হাসান সারওয়ার্দীর ক্ষেত্রে কেন ধীরে চলো নীতি নিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন?

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৩০ | প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:২৮

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান মাটিচাপাই পড়ে গেল? দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জন করে বিদেশে পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্রায় তিন বছর হতে চলল। সেই অনুসন্ধান আর শেষ করতে পারেনি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।

এদিকে গত শনিবার বিএনপি কার্যালয়ে বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়ান আরেফিকে নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। আলোচনায় এসেছে তার দুর্নীতি এবং দুদকের গতিহীন অনুসন্ধানও।

বাইডেনের কথিত উপদেষ্টাকে নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করার ঘটনায় পল্টন মডেল থানায় দায়ের হওয়া মামলায়ও আসামি হয়েছেন হাসান সারওয়ার্দী। ওই দিন থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। এখন কোথায় আছেন তা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে রহস্য।

প্রাপ্ত নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২০ সালের ২ ডিসম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশন বৈঠকে চৌধুরী হাসান সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। অনুসন্ধানের জন্য বিশেষ তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়। অনুসন্ধানেও নামে দুদক। তবে রহস্যজনকভাবে কোনো কুুলকিনারা হয়নি ওই অনুসন্ধানের। একইসঙ্গে ধামাচাপা পড়ে গেছে সাবেক এই সেনাকর্মকর্তার দুর্নীতির বিপরীতে শাস্তির প্রক্রিয়া। আদৌ তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষ হবে কি না তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়।

অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, হাসান সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলমান। তিনি ক্ষমতার মাধ্যমে অনৈতিকভাবে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। বিপুল সম্পদের মালিক হতে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। অবৈধভাবে অর্জিত কোটি কোটি টাকা দিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নামে বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন। এছাড়া বিদেশে অর্থ পাচার করে মানিলন্ডারিং অপরাধ করেছেন বলে যে অভিযোগ রয়েছে- তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এসব অভিযোগের বিপরীতে প্রমানাদি জোগাড় করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, চৌধুরী আবু সাহেদ নামে এক ব্যক্তির দাখিল করা ৩০ পৃষ্ঠার অভিযোগ প্রাথমিক অনুসন্ধান করে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায় সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এরপর তার দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

এ বিষয়ে দুদকের সচিব মাহবুব হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘প্রক্রিয়াগতভাবে কাজ চলছে।’

ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমি তিন দিন ধরে কিশোরগঞ্জে, আমি এ বিষয়ে আরও জেনে আপডেট জানাতে পারবো।’

সারওয়ার্দী বগুড়া গলফ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তার সাবেক স্ত্রীর ঘরের দুই ছেলে মেয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। পরবর্তীতে তিনি ফারজানা ব্রাউনিয়ার সঙ্গে দ্বিতীয় বিবাহে আবদ্ধ হন।

অনলাইনে এক টকশোতে সেনাবাহিনীকে নিয়ে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে একসময় আলোচনায় আসেন হাসান সারওয়ার্দী। এদিকে নারী কেলেঙ্কারিসহ সেনা শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের জন্য দেশের সব সেনানিবাসে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়েছিল।

নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি হিসেবে রানা প্লাজা ধসের পর উদ্ধারকাজের নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। ২৬ মার্চ ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ আয়োজনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।

এরপর তিনি আর্টডকের জিওসি ও ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট হন। এর আগে তিনি আনসার ও ভিডিপি এবং এসএসএফের মহাপরিচালক এবং সেনা গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবর/আরআর/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :