‘ইনকাম কম হইলেও শেরপুরেই ভালো আছি’

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১৪:২০ | প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১২:১১

প্রতিদিন ৫শ’ টাকা ইনকাম কইরা খুব ভালো আছি, ঢাকায় থাকতে এর চেয়ে অনেক বেশি আয় হলেও মনে শান্তি ছিল না।

কথাগুলো বলছিলেন শেরপুর শহরের নয়আনি বাজার এলাকায় রাতে ভ্যান গাড়িতে সবজি বিক্রেতা হবিবর রহমান (৬৭)। তার বাড়ি শহরের নৌহাটা এলাকায়।

হবিবরের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।

হবিবর জানায়, জীবিকার তাগিদে এক সময় দেশের নানা প্রান্তে ঘুরে ইটভাটা শ্রমিকের কাজ করতেন। পরে কাজ নেন ট্রাক চালকের সহযোগীর। এ পেশায় কাজ করার সময় টাঙ্গাইলে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার বাম পাশের পা এবং হাতে ভীষণ আঘাত পান। ওই ঘটনায় তার পায়ের হাড় ভেঙে যায়। পরে তাকে ভর্তি করানো হয় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে। সহায় সম্বল বিক্রি করে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হন। এ সময়ে সামান্য হাঁটা-চলা করতে পারলেও কোন ভারী কাজ করার সামর্থ্য তার ছিল না। এ কারণে কাজ না পেয়ে বেকার হয়ে থাকতে হয় অনেক দিন। দেখা দেয় আর্থিক দৈন্যদশা। পরে পরিচিত কয়েকজনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নিয়ে ঢাকার টঙ্গীতে শুরু করেন খুচরা দরে সবজি বিক্রি। প্রতিদিন আয় হতো ১০০০-১২০০ টাকা। কিছুদিন পর ধারের সব টাকা পরিশোধ করে দেন।

পরে আরও বেশ কিছু দিন ব্যবসা করে টাকা জমিয়ে আর সবজি বিক্রির অভিজ্ঞতা পুঁজি করে চলে আসেন নিজ জন্মভূমি শেরপুরে। ওঠেন জেলা শহরের নৌহাটা এলাকার ভাড়া বাড়িতে।

এক প্রশ্নের জবাবে হবিবর বলেন, ঢাকায় ইনকাম অনেক ভালো হলেও বাড়ি ভাড়া আর খাওয়ার খরচ অনেক বেশি। তাই পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে থাকাটা কঠিন। এখন নিজ এলাকায় সবজি বিক্রি করে প্রতিদিন ৫শ’ টাকা আয় হলেও স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শান্তিতে আছি। ইনকাম কম হইলেও শেরপুরেই ভালো আছি।

বৃদ্ধ হবিবর বলেন, প্রতিদিন দুপুরে জেলা সদরের কুসুমহাটি, ভীমগঞ্জ, নন্দীর বাজার, পোড়ার দোকান এবং লছমনপুর এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে পাইকারি দামে আলু, পটল, ঝিঙ্গা, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়াসহ ১২-১৪ পদের সবজি কিনি। এছাড়া পছন্দ অনুযায়ী লালশাক, ঢেঁকিশাক, মুলাশাক, লাউপাতাসহ আরো কয়েক আইটেমের পাতা জাতীয় সবজি ভ্যান বোঝাই করে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কলেজ রোডের নয়আনী বাজার এলাকার চলে আসি। সেখানে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে বেচা-বিক্রি। প্রতিদিন কমপক্ষে ৫শ’ টাকা আয় হয়।

তিনি আরও বলেন, এই সবজি বিক্রির টাকায় মেয়ে হাবেদা (২৮) ও শেফালীকে (২৬) বিয়ে দিয়েছেন। মেয়েরা থাকে দিনাজপুরের তারাগড়ে। আর এক ছেলে আরিফ (৩২) ঢাকায় অটোরিকশা চালায়।

(ঢাকাটাইমস/০৩আগস্ট/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :