অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে এবি পার্টির ৭ দফা প্রস্তাবনা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পাটি)। একইসঙ্গে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে তৎপরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন নিয়ে ৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গণহত্যার দায়ে রবিবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে এবি পার্টি। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন ও সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির নেতারা বলেন, ‘সরকার প্রতিদিন দলীয় সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করছে। এখন পর্যন্ত ৩২ জনকে হত্যা করার খবর আমরা পেয়েছি। এই গণহত্যা আর চলতে পারে না। ছাত্র-জনতার বুকে আর একটি গুলিও বরদাস্ত করা হবে না।
এবি পার্টির আহ্বায়ক ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘দেশে চলমান দখলদার, গণহত্যাকারী, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আপামর ছাত্র-জনতার যে ঐতিহাসিক সফল গণঅভ্যুত্থান হতে চলেছে, তার প্রেক্ষিতে এবি পার্টির পক্ষ থেকে নিম্ন লিখিত প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরা হলো।’
১. শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন স্বৈরাচারী সরকারের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। অনির্বাচিত সংসদ ভেঙে দিয়ে স্বৈরাচারী শাসকের আজ্ঞাবহ রাষ্ট্রপতিকেও পদত্যাগ করতে হবে।
২. স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় এমন সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে অনূর্ধ্ব ২০ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে যার মেয়াদ এক বছরের বেশি হতে পারবে না।
৩. জুলাই গণহত্যা থেকে শুরু করে গত ১৬ বছরে সংঘটিত সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারের জন্য গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে আহত/নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং/অথবা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে জাতিসংঘ থেকে শুরু করে আমাদের উন্নয়ন অংশীজন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সাহায্য নিতে হবে। যেসব ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদেরকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৪. তদন্ত সাপেক্ষে গত ১৬ বছরে বিদেশে অর্থ পাচারকারী সকল বাংলাদেশির ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সব সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
৫. গত ১৭ বছরে দায়ের করা সকল রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আয়নাঘর থেকে শুরু করে গোপন ও প্রকাশ্য বন্দিশালা থেকে রাজবন্দিদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
৬. গত ১৬ বছরে রাষ্ট্রের উন্নয়ন বাজেট থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে মেগা-লুটপাটকৃত অর্থের হিসাব, ব্যাংক এবং শেয়ারবাজার লুণ্ঠনের সঙ্গে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৭. আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যেসব কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন রাগ/বিরাগ/অনুরাগের বশবর্তী হয়ে, তাদেরকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব এম আমজাদ খান, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, আব্দুল হালিম খোকন, গাজী নাসির, যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান ব্যাপারী, মশিউর রহমান মিলু, আমেনা বেগম, রুনা হোসাইন, ফেরদৌসী আক্তার অপি, রিপন মাহমুদসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
(ঢাকাটাইমস/০৪আগস্ট/জেবি/এসআইএস)