শহীদ মুগ্ধ’র নামে পানি কারখানা করবে এডাস্ট, দিল্লীর দাসত্ব থেকে মুক্তির আহ্বান বক্তাদের

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে শহীদ মীর মুগ্ধ’র স্মরণে রাজধানীর দিয়াবাড়িতে আয়োজন করা হয় দিনব্যাপী আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ ও দোয়া মাহফিল। অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এডাস্ট) আয়োজিত ‘জুলাই স্মৃতিতে অমলিন আমরা’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে শহীদ মুগ্ধকে ‘গণতন্ত্রের শহীদ’ হিসেবে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহীদ মুগ্ধ’র বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল, কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৭৫ সালে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সেই গণতন্ত্র আবার নিঃশেষ করা হয়। যে শেখ মুজিব বাকশালের মাধ্যমে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিলেন, তিনি কখনও জাতির পিতা হতে পারেন না। তার কন্যা শেখ হাসিনা আজ স্বৈরাচারের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।'
তিনি বলেন, 'ওয়ান ইলেভেনের নামে যারা দেশকে দিল্লীর পায়ের নিচে ঠেলে দিয়েছে, তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। জুলাইকে ফিরিয়ে দিতে হবে প্রকৃত ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ হাতে।'
শহীদ মুগ্ধ’র নামে পানি কারখানা স্থাপনের ঘোষণা:
অনুষ্ঠানে এডাস্ট বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শামসুল আলম লিটন ঘোষণা দেন, শহীদ মুগ্ধ’র নামে একটি মিনারেল ওয়াটার কারখানা স্থাপন করা হবে। সেখান থেকে উৎপাদিত পানি জনগণের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
তিনি বলেন, 'মুগ্ধ তার জীবন দিয়ে এই দেশকে স্বৈরাচারের দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছে। তার আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না। আওয়ামী লীগ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। জুলাই মাসেই ৫০টিরও বেশি জেলায় শিক্ষার্থী খুন হয়েছে। এগুলো বিচার করতে হবে।'
তিনি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়ে বলেন, 'ঢাকায় অন্তত ১০টি ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। প্রতিটি জেলায়ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে হয়তো গোপালগঞ্জের ঘটনা আর ঘটতো না।'
স্মরণসভায় এডাস্ট এসডিআই পরিচালক ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডা. আ. ন. ম. এহসানুল হক মিলন বলেন, 'গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রমাণ করে, দেশে এখনও ফ্যাসিবাদ বহাল রয়েছে। এই ফ্যাসিবাদ রুখতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।'
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন এডাস্ট বিওটি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সিরাজুল হক চৌধুরী, সদস্য-সচিব মো. কামরুজ্জামান লিটু, সদস্য কামরুন নেহার, চীফ একাডেমিক অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. শহীদুল ইসলাম, গবেষক ও শিক্ষক একেএম জাকির হোসেন, জার্নালিজম বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর মো. জুবায়ের আহমেদ প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে এডাস্ট শিক্ষার্থীরা মোমবাতি প্রজ্বলন, গ্রাফিতি অঙ্কন ও স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে জুলাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, রেজিস্ট্রার ও শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা শহীদ মুগ্ধকে স্মরণ করে বলেন, 'মুগ্ধ একটি প্রতীক— যে প্রতীকের নামেই গণতন্ত্র আবার ফিরে আসবে।'
(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/এসএস)

মন্তব্য করুন