সমকামিতা চালু থাকলেও ভারতে বৈধতা পেল না সমলিঙ্গের বিয়ে

সমলিঙ্গের বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দিলেন না ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার দেশটির শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চের তরফ থেকে এ সংক্রান্ত একটি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

এই রায়ে তিনজন বিচারপতি সমলিঙ্গে বিয়েকে বৈধতা দেওয়ার বিপক্ষে রায় দেন। পক্ষে রায় দেন দুজন বিচারপতি। ফলে ৩-২ ভোটে সমকামীদের হার হয়। এর ফলে সমলিঙ্গে বিয়ে আইনের চোখে বৈধতা পেল না ভারতে।

তবে দেশটিতে সমকামিতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বহু আগেই। কেউ চাইলেই সমলিঙ্গের কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়াতে পারবে, একসঙ্গে থাকতেও পারবে। কিন্তু তারা বৈবাহিক সম্পর্কে জড়াতে পারবে না।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মঙ্গলবার নিজের রায়ে জানান, রূপান্তরকামী কোনো পুরুষ যদি মহিলাকে বিয়ে করতে চান, বা রূপান্তরকামী কোনো মহিলা যদি পুরুষকে বিয়ে করতে চান, তাহলে তারা তা করতে পারবেন।

এদিকে ভাট নামে আরেক বিচারপতি নিজের রায়ে বলেন, ‘আদালত সমকামী দম্পতিদের জন্য একটি সামাজিক বা আইনি প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারে না।’

এর আগে মামলাকারীদের দাবি ছিল, স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় সমলিঙ্গে বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। তাদের হয়ে মামলা লড়েন মুকুল রোহতগি, অভিষেক মনু সিংঘভি, আনন্দ গ্রোভার, গীতা লুথরা, মেনকা গুরুস্বামী নামের আইনজীবীরা।

মামলাকারীরা দাবি করেন, সবারই সমান অধিকার পাওয়া উচিত। যদিও সমলিঙ্গের বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তাদের বক্তব্য ছিল, সমলিঙ্গে বিয়ের বিষয় নিয়ে একমাত্র সিদ্ধান্ত নিতে পারে সংসদ তথা দেশের আইনসভা।

কেন্দ্রের জমা করা হলফনামায় বলা হয়েছিল, ‘সমলিঙ্গে বিয়ে আদতে শহুরে অভিযাত একটি ধারণা।’ আদালতে কেন্দ্রের যুক্তি, সমলিঙ্গ বিয়েকে স্বীকৃতি দিলে ভারতের প্রতিটি নাগরিকের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এক ঐতিহাসিক রায়দানের মাধ্যমে সমকামী সম্পর্ককে অপরাধমুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ব্রিটিশ জামানার বহু পুরোনো আইনকে প্রত্যাহার করে পাঁচ সদস্যের বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছিল, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার আওতায় দুজনের পূর্ণ সম্মতিতে সমকামী সম্পর্ক অপরাধ নয়।

সেই পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ও। তবে সমকামী সম্পর্ক বৈধ হলেও ভারতে সমকামী বিয়ের আইনি বৈধতা ছিল না এতদিন ধরে।

এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ নির্দেশনা জারি করে, বিভিন্ন হাই কোর্টে সমকামী বিয়ে সংক্রান্ত যাবতীয় পিটিশন মুলতুবি করে তা শীর্ষ আদালতে পাঠানো হোক। সেই মতো শীর্ষ আদালতে মে মাসে ১০ দিন শুনানি চলে। পরে মামলার রায় স্থগিত রাখা হয়।

(ঢাকা টাইমস/১৭অক্টোবর/এজে)