দেশকে স্যাংশনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ
দেশে জনগণের কোনো অধিকারই নেই বলে মন্তব্য করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, দেশকে সরকার স্যাংশনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
রবিবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ের সামনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এ মন্তব্য করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, বিচার পাওয়া ও ভোটের অধিকারসহ দেশে আজ জনগণের কোনো অধিকারই নেই। সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
নেতারা আরও বলেন, যাদের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়ে রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠা করলো, আজ সেই আওয়ামী লীগই মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এ থেকে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না।
এই সরকার দেশের মানুষের মানবাধিকার বঞ্চিত করে বারবার ক্ষমতায় থাকছে উল্লেখ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, মানুষের অধিকারটাই হলো মানবাধিকার। সেই জায়গা থেকে আমরা বঞ্চিত।
নাগরিক ঐক্যেরে সাধারণ সম্পদক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, কারাগারে নিয়ে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করা যাবে না। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। দেশে যে কবি তার কবিতা লেখার অধিকার নেই, যে সাহিত্যিক তার লেখার অধিকার নেই। দেশকে একটা নরকভূমিতে পরিণত করেছে আজকের ক্ষমতাসীনরা।
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘জনগণের মানবাধিকার রক্ষায় মানবাধিকার কমিশন তৈরি করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে মানুষকে গুম, খুন ও অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এসব নিয়ে এই মানবাধিকার কমিশন কোনো কথা বলে না। এই মানবাধিকার কমিশন অন্ধ, কানা ও লুলা। তারা কথা বলতে জানে না। তাদের পদত্যাগের আহ্বান জানাই।’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম বলেন, মানবাধিকার কমিশনের কাজ করার কোনো ক্ষমতা নেই। মানবাধিকার দিবসে কমিশন জনগণের পক্ষে একটি কথাও বলেনি। এই লজ্জা-ঘৃণার কথা আজকে আলোচনা করতে হচ্ছে।
দেশকে সরকার স্যাংশনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিহীন একটা কারাগারে পরিণত হতে যাচ্ছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, প্রতিদিন নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে, কিন্তু মানবাধিকার কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত করার ক্ষমতা রাখে না। এই কমিশন কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এই ধরনের কমিশন দেশের মানুষ দেখতে চায় না।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানবাধিকার কমিশন অনেকগুলো বছর ধরে কাজ করে। কিন্তু কী কাজ করে তারা? নেপাল, ভুটানের মতো দেশ মানবাধিকারে এ শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। আমরা এতগুলো বছর ধরে বি শ্রেণি থেকে উপরে যেতে পারি না। রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেয়, গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। কিন্তু মানবাধিকার কমিশন কী করে।
তিনি বলেন, লুটপাটের মহোৎসব চলছে এ দেশে। এমপি-মন্ত্রী-মেয়রদের আয় বেড়েছে। কিন্তু গরিব মানুষের আয় বাড়েনি। তাদের জন্য পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জাপা আসন ভাগাভাগি করতে চায়। মেনন, ইনু নৌকা মার্কা চায়। আগামী ৭ জানুয়ারি কিসের নির্বাচন হবে! সাজানো ফলাফল দেখানো হবে ৭ জানুয়ারি।
(ঢাকাটাইমস/১০ডিসেম্বর/টিআই/এআর)