ করেই সক্রিয় হয়েছে। আমি অন্যায় কিছু করিনি। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। এর বেশি কিছু বলার নেই।’
তবে এই প্রথম নয়, এর আগে আরও দুইবার জিডি হয়েছে হিরো আলমের নামে। গত ৪ মার্চ তার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় জিডি করেন আকাশ নিবিড় নামে এক সাংবাদিক। আকাশের অভিযোগ ছিল, সাত দিনের কথা বলে হিরো আলম তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু চার মাস পার হলেও টাকা ফেরত দিচ্ছেন না।
ওই সাংবাদিক আরও অভিযোগ করেন, ধারের টাকা চাইতে গেলে উল্টো তাকে ফোনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেন হিরো আলম। সে বারও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন স্বঘোষিত হিরো। দাবি করেন, ‘জিডির অভিযোগ মিথ্যা। আকাশ নিবিড় ভাইরাল হওয়ার জন্য থানায় আমার নামে হয়রানিমূলক অভিযোগ দিয়েছে।’
তারও আগে ২০২০ সালের ২৭ জুন হিরো আলমের নামে হাতিরঝিল থানায় জিডি করেন সাথী আক্তার নামে একজন নার্স। যিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে কর্মরত বলে দাবি করেন। সাথীর অভিযোগ ছিল, ফেসবুক মেসেঞ্জারে হিরো আলম তাকে বিভিন্ন আপত্তিকর মেসেজ এবং কুপ্রস্তাব দেন।
সাথী জিডিতে আরও উল্লেখ করেন, ‘মূলত আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এসব কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন হিরো আলম। পরে এ বিষয়ে পত্র-পত্রিকায় নিউজ হওয়ার পর আমাকে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে প্রাণনাশের হুমকিও দেন হিরো আলম। সে কারণে আমি নিরপত্তাহীনতায় ভুগছি।’ সে বারও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন আলম।
একসময় বগুড়া শহরে অডিও ক্যাসেটের দোকান ছিল হিরো আলমের। সেই ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে শুরু করেন ডিশ লাইনের ব্যবসা। বগুড়ার আর দশটা সাধারণ ডিশ ব্যবসায়ীর মতোই ছিল তার জীবন। কিন্তু ব্যবসার খাতিরে নিজেই যখন বিভিন্ন ভিডিওতে মডেল হতে শুরু করলেন, তখন থেকেই ভাগ্যটা তার বদলে যেতে লাগলো।
এ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক ভিডিওতে মডেল হয়েছেন হিরো আলম। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। করেছিলেন সংসদ নির্বাচন। এখন আবার গেছেন প্রযোজক বনে। মাঝে বিভিন্ন দেশের ভাষায় গান গেয়ে আলোচনায় আসেন হিরো আলম। এককথায়, নানা কারণে সারা বছরই আলোচনা ও বিতর্কের কেন্দ্রে থাকেন হিরো আলম। সম্প্রতি তার নামে জিডি হওয়ায় ফের তিনি আলোচনায়।
ঢাকাটাইমস/৭ এপ্রিল/এএইচ

মন্তব্য করুন