সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ড: এসপি-ওসির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার দাবি
জীবনের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসন কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। এ ঘটনার দায়ে জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোহেল রানাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি করেছেন জেলার ইসলামপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা।
শনিবার বেলা ১১টায় নাদিমের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে থানা মোড় বটতলা চত্বরে ইসলামপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ দাবি করেন সাংবাদিকরা।
ইসলামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোরাদুজ্জামান মোরাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজ লিটনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে দৈনিক সংবাদের সাবেক সহসম্পাদক ও কলামিস্ট এম. কে. দোলন বিশ্বাস বলেন, গোলাম রব্বানী নাদিম ছিলেন সত্যিকার অর্থেই একজন সৎ ও সাহসী সাংবাদিক। সত্য খবর প্রকাশ করার অপরাধে তাকে আজ সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আগে একাধিকবার হামলার শিকার হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওতে আকুতি জানিয়ে ছিলেন সাংবাদিক নাদিম। এছাড়া বকশীগঞ্জ থানায় আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন কোনো ধরনের আইনি সহায়তা দেয়নি।
দোলন বিশ্বাস বলেন, যদি সাংবাদিক নাদিমের জীবনের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসন আগে থেকেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতো, তাহলে সাংবাদিক নাদিমকে সন্ত্রাসীদের হাতে আজ প্রাণ দিতো হতো না। নাদিমের জীবনের নিরাপত্তা না দেওয়ার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না এসপি নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং ওসি মো. সোহেল রানা। এ কারণে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহারের দাবি করছি।
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিনিয়র সাংবাদিক ফিরোজ খান লোহানী, খাদেমুল হক বাবুল, রহিমা সুলতানা মুকুল, শহিদুল ইসলাম কাজল, রোকনুজ্জামান সবুজ, সাহিদুর রহমান, কোরবান আলী, আশিকুর রহমান, মশিউর রহমান টুটুল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভার পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিম। অভিযোগ উঠে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নেতৃত্বে ১০-১২ জন এ হামলা করেন। পরে স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। এদিন রাত দেড়টার দিকে জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় । সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার দুপুরে দু দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নাদিম হত্যা: পঞ্চগড় থেকে আটক অভিযুক্ত বাবু চেয়ারম্যান
গোলাম রাব্বানী নাদিম উপজেলার নীলাখিয়া ইউনিয়নের গোমের চর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে। তিনি বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টেলিভিশন এবং দৈনিক মানবজমিনের বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/১৭জুন/এসএম)