পরিস্থিতি সামলাতে আদানি থেকে আরও বিদ্যুৎ কেনার চিন্তা

তীব্র গরম। এর মধ্যে ভয়াবহ লোডশেডিং। কয়লার অভাবে উৎপাদন বন্ধ একাধিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি চিন্তায় ফেলে দিয়েছে সরকারকে। এমন পরিস্থিতিতে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যুৎ কেনার কথা ভাবা হচ্ছে। এছাড়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে ইতোমধ্যেই বৈঠক করেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়। বৈঠকে দেশি-বিদেশি কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বেশি বিদ্যুৎ কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন>>সব সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
সূত্র বলছে, আমদানি করা বিদ্যুতের মধ্যে বর্তমানে ভারতের আদানি গ্রুপ ৭৫০ থেকে ৯৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে বাংলাদেশ। এখন সরকার আদানির কাছ থেকে ১০৫০ মেগাওয়াট নিতে চাইছে।
এছাড়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন এখন ৩২০-৩৭০ মেগাওয়াট। ওই উৎপাদন ৬১২ মেগাওয়াটে পৌঁছানোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে রাজধানী ঢাকায় দিনে গড়ে এলাকাভিত্তিক ৬-৭ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরও শোচনীয়। তবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ১৫-২০ দিনের আগে এ সংকট কাটছে না। কয়লা আমদানি না করা পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য বলছে, গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিদ্যুতের মোট চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট। কিন্তু উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ১৬৬ মেগাওয়াট। লোডশেড করা হয়েছে মোট ২৬১০ মেগাওয়াট।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যানুযায়ী, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট।
এদিকে আপাতত বিদ্যুৎ কিনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি ঘোড়াশাল, আশুগঞ্জ, টঙ্গী, ভেড়ামারা, সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন প্লান্টে ৫ কোটি ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ বাড়িয়ে ৫০০ মেগাওয়াট উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের জন্য বর্তমানে দৈনিক ১২০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে পেট্রোবাংলা। এর পরিমাণ বাড়াতে গেলে শিল্পে সরবরাহ কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এছাড়া গ্যাস, কয়লা ছাড়াও ফার্নেস তেলভিত্তিক বিভিন্ন কেন্দ্রের উৎপাদন বৃদ্ধির কথাও ভাবছে সরকার। ইতোমধ্যে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে আবারও উৎপাদন শুরু করা হয়েছে।
পিডিবিসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে কয়লা আমদানি করা যায়নি। এতে কয়লা সংকটে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট ২৫ মে ও ৫ জুন বন্ধ হয়ে যায়। এসব ইউনিট চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় কয়লার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। তবে সে কয়লা এসে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হতে সময় লাগবে ২৫ দিন। সেক্ষেত্রে জুন মাস জুড়েই লোডশেডিং বজায় থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এসব বিষয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘আমাদের এখন কিছু ঘাটতি আছে, ফলে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তবে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই লোডশেডিং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’
এদিকে মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা মনে করি ১৫ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে বিদ্যুতের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আপনারা সবাই একটু ধৈর্য ধরুন। বিশ্বের দিকে ও নিজের দেশের দিকে তাকিয়ে যদি আমরা ধৈর্য ধরি, তাহলে যে সমস্যাটা দেখতে পাচ্ছি সেটা পার হতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দিনের বেলায় ১২ হাজার থেকে সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারি। পিক আওয়ারে সন্ধ্যা বেলায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারি। দুই থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং চলছে।’
(ঢাকাটাইমস/০৮জুন/আরআর/আরকেএইচ)
সংবাদটি শেয়ার করুন
বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিকল্পনা: যেমন পরিস্থিতি তেমন কৌশল

প্রসূতি আঁখি ও নবজাতকের মৃত্যু: তদন্তের তথ্য জানাতেও গড়িমসি সেন্ট্রাল হাসপাতালের

লভ্যাংশ দেয়নি ৯ মাসেও: বিনিয়োগকারীর টাকায় ফরচুন সুজ মালিকের ক্রিকেট বিলাস!

কেন মন খারাপ ডা. সাবরিনার?

অক্টোবর ঘিরে চলবে রাজপথ দখলের লড়াই

হঠাৎ মাঠে নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীর, সেঁটেছে পোস্টার বিলাচ্ছে লিফলেট, উদ্দেশ্য কী?

এবার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পাবেন খালেদা জিয়া, তবে...

বিএনপি নির্বাচনে না এলে ‘আসন’ বাড়বে মহাজোট শরিকদের

অন্যের স্বত্ব নিয়ে দুর্নীতি: কপিরাইট অফিসের দুই কর্মচারী এখন অঢেল বিত্ত ভৈববের মালিক
