বিয়েবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে পুলিশ সদস্য: তদন্তে গাফলতি করায় জিএমপির ডিসিকে ‘তিরস্কার’
এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আসা বিয়েবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ অনুসন্ধানে গাফলতি করায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ কামাল হোসেনকে ‘তিরস্কার’ করেছে সরকার। পুলিশ সদস্য দিলরুবা আক্তারের বিয়েবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে যথাযথ তদন্ত না করায় তাকে তিরস্কার করা হয়।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। গত ২১ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রজ্ঞাপনে সই করেন।
জানা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে পরের বছরের মে মাস পর্যন্ত মুহাম্মদ কামাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকা অবস্থায় জেলা পুলিশের নারী কনস্টেবল দিলরুবা আক্তার চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু তিনি বিয়ের তথ্য গোপন করেন এবং বিয়েবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। দিলরুবা আক্তার চাকরিতে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছে এমন অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামাল হোসেনকে। তিনি নির্দেশনা পেয়েও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে অনুসন্ধান না করায় একাধিক তাগিদপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করেননি। সর্বশেষ ২০২১ সালের মে মাসে পুলিশ সদরদপ্তরে বদলি হলেও অভিযোগের তদন্ত রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর না করে নিজের কাছে রেখে দেন। অনুসন্ধানের প্রতিবেদনপত্র নিজ হেফাজতে রাখার অভিযোগে গতবছরের সেপ্টেম্বর মুহাম্মদ কামাল হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে তিনি ব্যক্তিগত শুনানির জন্য আবেদন করেন।
শুনানিতে উভয়পক্ষের বক্তব্য, অভিযুক্ত কর্মকর্তার জবাব এবং অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করে কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাই তাকে গুরুদণ্ড আরোপ হতে পারে প্রতীয়মান হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৭(২)(ঘ) বিধি মোতাবেক রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এস এম রশিদুল হককে বিভাগীয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। তদন্ত কর্মকর্তা রংপুর সরেজমিন তদন্ত শেষে গত ১৯ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, অপরাধের প্রকৃতি ও মাত্রা বিবেচনায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী 'অসদাচরণ' এর অভিযোগে একই বিধিমালার ৪(২) উপ-বিধি (১)(ক) উপবিধি অনুযায়ী কামাল হোসেনকে ‘তিরস্কার’ দণ্ড প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/এসএস/ইএস)