রমজানে দ্রব্যমূল্যে কারসাজি করলে জেলে পাঠাতে ব্যবস্থা নেবে এফবিসিসিআই

​​​​​​​নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৫ | প্রকাশিত : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:৫০

আসন্ন রমজানে ব্যবসায়ীদের কারসাজি ঠেকাতে সরকারকে সহযোগিতায় কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নেতারা। অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরিয়ে দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

সোমবার এক মতবিনিময় সভায় সংগঠনের নেতারা এসব বলেন। এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে এ সভায় আসন্ন রোজায় নিত্যপণ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা করেন ব্যবসায়ী নেতারা।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘যারা অনৈতিকভাবে বাজারে সংকট তৈরি করবে আমরা তাদের সঙ্গে নেই। ব্যবসায়ীদের কেউ অসাধু বলুক, সিন্ডিকেট করা হচ্ছে এমন কোনো কথা উঠুক, তা আমরা শুনতে চাই না। আমরা চাই ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করুক। কোনো সমস্যা হলে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু আমাদের কোনো বদনাম হোক তা চাই না।’

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীদের কথা শুনেছি। এলসি খোলা নিয়ে জটিলতা আছে। এটা নিয়ে আমরা কথা বলছি। প্রয়োজনে আরও কথা বলব। মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে কথা উঠেছে। কিন্তু আমি মনে করি এটার আগে যেসব মন্ত্রণালয় বাজারের সঙ্গে সম্পর্কিত তাদের মধ্যে সমন্বয় হওয়াটা বেশি জরুরি।’

সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ‘কাজ না হলে অসাধু ব্যবসায়ীদের জেলে পাঠাতে সহযোগিতা করবে এফবিসিসিআই।’

বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তার অজুহাতে খোলা তেল বাজার থেকে একেবারে উঠিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অথচ এই ব্যবসার সঙ্গে অনেক মানুষ জড়িত।’ ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোতে সরকারের তদারকি বাড়ালে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী।

ভোজ্যতেল মিলমালিকদের সংগঠনের সভাপতি ও সিটি গ্রুপের পরামর্শক অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘খোলা তেলের ব্যাপারে যে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি তা হলো- এই তেলে ভিটামিন ‘এ’ থাকে কি না। আমাদের কাছে মনে হয় খোলা তেলেও ভিটামিন ‘এ’ নিশ্চিত করা সম্ভব। তবে এ ব্যাপারে সরকার আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেবে আমরা সেভাবে চলব।’ডলার সংকটের সময়ে ভোগ্যপণ্যের জন্য আলাদা করে ডলার সংরক্ষণ করা ও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান মিল মালিকদের এই নেতা।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, ‘রমজানের আগে মুরগির দাম একটু একটু বাড়ানো হচ্ছে। এলপিজি আমদানিতে সমস্যা হচ্ছে। অথচ রেস্তোরাঁ খাতে প্রচুর এলপিজির প্রয়োজন। বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করলে সভা করতে কর‍তে লোপাট করা শেষ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। আর কোনো আমলা দিয়ে নীতি নির্ধারণ করা যাবে না। ব্যবসায়ীরা নীতি নির্ধারণ করবে। তাহলে বাজারে কোনো সমস্যা থাকবে না।’

বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি বিকাশ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বুট ও অ্যাংকর ডালের দাম বাড়ছে। এ খাতের ছোট আমদানিকারকেরা এখন আর টিকে নেই। সব বড় আমদানিকারকদের হাতে। সুতরাং, এখনই এই বাজারে নজরদারি বাড়তে হবে।’

তাজা ফল আমদানিকারকদের সংগঠনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘রমজানে খেজুর গুরুত্বপূর্ণ। তিউনিসিয়া-আলজেরিয়া থেকে হিমায়িত কন্টেইনারে খেজুর আনতে গেলে দুই মাস সময় লাগে। কিন্তু খেজুরের শুল্ক কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। এমনও হয়েছে আমি গিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে আসার পরে শুল্কায়ন আরও বাড়ানো হয়েছে।’

বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, ‘বিভিন্ন বাজারের অনেক ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য নন। তাদেরকে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসা যাচ্ছে না।’ তবে কাঁচাবাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই বলে জোরালো দাবি জানান তিনি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের নীতিনৈতিকতা নিয়ে ব্যবসা করতে হবে। তাহলে আমাদের আর অভিযানের প্রয়োজন পড়বে না।’

এছাড়াও সভায় বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নরুল কবির, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বশির উদ্দিন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের উপপরিচালক মাহমুদুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন। ব্যবসায়ীরা ইতিবাচক মানসিকতায় থাকলে বাজারে কোনো বড় সংকট হবে না বলে প্রত্যাশা করেন বক্তারা।

(ঢাকাটাইমস/১৮ডিসেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :