বাবা ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার পর পরিচয় পাল্টে ৩০ বছর, অবশেষে ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:৪৫

১৯৯৩ সালের ১৩ জুলাই। কেরাণীগঞ্জের মালোপাড়া বারিশুর বাজারে একটি মুদি দোকানে বাবা ও দুই ছেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর গা ঢাকা দেন ঘটনার হোতা মো. আরিফ। পাল্টে ফেলেন পরিচয় ও পেশা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ৩০ বছর পর ধরা পড়লেন র‌্যাবের হাতে।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরিফ ও তার চার সহযোগীকে ওই ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ভুক্তভোগী শরিফ কেরাণীগঞ্জের মালোপাড়া বারিশুর বাজারে মুদিপণ্যের ব্যবসা করতেন। গুদারাঘাট সংলগ্ন দোকান হওয়ায় শরিফ প্রায় সময়ই মধ্যরাত পর্যন্ত বেচা-কেনা করতেন। তার দুই ছেলে খোকন (তৎকালীন বয়স ৯ বছর) ও শাহজাহান (তৎকালীন বয়স ১২ বছর) নিয়মিত শরিফের জন্য রাতের খাবার বাসা থেকে নিয়ে আসত। তারা তার বাবার সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে পড়াশোনা করে দোকানেই ঘুমিয়ে পড়ত। ঘটনার দিন শরিফ বেচা-কেনা শেষ করে দোকান বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেসময় দোকানের পেছনের অংশে তার দুই ছেলে ঘুমাচ্ছিল। তখন শরিফের দোকানে আরিফ এবং তার সহযোগীরা এসে সিগারেট ও অন্যান্য মালামাল জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিলে বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তী সময়ে আরিফ ও তার সহযোগীরা দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে শরিফুল বাধা দেন। এসময় আরিফ ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। চিৎকার শুনে দোকানের পেছনের অংশে ঘুমিয়ে থাকা তার দুই সন্তান বাবাকে বাঁচাতে আরিফ ও তার সহযোগীদের হাতে-পায়ে ধরে আকুতি-মিনতি করতে থাকেন। কিন্তু তারা শরিফের দুই সন্তানকেও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। তাদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর আরিফ বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এসে নাম ও পরিচয় গোপন করে সরিফুল ইসলাম নামে একটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে ঢেউটিন ফ্যাক্টরিতে কাজ নেন। তার ধারণা ছিল ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করলে গ্রেপ্তার এড়াতে পারবেন। পরে ঢেউটিন ফ্যাক্টরিটি বন্ধ হয়ে গেলে আরিফ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শরিফুল পরিচয়ে মুদি ও লন্ড্রি দোকানের ব্যবসা করে আসছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

র‌্যাব জানায়, ওই হত্যাকাণ্ডের পর কেরানীগঞ্জ থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ১৯৯৪ সালের ২৬ অগাস্ট পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা পড়ে। এক দশক পর ২০০৪ সালের ২১ জুলাই আরিফসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পরে রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদনে সব প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ওই আদেশ বহাল রাখেন বিচারক। মামলার অপর আসামিরা হলেন- শফিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম নজু, মিস্টার ও মো. মাসুদ। এর মধ্যে শফিকুল ও নজরুল কারাগারে আছেন। বিচার চলাকালে মারা গেছেন মিস্টার। আর এখনও পলাতক রয়েছেন মাসুদ।

(ঢাকাটাইমস/০১ডিসেম্বর/এসএম/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

নারায়ণগঞ্জে নারী সাংবাদিককে শ্লীলতাহানির অভিযোগে বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

নাশকতার ঘটনায় সারাদেশে ২৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব

ছাত্রলীগ মারলে ৫ হাজার, পুলিশ মারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা ছিল: ডিবি

সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ২২৮

কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগসাজশ থাকতে পারে: সিটিটিসি

নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো দুই নারী জঙ্গি গ্রেপ্তার

দোয়ারাবাজারে ৫৩৫০ কেজি ভারতীয় চিনিসহ বাবা-ছেলে গ্রেপ্তার

সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরানসহ সাতজনের নামে মামলা, সরকারি পাঁচ কর্মকর্তাও আসামি

বিপুল সম্পদ নিয়ে যা বলছেন `চারশ কোটির পিয়ন’ জাহাঙ্গীর

নায়িকার গাড়িচালক থেকে প্রধানমন্ত্রীর পিয়ন, বিপুল সম্পত্তির মালিক বনে জাহাঙ্গীর চেয়েছেন সাংসদ হতে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :