কুমিল্লা-১ আসন: নৌকা সবুরের ও ঈগল নাঈমের ভোটযুদ্ধ হবে হাড্ডাহাড্ডি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন আ.লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন (আইইবি) দুবারের প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ব্যারিস্টার নাঈম হাসান।
দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া নাঈম হাসান কুমিল্লা উত্তর জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মরহুম হাসান জামিল সাত্তারের পুত্র। এলাকায় তরুণ হিসেবে বেশ জনপ্রিয় তিনি। ফলে প্রথমবারের মতো ভোটযুদ্ধে অংশ নেওয়া এই প্রার্থীর লড়াইটা হবে আ.লীগ প্রার্থীর।
অন্যদিকে পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী মু. আমির হোসেন ভূঁইয়াও। আছেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, তৃণমূল বিএনপি, সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, ইসলামী ঐক্যজোট প্রার্থীরাও। তবে মূল লড়াইটা হবে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের।
ভোটের দিন মূল লড়াইটা হবে ঈগল ও নৌকার প্রার্থীর মাঝে। ঈগলের তরুণ প্রার্থী ও নৌকার অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ প্রার্থীর মূল লড়াইটা হবে বলছেন স্থানীয় ভোটাররা। ফলে এবারের নির্বাচনে ইঞ্জি. আবদুস সবুর এবং ব্যারিস্টার নাঈম হাসান ভোটের মাঠে ভিআইপি হয়ে উঠেছেন।
এই আসনে দলীয় প্রার্থীর ছড়াছড়ি হলেও ভোটাররা চিনেন না দল ও একাধিক প্রার্থীকে। দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় অপরিচিত দলের প্রার্থী বেড়েছে এবারের নির্বাচনে।
বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বা খুব সহজেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয়ী হওয়ার সুযোগ নেই। একই দলের নেতা জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ব্যারিস্টার নাঈম হাসান ভোটের মাঠে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ফলে নৌকার প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুরের ভোটযুদ্ধে জয়লাভ করতে হলে টেক্কা দিতে হবে নাঈমকে।
আলোচনা আছে ভোটের দিন আবদুস সবুর ও নাঈম হাসানের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। আর এ নিয়ে পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সচেতন ভোটারদের। এসব বিষয় নিয়ে সর্বত্র চলছে নানা আলোচনা। অপরদিকে তিতাসের ভোটাররা সুযোগে ভোট দিতে চান ঘরের সন্তান সাবেক এমপি আমির হোসেন ভূঁইয়াকে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আবদুস সবুরের সমর্থকদের দাবি, আবদুস সবুর এমপি হলে মন্ত্রীও করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মন্ত্রী হলে কুমিল্লা-১ আসনে নৌকার ভোট ব্যাংকের মাধ্যমে ত্যাগী এই রাজনৈতিক নেতার হাত ধরে এই দুই উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়নের রোল মডেল হবে। ৭ জানুয়ারি নৌকার পক্ষে বিপুল ভোটে বিপ্লব ঘটিয়ে সংসদে পাঠাবে ইঞ্জি. মো. আবদুস সবুরকে।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার নাঈম হাসান সমর্থকদের দাবি, বৃহত্তর দাউদকান্দির কুমিল্লা-২ আসনে জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) ও আ. লীগের (নৌকা) থেকে দুবার সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বেশ জনপ্রিয় লাভ করেন মরহুম হাসান জামিল সাত্তার। তিনি রাজনৈতিক অঙ্গণের পাশাপাশি একজন দানবীর হিসেবে বেশ পরিচিত। তারই পুত্র দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। এবং বাবার রেখে যাওয়া স্বপ্ন ও প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যারিস্টার নাঈম হাসান ভোট যুদ্ধের লড়াইয়ে নেমেছেন। এবার নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত হলে সাধারণ ভোটারদের ভালোবাসায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার নাঈম হাসান জয়লাভ করবেন।
গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) প্রতীকের ব্যারিস্টার নাঈম হাসান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকতে পারবে। নির্বাচনকে তিনি উন্মুক্ত করেছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কারণে। দলের সাধারণ সম্পাদকও বলেছেন, নেতাকর্মীরা দলের প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্যও কাজ করতে পারবেন। আমার মনোনয়ন দুইবার বাতিল হয়েছিল। এতে দাউদকান্দি-তিতাসের জনগণ খুব দুঃখ পান। পরে হাইকোর্টে ফিরে পাওয়ায় তারা খুব খুশি হয়েছেন।
অপরদিকে একই দিনে এক অনুষ্ঠানে নৌকার প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুর সবুর বলেছেন, যারা সরকারি পয়সায় চলেন, সরকারি বাসায় থাকেন, নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। নৌকা মার্কা আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছে। এই নৌকার কারণে বঙ্গবন্ধুর কন্যা নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেলে সারা বিশ্বের বিস্ময়ে পরিণত হয়েছে, এই নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান করা, এই নৌকাকে প্রতিরোধ করার সাধ্য কারো নাই।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এই নেতা আরও বলেন, নৌকাকে যারা ফোটা করার জন্য বলে তাদেরকে ভোটের মাধ্যমে জবাব দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। নৌকার উপর আঘাত আনলে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। তাদেরকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করতে হবে। উন্নয়নের মার্কা নৌকা মার্কা, বারবার দরকার শেখ হাসিনা সরকার।
(ঢাকাটাইমস/৩০ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/জেডএম)

মন্তব্য করুন