মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ মাসে নিহত ৫৭৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ২৩:০০

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সারা দেশে ১ হাজার ৩০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৪৮৪ জন নিহত ও ২ হাজার ৪৮৫ জন আহত হয়েছেন। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ১৪টি দুর্ঘটনায় ১৬ জনের (১৬.৪৮) মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির দিক থেকে মোটরসাইকেলের অবস্থান শীর্ষে। এ সময়ে ৫২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৫৭৯ জন; যা মোট দুর্ঘটনা ও নিহতের যথাক্রমে ৪০.৪৭ ও ৩৯.০১ শতাংশ। দুই চাকার এ ক্ষুদ্র বাহনে গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছে ৬ জনেরও (৬.৪৩) বেশি মানুষ।

ঢাকার গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন শিপিং এ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) পর্যবেক্ষণ ও জরিপ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।

১২টি বাংলা জাতীয় দৈনিক, ৫টি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ৯টি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও সংবাদ সংস্থা এবং ৬টি আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে সংগঠনটি জানিয়েছে। প্রতিবেদনে দুর্ঘটনা এড়াতে পদ্মা সেতুর ওপর মোটরসাইকেল চলাচলের নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা ও ঈদযাতায়াতে সকল মহাসড়কে এই বাহন নিষিদ্ধ ঘোষণার সুপারিশ করেছে এসসিআরএফ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চে সর্বাধিক ৪৭৯টি দুর্ঘটনায় ৫৮৪ জন নিহত ও ১ হাজার ১০২ জন আহত হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে সর্বনি¤œ ৩৯২টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪১১ ও ১ হাজার ১০২ জন। জানুয়ারিতে ৪৩১টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৮৯ জনের। এ তিন মাসে সর্বাধিক ৪২১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে মহাসড়কে; যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৩৩ শতাংশ। সড়কে নিহতের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পথচারী।

এ সময়ে ৩৭০ জন পথচারী মারা গেছেন; যা মোট নিহতের ২৪.৯৩ শতাংশ। তিন মাসে ২১১ নারী ও ২১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মোট প্রাণহানির মধ্যে নারী ও শিশুর অবস্থান যথাক্রমে ১৪.২১ ও ১৪.১৫ শতাংশ। এ সময়ে অন্যান্য গাড়িচালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ২০৯ জন; যা মোট প্রাণহানির ১৪.০৮ শতাংশ।

দুর্ঘটনার সড়কভিত্তিক পর্যবেক্ষণ : প্রতিবেদনে সড়কভিত্তিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, তিন মাসে সর্বাধিক ৪২১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে মহাসড়কে, যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৩৩ শতাংশ। আঞ্চলিক সড়কে ঘটেছে ৩২৭টি, যা মোট দুর্ঘটনার ২৫.১১ শতাংশ। গ্রামীণ সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা ও হার যথাক্রমে ২৮৭ ও ২২.০৪ শতাংশ এবং শহরের সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা ও হার যথাক্রমে ১৮৯ ও ১৪.৫১ শতাংশ। বাকি ৭৮টি (৬.০১ শতাংশ) দুর্ঘটনা ঘটেছে অন্যান্য স্থানে।

দুর্ঘটনার সময়ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ : প্রতিবেদনে সময়ভিত্তিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, তিন মাসে সবচেয়ে বেশি ৩৭৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে সকালে, যা মোট দুর্ঘটনার ২৮.৮৭ শতাংশ। দুপুরে ও রাতে ঘটেছে যথাক্রমে ৩৬৪টি ও ২৪৭টি, যা মোট দুর্ঘটনার যথাক্রমে ২৭.৯৫ ও ১৮.৯৭ শতাংশ। এছাড়া ১৬৩টি ঘটেছে বিকেলে, যা মোট দুর্ঘটনার ১২.৫১ শতাংশ। অন্যান্য সময়ে ঘটেছে বাকি ১৫২টি (১১.৬৭ শতাংশ) দুর্ঘটনা।

দুর্ঘটনার ১৬ কারণ

পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার ১৬টি কারণ চিহ্নিত করেছে এসসিআরএফ। সেগুলো হলো- ১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন। ২. অদক্ষ ও অসুস্থ চালক। ৩. গাড়ির বেপরোয়া গতি। ৪. প্রচলিত আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ওভারটেকিং। ৫. নিয়োগপত্র, সাপ্তাহিক ছুটি ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকায় চালক ও সহকারীদের মানসিক অবসন্নতা। ৬. বিভিন্ন স্থানে সড়কের বেহাল দশা। ৭. জাতীয় মহাসড়ক ও আন্তঃজেলা সড়কে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। ৮. দূরপাল্লার সড়কে বাণিজ্যিকভাবে বিপুলসংখ্যক মোটরসাইকেল চলাচল। ৯. মহাসড়কে স্বল্পগতির তিন চাকার যানবাহন চলাচল। ১০. তরুণ ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মোটরসাইকেল চালানো। ১১. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি ও সংশ্লিষ্ট অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনিয়ম-দুর্নীতি। ১২. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। ১৩. সাধারণ মানুষের সচেতনতার ঘাটতি ও ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ধারণা না থাকা। ১৪. চালক ও পথচারীদের ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা। ১৫. প্রচলিত আইন প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের শিথিলতা এবং ১৬. বিভিন্ন টার্মিনাল ও সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি।

ঢাকাটাইমস/০৯এপ্রিল/আরকেএইচ/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :