সংখ্যালঘুবিরোধী ও লুটতরাজে জড়িত অনেকেই মনোনয়ন পেয়েছেন: সুলতানা কামাল
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘুবিরোধী, দুর্নীতিবাজ ও লুটতরাজে যুক্ত এমন অনেকেই মনোনয়ন পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপে ‘নির্বাচনে সহিংসতা: উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। সভাটির আয়োজক বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ।
সুলতানা কামাল বলেন, অনেকেই মনোনয়ন পেয়েছেন অত্যন্ত স্পষ্টভাবে সংখ্যালঘুবিরোধী, হিন্দুবিরোধী, যারা দুর্নীতি করছেন, নানাভাবে লুটতরাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন।’
একটি সহিংস সমাজের সঙ্গে বাস করার কারণে প্রতিটি মানুষ সহিংসতার শিকার হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কেবল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা হয়, তা নয়। আমরা আসলে একটা সহিংস সমাজের মধ্যে বাস করছি। প্রতিটি মানুষ আজ সহিংসতার শিকার। কিন্তু যার শক্তি কম, যারা প্রতিবাদ কম করতে পারে, তাদের ওপর অত্যাচার অনেক বেশি হয়। কারণ, অত্যাচারী জানে সহিংসতা করলে সে পার পেয়ে যাবে। পার পেয়ে যায় বলে সংখ্যালঘু নির্যাতন আরও বেশি হয়।’ এছাড়াও শুধু নির্বাচন, পূজার সময় না, বছরের ৩৬৫ দিন ২৪ ঘণ্টা সবার নিরাপত্তার দাবি জানান তিনি।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘একটি মহল বলে যে, বিএনপি আমলে সাম্প্রদায়িকতা ছিল, আওয়ামী লীগ আমলেও আছে। সুতরাং এই গ্রুপকে বাদ দিয়ে একটা কিছু করতে হবে। তাহলে বিকল্প কোথায়? এখন আমাদের মন্দের ভালো আওয়ামী লীগ।’
আওয়ামী লীগকে মন্দের ভালো বলার কারণে সুলতানা কামাল বলেন, ‘মন্দের ভালো দিয়ে তো আমার কোনো লাভ হচ্ছে না। মন্দের ভালো নিয়ে যদি আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়, সেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অন্তত ১০ জন এমপি মনোনয়ন পেয়েছেন, যারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত।’ এসময় আওয়ামী লীগের পক্ষে আর কোনো দিনই রাষ্ট্রধর্ম সরানো সম্ভব হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের (সংখ্যালঘু) এখানে তো এখন ভোটও লাগছে না। আমাদের গুরুত্বও তো নাই। আপনি যে ৮ দশমিক ৯ ভাগ ভোট দেবেন, সেটাও তো প্রয়োজন হচ্ছে না। সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত এই সংস্কৃতির পরিবর্তন না হয়, ততক্ষণ এর সমাধান হবে না।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের জে এল ভৌমিকের সভাপতিত্বে এবং পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী (মানিক), প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি সোহরাব হাসান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন আল মাহাতাবসহ অনেকে।
(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/টিএ/ইএস)