রূপগঞ্জে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে গুলি, যুবদল কর্মী নিহত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে গুলিবর্ষণের ঘটনায় মামুন হোসেন (৩৫) নামে এক যুবদল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, যুবদল কর্মী মামুন হোসেন ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল হোসেনের ছোট ভাই। তিনি পেশায় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী।
এসময় এলাকাবাসী উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন খোকাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
এদিকে, স্থানীয় লোকজন ও যুবদল নেতা-কর্মীদের হাতে আটক ছাত্রলীগের ওই সাবেক নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম গুলি ছুড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খোকা জায়েদুলের বন্ধু।
অভিযোগ অস্বীকার করে জায়েদুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি শুনেছি, ছাত্রলীগের খোকাকে লোকজন ধরছিল। সেখানে গোলাগুলি হইছে, কিন্তু আমি সেখানে ছিলাম না। আমি বাসায় ছিলাম।”
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন কাদের সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছিলেন উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন খোকা। মঙ্গলবার বিকালে ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদলের লোকজনসহ স্থানীয় এলাকাবাসী তাকে আটক করে।”
তিনি আরও বলেন, “খোকাকে আটকের খবর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবের ভাতিজা জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক জায়েদুল ইসলাম বাবু জানতে পেরে তাকে ছাড়িয়ে নিতে পিস্তল দিয়ে গুলি বর্ষণ করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবসায়ী মামুন। এলাকাবাসী জড়ো হয়ে ধাওয়া দিলে পালিয়ে যান বাবু। উত্তেজিত এলাকাবাসী ছাত্রলীগ নেতা খোকাকে গণধোলাই দিয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।”
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত ব্যবসায়ী মামুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রাতে নিহতের বড় ভাই বাদল বাদি হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী ইসলাম বলেন, “স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক ওই ছাত্রলীগ নেতা সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুলের বন্ধু। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে আটকের পর জায়েদুল সেখানে লোকজন নিয়ে এসে গুলি ছুড়েছেন বলে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে। ঘটনার পর সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “ওই ছাত্রলীগ নেতাকে স্থানীয় লোকজন গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তার পা ভেঙে গেছে। চিকিৎসার জন্য তাকে পঙ্গু হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১১জুন/এলএম

মন্তব্য করুন