কক্সবাজারে স্থানীয়দের চেয়ে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা পাঁচ গুণ বেড়ে গেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৩, ২২:১৪
অ- অ+

রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, কক্সবাজারে স্থানীয় মানুষের চেয়ে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা পাঁচ গুণ বেড়ে গেছে। তারা স্থানীয়দের চাকরি নিয়ে নিচ্ছে। কয়েক দিন পর স্থানীয় মানুষজন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে খেপে উঠবে।

সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে চীনা উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমাদের বক্তব্য বলেছি। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। আমরা সব দেশকে বলেছি রোহিঙ্গাদের নিয়ে যান।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে এখনও সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি— এমন কথা যারা বলে, তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাক। আমি সব দেশকে বলেছি রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেতে। কানাডা বলল, তারা নেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৯ জন নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে মাত্র ৬২ জন। কোথায় ২০-৩০ হাজার করে প্রতি বছর নেবে, তার ধারে কাছে নেই।

প্রতি বছর রোহিঙ্গাদের পেছনে ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১৯০ কোটি) খরচ হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ ছাড়াও অবকাঠামো বানাতে হয়েছে তাদের জন্য। সবমিলিয়ে আমরা চাই, তারা ফেরত যাক।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে পাইলট প্রকল্প কবে নাগাদ শুরু হবে- এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাও আমরা বলতে পারবো না। মিয়ানমার দু-দুবার তারিখ নির্ধারণ করেছে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে, কিন্তু তা কোনো কাজে আসেনি। আর আন্তরিকতা না থাকলে কাজ হয় না। ওদের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব আছে, না হলে এতদিন শুরু হয়ে যেত।’

চীন এ ক্ষেত্রে কী আশা দিয়েছে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্ক ভালো। যে কারণে আমাদের পক্ষ হয়ে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে চীন, আলাপ করছে। তারা বোঝে যে আমরা এগুলোকে বেশিদিন রাখতে পারব না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে চীনের কাছ থেকে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে মিয়ানমারের দুটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছে, রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিরাও মিয়ানমারে গেছে।’

চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কী আলাপ হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি বছর দশেক আগেও বাংলাদেশে এসেছিলেন। এতদিন পর এসে দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন দেখেছেন, সেই গল্পটিই বলেছেন। তখন এসে তিনি বাংলাদেশের এমন উন্নয়ন দেখেননি। তিনি পদ্মা সেতু দেখতে গিয়েছিলেন। কারণ তাদের ঠিকাদাররাই এটিতে কাজ করেছিলেন। সেটা এবং রাস্তাঘাট দেখে তার খুব পছন্দ হয়েছে। বললেন যে ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে এক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলতেই চীনা উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত দেওয়ার জন্য আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ করছি। চীন-মিয়ানমার ও বাংলাদেশ মিলে ত্রিপক্ষীয় আলাপ করছি। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে চীনা উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমাদের বক্তব্য বলেছি। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। সম্প্রতি আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, যারা রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল দিতেন, তারা টাকা পয়সা কমিয়ে দিয়েছে। অনেকে অনেক বেশি কমিয়ে দিয়েছে। যেমন, আগে যুক্তরাজ্য ১২৬ মিলিয়ন (১২ কোটি ৬০ লাখ) মার্কিন ডলার দিত, কিন্তু এ বছরে তারা ৫.৪ মিলিয়ন (৫৪ লাখ) ডলার দিয়েছে। আমাদের দেননি, জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারকে (ইউএনএইচআর) দিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আগামী সেপ্টেম্বরে বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে ওই সময়ে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাওয়ার শিডিউল থাকায় সরকারপ্রধান চলতি বছরই বেইজিং যাবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা নেই।’

(ঢাকাটাইমস/২৯মে/আরকেএইচ/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আইভীকে বহনকারী পুলিশের গাড়িতে হামলা, আহত ৫
বিএনপির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি দলের বৈঠক
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে: মঈন খান
নির্বাচন বিলম্বিত হলে জনগণই রাস্তায় নামবে: ফারুক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা