গাজায় ত্রাণ পাঠানোর ঘোষণা বাইডেনের 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪, ১২:২৫ | প্রকাশিত : ০২ মার্চ ২০২৪, ১১:৫১

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রথমবারের মতো শুক্রবার গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ পাঠানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, যা মার্কিন সামরিক বিমান থেকে (এয়ারড্রপ) উপত্যকায় ফেলা হবে। ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার একদিন পর শুক্রবার বাইডেনের এই ঘোষণা এলো। জর্ডান এবং ফ্রান্সসহ অন্যান্য দেশ ইতিমধ্যে গাজায় ত্রাণের এয়ারড্রপ করেছে।খবর রয়টার্সের।

বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘গাজায় প্রবাহিত সহায়তা প্রায় যথেষ্ট নয়। আমাদের আরও কিছু করতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র আরও করবে।’ তবে কখন থেকে এই ত্রাণ বিতরণ শুরু হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি বাইডেন।

তবে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এয়ারড্রপগুলো এই সপ্তাহের শেষের দিকে শুরু হতে পারে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, এয়ারড্রপগুলো একটি টেকসই প্রচেষ্টা হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, ত্রাণের প্রথম চালানটি সম্ভবত সামরিক এমআরই ( যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাসদস্যদের জন্য রান্না করা খাবার), যা খাওয়ার সহজেই খাওয়ার উপযুক্ত এবং পরবর্তীতে আরও ত্রাণ সরবরাহ পাঠানো হবে।

গাজায় ত্রাণের এয়ারড্রপ

বাইডেন সাংবাদিকদের আরও বলেছেন, এয়ারড্রপ ছাড়াও গাজায় প্রচুর পরিমাণে সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি সামুদ্রিক করিডোরের সম্ভাবনাও দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রসঙ্গত, গাজা উপত্যকায় খাদ্যসহ অন্যান্য ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। এতে গাজায় অন্তত ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

এ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থার (ওসিএইচএ) উপপ্রধান রমেশ রাজাসিংহাম নিরাপত্তা পরিষদে বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারির শেষ সময়ে এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, গাজার জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ ৫ লাখ ৭৬ হাজার—দুর্ভিক্ষ থেকে মাত্র এক কদম দূরে।’

গাজার খাদ্য সংকটের ফলাফল উল্লেখ করতে গিয়ে রমেশ বলেছেন, গাজার প্রতি ৬ শিশুর মধ্যে একজন তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। গাজায় ২৩ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য যে পরিমাণ খাদ্য রয়েছে তা নিতান্তই অপ্রতুল। তারপরও কিছু করা হচ্ছে না। আমরা আশঙ্কা করছি, গাজার দুর্ভিক্ষ এড়ানোর আর কোনো উপায় নেই বললেই চলে। এই সংঘর্ষে আরও বহু মানুষ হতাহত হবে।

রাজাসিংহাম জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাধার কারণে জাতিসংঘ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো গাজায় ন্যূনতম ত্রাণ সরবরাহ করতে অপ্রতিরোধ্য বাধার সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে—ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া, চলাচল ও যোগাযোগের ওপর বিধিনিষেধ, কঠোর যাচাই-বাছাই পদ্ধতি, যুদ্ধ, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ও অবিস্ফোরিত অস্ত্র অন্যতম কারণ।

এদিকে বৃহস্পতিবার ভোরে গাজা সিটির দক্ষিণে আল-নাবলুসি গোলচত্বর এলাকার কাছে একটি ত্রাণ বিতরণ পয়েন্টে অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ৭৬০ জন। নিহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর আনাদোলুর।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, একটি মিলিটারি চেকপয়েন্টের কাছে ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো পৌঁছালে হাজার হাজার মানুষ ট্রাকের দিকে ছুটে আসেন। ঘিরে ফেলে এবং সরবরাহ করা ত্রাণসামগ্রী লুট করে। এ সময় নিরাপত্তার স্বার্থে ইসরায়েলি সৈন্যরা ভিড় লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তবে সৈন্যদের দিকে যারা অগ্রসর হচ্ছিল এমন ফিলিস্তিনিদের শুধু পায়ে গুলি চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনী আরও বলেছে, এ সময় ধাক্কাধাক্কি ও পদদলিত হয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে।

(ঢাকাটাইমস/০২মার্চ/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :