ঝিনাইদহে শহরে গরুর খামার, দুর্গন্ধ ও ডেঙ্গু আতঙ্কে এলাকাবাসী

শাহানুর আলম, ঝিনাইদহ
  প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০২৪, ১৫:৪৫
অ- অ+

ঝিনাইদহ শহরের আবাসিক এলাকায় যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে গরুর খামার। গোবরের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী। বায়ুদূষণসহ নানা রকম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। এন তারা ডেঙ্গ রোগের আতঙ্কে আছেন।

পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উপশহর পাড়ার অবস্থা এমনই যে, দুর্গন্ধের কারণে ওই এলাকায় কেউ বাসা ভাড়া নিতে চায় না। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে অধিকাংশ ভাড়াযোগ্য বাড়ি খালি থাকছে। অনেকে আবার নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র ভাড়া বাসায় বসবাস করছে।

যারা এলাকায় অবস্থান করছেন, তারা গোবর-চুনা ও খামারের অপরিচ্ছন্ন ও র্দুগন্ধময় পরিবেশে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। দুর্গন্ধে ঘরে বসে খাওয়ার মতো পরিবেশও নেই।

স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবেশদূষণ ও দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনে বারবার অভিযোগ করে, এমনকি খামার মালিকদের দ্বারস্থ হয়েও কোনো ফল পাননি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই এলাকার বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাসের শ্বশুর জাহাঙ্গীর নিয়মনীতি না মেনে পরিবেশদূষণ করে গরুর খামার স্থাপন করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, জাহাঙ্গীর তার নিজ জমিতে নারায়ণ বিশ্বাসের বাড়িসংলগ্ন দক্ষিণ পাশে গরুর একটি খামার করেন। এর আশপাশে মলমূত্র ও গোবর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। ওই গোবর, ময়লা-আবর্জনা খামারের পাশেই কোনো রকম গর্ত করে ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় অবস্থিত খামারের মলমূত্র, পানিনিষ্কাশন ও বর্জ্য অপসারণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। খামারের চারপাশে বসতবাড়ি। সামান্য বৃষ্টিপাতে মলমূত্র ও গোবর পানির সাথে মিশে পচা দুর্গন্ধ ছড়ানোসহ মশা-মাছির উপদ্রব বাড়াচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই গরুর খামার। গরুর গোবর ও মলমূত্র থেকে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। বসবাস করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’

খামারের পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ‘দুর্গন্ধে আমাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে বসবাস করতে পারছে না। নোংরা পরিবেশের কারণে মশার উপদ্রব বেড়েছে। ডেঙ্গু বিস্তারের ভয়ে আছি। আমরা এর স্থায়ী প্রতিকার চাই।’

ওই এলাকার বাসিন্দা উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নারায়ণ বিশ্বাস। কিন্তু বাস করছেন অন্য জায়গায়। তিনি বলেন, ‘বহুদিন ধরে আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গরুর খামার ও গোবরের দুর্গন্ধে নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছি। এ বিষয়ে পৌরসভায় একাধিকবার অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা মেলেনি।’

এ ব্যাপারে কথা বলতে গরুর খামার মালিক জাহাঙ্গীরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে বিষয়টি তাকে অবগত করা হয়।

এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়রের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ব্যক্তিগত সহকারী জানান, তিনি ঢাকায় আছেন। এলাকায় ফিরে আসার পর কথা বলবেন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মুন্তাছির রহমান জানান, জনগণের ভোগান্তি ও দুর্ভোগ সৃষ্টি করে আবাসিক এলাকায় গবাদিপশু পালনের কোনো সুযোগ নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজিত কুমার মণ্ডল বলেন, ‘এটা দেখার কাজ স্থানীয় সরকারের। আবাসিক এলাকায় গরু পালন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, তবুও কেউ যদি গরু পালন করতে চায় সেক্ষেত্রে জনগণের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেটি বিবেচনা করতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শিগগিরই তারেক রহমান দেশে ফিরে নেতৃত্ব দিবেন: মোস্তফা জামান 
মিরপুরের শ্যামল পল্লী বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
শ্রীপুরে চায়না-৩ জাতের লিচুতে চাষির মুখে হাসি
নামাজের শিক্ষা ব্যক্তি, পরিবার ও রাষ্ট্র গঠনে আত্মনিয়োগ করতে হবে: জামায়াত আমির
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা