আবু সাঈদ হত্যা: ৩০ আসামির বিচার শুরু

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের মামলায় ৩০ আসামির বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন— অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
এর আগে ৩০ জুলাই পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে নিয়োগপ্রাপ্ত স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীরা মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। ওই দিনই অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য ছিল।
এদিন পলাতকদের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে শুনানি করেন চার স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী। এর মধ্যে পাঁচজনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সুজাত মিয়া, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ। এছাড়া ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন গাজী এমএইচ তামিম, মিজানুল ইসলাম, মঈনুল করিম ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
গত ২৮ জুলাই এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল আদেশের জন্য ৬ আগস্ট দিন ধার্য করে। ওই দিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ শুনানি করেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী শুনানিতে মামলার পটভূমি ও আসামিদের ভূমিকা তুলে ধরা হয়।
এ মামলায় ২৪ জন আসামি এখনো পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও আদালতে হাজির না হওয়ায় পলাতক হিসেবেই বিচার চলবে। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে তাদের পক্ষে একজন করে মোট চারজন স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে গ্রেপ্তারকৃত ছয় আসামির মধ্যে দুজন এখনো আইনজীবী নিয়োগ না দেওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তাদের ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন।
এর আগে ১৩ জুলাই মামলার আরেক ধারায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি রাসেল ও পারভেজকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি পলাতকদের ধরতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশেরও নির্দেশ দেয় আদালত।
৩০ জুন মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল এবং একইসঙ্গে পলাতকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর আগে ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
এ মামলায় মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন বেরোবির সাবেক উপাচার্য ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনারও।
এদিকে একই দিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মামলায় তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী রিনা মুর্মু ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ।
(ঢাকাটাইমস/৬ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন