সরকারের দুঃশাসনের ফলে ঈদেও মানুষের মনে আনন্দ নেই: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান নিশিরাতের সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের ফলে এ পবিত্র ঈদেও মানুষের মনে কোনো আনন্দ নেই। চাল, চিনি, তেলসহ নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতিতে মানুষ এখন দিশেহারা। ঈদের দিনেও অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে মানুষ। দেশে-বিদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষরা শেখ হাসিনাকে ধিক্কার দিচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ রবিউল আলমের মুক্তির দাবিতে শনিবার এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার নিপীড়ন নির্যাতন ঈদের দিনেও আমাদের অঙ্গ-সংগঠন ছাত্রদল, যুবদলের অনেক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছেন। গোপালগঞ্জের মকসুদপুরে এমনকি তারা মাইকিং করে বলেছে যে বিএনপি নেতারা যেন ঈদের নামাজ পড়তে না পারে। আমাদের যে ধর্মীয় অধিকার আল্লাহর কাছে ইবাদত করার অধিকার এই শেখ হাসিনার পান্ডারা তাদের স্বসস্ত্র সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়েছে। আর কি বলছে তাদের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যে বিএনপি নেতারা কোন সংস্কৃতি জানেনা।
তিনি আরও বলেন, এবারের কোরবানীর ঈদে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ঈদের জন্য ঘরে ফেরা মানুষদের যানজটে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ঈদের প্রাক্কালে বাড়ির উদ্দেশ্যে যেদিন রওনা দিয়েছে, তার পরের দিন সন্ধ্যায় বা মাঝরাতে বাড়িতে পোঁছেছে। কেউ কেউ গতকাল ঈদের দিনেও বাড়ি পৌঁছেছে।
এটার অবদান তো ওবায়দুল কাদের সাহেবের। আপনাদের সংস্কৃতি একটা মারলে দশটা মারতে হবে। দেশের বিখ্যাত একজন আইনজীবিকে বলেছেন মুই কার খালুরে। একজন বরেণ্য আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকের চোখ তুলে নিতে চেয়েছেন। মানুষ চারদিক থেকে ধিক্কার দিচ্ছে ওবায়দুল কাদের সাহেবকে। আপনাদের সংস্কৃতি তো কাউয়া সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি আমরা মানি না। আমরা মানুষকে ইজ্জত দিতে জানি। বিএনপি মানুষকে শ্রদ্ধা করে।
আওয়ামী লীগ জনগণকে কৃতদাস মনে করে জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই দেশে যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে, তারাইতো সভ্যতায় বিশ্বাস করে, আপনাদের রক্তের মধ্যেও কর্তৃত্ববাদ, দুঃশাসন। আপনারা জনগণকে কৃতদাস মনে করেন। আপনাদের মুখ থাকে আজেবাজে কথা। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের সম্পর্কে বাজে কথা, ঘৃণ্য কথা। আওয়ামী লীগের কালচার কাউয়া কালচার। এটা কোন মানুষের কালচার না। আমরা এখনও বন্দী। আমরা বাইরে থাকলেও বন্দী, আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা নেই।
রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীনদের বাজার সিন্ডিকেটের কারণে প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম যেভাবে হু-হু করে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই কোরবানি ঈদে রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় যেসমস্ত জিনিসের প্রয়োজন হয় যেমন- কোরবানির পশু, চাল, ডাল, তেল, লবন, পেঁয়াজ, কাচা মরিচ ও মসলাসহ অধিকাংশ খাদ্যপণ্যই ছিলো মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। দেশের জনগণই যেন আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। তাই এদের আমলে মানুষের জীবন কাটে আতঙ্কে, ভয়ে, অবহেলায়, অনাহারে ও অর্ধাহারে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দরকার পড়ে কিন্তু ভোটের দরকার পড়ে না। এই জন্য দেশে-বিদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষরা শেখ হাসিনাকে ধিক্কার দিচ্ছে।
মিছিলে আরও অংশ নেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ড. রফিকুল ইসলাম, এ্যাব এর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম, মৎস্যজীবি দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ড. জাহিদুল কবির, কেন্দ্রীয় যুবদলের যোগাযোগ সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন মামুন, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মিলাদ উদ্দীন ভুইয়া, ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ড. আউয়াল, ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের পূর্বের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জ্যাকিসহ কয়েক শ নেতাকর্মী।
বিক্ষোভ মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে নাইট এঙ্গেল মোড় হয়ে আবার নয়াপল্টনে এসে শেষ হয়। মিছিল থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দেয়া হয়।
ঢাকাটাইমস/০১জুলাই/জেবি/ইএস