প্রধান উপদেষ্টা প্রতিশ্রুতি রেখেছেন: জামাল হায়দার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৩:৩৭| আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৪:০২
অ- অ+

ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে আগামী নির্বাচনের ঘোষণার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দার।

তিনি বলেন, ড. ইউনূস নির্বাচনের যে ঘোষণা দিয়েছেন সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে নেই। আশা করি দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সমাধান হবে।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে আমি সাংবাদিকদের বলেছিলাম যে, ৪/৫ দিনের মধ্যে সরকার নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন। প্রধান উপদেষ্টা সেদিন রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তার মনোভাব ব্যক্ত করেছিলেন। তবে আমার সে বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। অনেকেই কটাক্ষ করেছেন যে, প্রধান উপদেষ্টা কতকিছুই তো বলেন... ইত্যাদি। আল্লাহর অশেষ রহমতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস সে কথারই বাস্তবায়ন করেছেন। সেজন্য তাকে আবারও ধন্যবাদ।

বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইউনাইটেড লিবারেল পার্টির (ইউএলপি) আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইউএলপির চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মো. হুমায়ূন কবিরের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান মাস্টার এমএ মান্নান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবু হানিফ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসেন, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি শওকত আমিন, পিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মাহমুদ লিটন, ইউএলপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কামরুজ্জামান খান, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব কাজী ইমরুল কায়েস প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ইউএলপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের মধ্যে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের নাম ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি। এসময় মুনাজাত পরিচালনা করেন ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম।

মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, দেশের রাজনৈতিক কালচারে ঐক্যবদ্ধ থাকা বিভিন্ন কারণে হয়ে উঠে না। অনেকগুলো দল বহুধাবিভক্ত। এটি ভালো কথা নয়। ঐক্যের বিপরীতে বিভাজনের রাজনীতি বাংলাদেশকে গ্রাস করেছে। তবে আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে পথ চলতে চাই। ইউএলপি নামে নতুন দল খুবই ভালো উদ্যোগ। ৫ আগস্টের চেতনার মধ্য দিয়েই যাত্রা শুরু হলো। আরও ভালোভাবে এগিয়ে যাক এই প্রত্যাশা।

নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা নিয়ে তিনি আরো বলেন, আমাদের আত্মতুষ্টির কিছু নেই। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি জানান, আগামী শুক্রবার বিকেল তিনটায় বিএনপির সঙ্গে ১২ দলীয় জোটের মিটিং হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। যেকোনো মূল্যে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানান মোস্তফা জামাল হায়দার।

১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে একটি কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে রয়েছি। আজকে শেখ হাসিনা বিরোধী যে ঐক্য ছিলো তাতে ফাটল ধরানোর চক্রান্ত চলছে। আমরা বিভক্ত হলে ফ্যাসিবাদ আবারও ফিরে আসবে। ফলে আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে। যেকোনো মূল্যে আওয়ামী লীগকে রুখে দিতে হবে। আমরা ফ্যাসিবাদ ও দখলদার মুক্ত সুশাসনের বাংলাদেশ চাই। দেশের মানুষ কিন্তু একটি ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়ে হুদা বলেন, অনুষ্ঠানে এমন লোক ছিলেন যাদের বেশিরভাগই ছিলো শেখ হাসিনার আশ্রয়ে। অথচ সেখানে ৬৯‘র গণআন্দোলনের নায়ক সেই মোস্তফা জামাল হায়দারকে জায়গা দেওয়া হয় নাই। আমি ধিক্কার জানাই। আমাদের সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে আমরা গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ পেয়েছি। নির্বাচনের ট্রেন লাইনে উঠে গেছে। তবে যারা সুযোগ পেলে দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাস পাল্টে দিবেন। এখন প্রশ্ন- আপনারা কী দেশের ইতিহাসও পাল্টে দেবেন?

সভাপতির বক্তব্যে ইউএলপির চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, শেখ স্বৈরশাসনের নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছি কিন্তু রাজপথ ছেড়ে যাইনি। হামলার শিকার হয়েছি, জেল খেটেছি তবুও বিএনপি ও ১২ দলীয় জোটের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম এবং আছি, আগামীতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ্।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলাম তবে ফ্যাসিবাদ পুরোপুরি দূর হয়নি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীতে একটি সুন্দর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হবে। আমরা ইউএলপি ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো।

অন্য বক্তারা বলেন, দেশবিরোধী যারাই ষড়যন্ত্র করবে তাদের পরিণতি হবে শেখ হাসিনার মতো। অতএব সবাই সাবধান। আগে আওয়ামী লীগ লুটপাট করতো এখন অন্যরা লুটপাট করছে। এটা চলতে দেওয়া যায় না। যারা একাত্তর সালে লড়াই করেছে, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে লড়াই করে শহীদ হয়েছেন তাদের প্রত্যাশা পূরণে দেশে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। না হলে শহীদের রক্তের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৬আগস্ট/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
৪৫ তলার সমান উঁচু থেকে বাঞ্জি জাম্পিং করে চমক দিলেন ড. জাকির নায়েক
শুক্রবার তারেক রহমানের সাথে বৈঠক করবে ১২দলীয় জোট
শিক্ষা উপকরণ বিতরণে গিনেস বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ
জুলাই অভ্যুত্থান বর্ষপূর্তির দিনে কক্সবাজার সফর, এনসিপির ৫ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা