সিএ পড়ে ব্যবসায়, পরিশ্রম আর নিষ্ঠায় সফল তাহমিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ জুন ২০২২, ২০:১৫

চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্সি বা সিএ পড়া শেষে ব্যবসার চিন্তা। অনলাইন প্লাটফর্মকে ব্যবহার করে প্রথম উদ্যোগ। কিন্তু ব্যবসাটা কিসের করবেন? পরিকল্পনা করেই অন্তর্বাস বিক্রির সিদ্ধান্ত। সাতবছর আগে নেওয়া এই উদ্যোগে তাহমিনা হোসেন এখন সফল ব্যবসায়ী।

তবে নারী হিসেবে ব্যবসায়ে আসা সহজ ছিল না তাহমিনার। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট না হয়ে অনলাইনে পণ্য বেচা স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছিল না পরিচিতরা। কিন্তু হার মানতে না চাওয়া ঢাকার বাসিন্দা এই তরুণী এগোচ্ছিলেন ধীরে সুস্থে।

তাহমিনা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘২০১৬ সালের দিকে একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করছিলাম। ফেসবুকে ‘Adore Me BD’ নামে একটি পেইজ খুলি। গতানুগতিক জামাকাপড়, কসমেটিকস এসব বাদ দিয়ে একটু ভিন্নধর্মী প্রোডাক্ট নারীদের বিভিন্ন অন্তর্বাস বিক্রি করতে শুরু করি। দুই বছরের মধ্যে বড় হয়ে গেল ব্যবসা।’

প্রত্যয়ী ও উদ্যমী এই নারী বলেন, ‘সচরাচর দোকানে গিয়ে ইনারওয়্যার কিনতে অনেকেই সংকোচ বা অস্বস্থি বোধ করেন। আমার মনে হলো অনলাইনে তারা স্বচ্ছন্দে পছন্দের পণ্যটি কিনতে পারেন আবার প্রাইভেসিও বজায় থাকছে।’

মাত্র ১৬শ টাকা দিয়ে শুরু করা তাহমিনার ব্যবসায় এখন পুঁজি ছাড়িয়েছে দশ লাখের বেশি। ব্যবসার প্রতি নেশা আর স্বাধীনভাবে কাজ করার মানসিকতা থেকে পুরান ঢাকার এই নারী এখন পরিণত ব্যবসায়ী।

কিভাবে এই সাফল্য? তাহমিনার ভাষ্য, শুরুর দিকে যা আয় ছিল তিনি তা জমাতে শুরু করেন। মূল পুঁজির সঙ্গে লাভের টাকা মিলে বাড়তে থাকে মূলধন। পাশাপাশি শ্রম দিয়েছেন দিন রাত। মূলধন বাড়াতে নিজের ব্যক্তিগত বেশ কিছু জিনিসপত্রও বিক্রি করে দেন।

তাহমিনা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি আশাবাদী ছিলাম সফল হবো। প্রথমে নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রোডাক্ট তারপর পণ্যে নানা ভ্যারাইটি আনতে থাকি। একটা পর্যায়ে চায়না থেকে নিজেই পণ্য আনা শুরু করি। ব্যবসা বড় হয়ে যাওয়ায় বাসায় জায়গাও হচ্ছিল না। তারপর দোকান নেওয়ার পরিকল্পনা করি।’

ঢাকার নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্সে ‘Adore Me BD’ শোরুম। তাহমিনার এই প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হয়েছে বেশ কিছু তরুণের। অনলাইনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি এখন অফলাইনেও পণ্য বিক্রি করছে। এছাড়া বিভিন্ন ইভেন্ট ও মেলায়ও অংশ নিচ্ছে।

তাহমিনা বলছেন, প্রতিষ্ঠার পেছনে তার ত্যাগ যেমন ছিল, তেমনি ছিল ক্রেতাদের আস্থা। মূলত ক্রেতার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারায় তার ব্যবসা ও ব্র্যান্ড পরিচিতি পেয়েছে।

‘সাত বছরের পরিশ্রম, ত্যাগের সঙ্গে কাজের প্রতি শ্রদ্ধা আর হার না মানার প্রত্যয় আমাকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। এখন আমার স্বপ্ন ইনারওয়্যার নিয়ে একটা দেশীয় ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করা’—যোগ করেন এক সন্তানের জননী তাহমিনা।

(ঢাকাটাইমস/০৯জুন/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

নারীমেলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা