মন্দার ঝুঁকিতে বিশ্ব, আইএমএফের সতর্ক বার্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১৫:৪১
অ- অ+

বিশ্বব্যাপী বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি। ফলে ঋণ নেওয়ার হারও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশ্বিকভাবে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদী সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হয়ে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতিকে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই মন্দার ঝুঁকি বাড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধান।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, এই ক্রমাগত সমস্যার ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক সংস্থাটি আসন্ন প্রতিবেদনে আগামী বছরের জন্য তার প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দেবে। তার ভাষ্য অনুযায়ী অর্থনৈতিক দুরবস্থার অন্ধকার চিত্র এটি।

এর মাধ্যমে কীভাবে গত বছরের বৈশ্বিক মহামারি, মুদ্রাস্ফীতি এবং পরে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে সেটারই বাস্তব উদাহরণ দেখালেন আইএমএফ প্রধান।

জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে দেওয়া বক্তৃতায় আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জর্জিয়েভা বলেন, ‘একাধিক ধাক্কা, তার মধ্যে আবার বুদ্ধিহীন যুদ্ধ অর্থনৈতিক চিত্রকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। অস্থায়ী হওয়ার বদলে মুদ্রাস্ফীতি আরও স্থায়ী হয়েছে।’

মিটিংয়ে নীতিনির্ধারকরা উচ্চ সুদের হারের প্রভাবের জন্য প্রস্তুতির সময় মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং মন্দার ঝুঁকিতে তাদের প্রতিক্রিয়াগুলিকে আরও ভালভাবে সমন্বয় করার জন্য কাজ করবেন।

ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট এল. ইয়েলেন বৃহস্পতিবার সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টে এক বক্তৃতায় বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির সম্মুখীন প্রধান অর্থনীতির জন্য তাৎক্ষণিক কাজ হল স্থিতিশীল মূল্যের পরিবেশে ফিরে আসা। কিন্তু এটি স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ যে উন্নত দেশগুলির সামষ্টিক অর্থনৈতিক দৃঢ়তা আন্তর্জাতিকভাবে ছড়ানো যেতে পারে।’

ইয়েলেন আরও বলেছেন, যদি ঋণ সংকট দেখা দেয় সে চিন্তা করে আইএমএফ এবং বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলিকে উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলিকে সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এছাড়াও অনেক উদীয়মান বাজারের জন্য ‘উল্লেখযোগ্য ঋণ ত্রাণ’ প্রয়োজন হতে পারে।

আইএমএফের ধারণা অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় এক তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণে রাখা দেশগুলি ২০২২ বা ২০২৩ সালের পরপর দুই চতুর্থাংশ সংকোচনের সম্মুখীন হবে। এমনকি যখন প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হয়, তখন প্রকৃত আয় সঙ্কুচিত এবং ক্রমবর্ধমান দামের কারণে মন্দার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে।

বক্তৃতায় জর্জিভা বিশ্বের অর্থনৈতিক দুর্দশার একটি ভয়াবহ প্রতিকৃতির বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে রাশিয়ান গ্যাসের মূল্য টের পাচ্ছে ইউরোপ, গভীর মন্দার সম্মুখীন হচ্ছে চীনের বাজার, মুদ্রাস্ফীতি আর ক্রমবর্ধমান সুদের হার ভোক্তাদের মনে সংশয়ের সৃষ্টি করছে এবং বিনিয়োগ আটকে দেওয়ার কারণে মার্কিন অর্থনীতিও গতি হারাচ্ছে।

উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলি উচ্চ খাদ্য ও শক্তির দামের মোকাবিলা করার জন্য আরও খারাপ অবস্থানে রয়েছে, বিশেষ করে তাদের রপ্তানির চাহিদা কমে যাওয়ায়।

জর্জিয়েভার মতে, ২০২৬ সালের মধ্যে প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে যা জার্মানির জাতীয় অর্থনীতির সমান। নিঃসন্দেহে এটি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বিশাল ধাক্কা হতে যাচ্ছে। এমনকি এই পরিস্থিতি ভালো হওয়ার বদলে উল্টো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

(ঢাকাটাইমস/০৭অক্টোবর/এসএটি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দেশের কোথাও ‘চরমোনাইকে’ মাহফিল করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি ওলামা দলের
রাঙ্গুনিয়ায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
র‍্যাব সদর দপ্তরে আইনবিষয়ক সেমিনার ও এআই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
নারায়ণগঞ্জে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে 'জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ' উদ্বোধন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা