জাপানে একদিনেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার দুই রেকর্ড, হিটস্ট্রোক সতর্কতা জারি

জাপানে চলমান দাবদাহ নতুন মাত্রা নিয়েছে। মাত্র একদিনেই দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার দুটি রেকর্ড গড়েছে, যা দেশজুড়ে জনমনে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। গরম থেকে রক্ষায় জাপানের ৪৭টি প্রদেশের মধ্যে ৪৪টিতেই হিটস্ট্রোক সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ইসেসাকি শহরে তাপমাত্রা প্রথমে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং পরে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। এটি জাপানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড। পূর্বের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জাপানের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১৮৯৮ সাল থেকে আবহাওয়ার রেকর্ড রাখার ইতিহাসে গত মাস ছিল সবচেয়ে গরম। ওই মাসে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ২ দশমিক ৮৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
চরম গরমে রাজধানী টোকিওসহ অন্যান্য বড় শহরে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিয়োটো শহরের ইতিহাসে প্রথমবার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে, যা আগে কখনো ঘটেনি।
এই অবস্থায় কৃষি খাতেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ধান চাষে সমস্যা, কম বৃষ্টি ও পানি সংকট দেখা দিচ্ছে। পশ্চিম জাপানে মৌসুমি বৃষ্টিপাত তিন সপ্তাহ আগেই শেষ হয়ে গেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সবাইকে ঠান্ডা পরিবেশে থাকার, পর্যাপ্ত পানি পান করার ও রোদ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে জাপানের প্রকৃতি ও সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আসছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে দেশটির ঐতিহ্যবাহী চেরি ফুলের স্বাভাবিক ফোটার মৌসুম ব্যাহত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই শীত ও শরৎ যথেষ্ট ঠান্ডা না থাকায় ফুল আগেভাগে ফুটছে, আবার অনেক সময় ফুলই ফুটছে না।
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যদি এমনভাবে অব্যাহত থাকে, তাহলে জাপানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, কৃষি উৎপাদন ও জনস্বাস্থ্যে ভয়াবহ সংকট তৈরি হতে পারে।
(ঢাকাটাইমস/৬ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন