সর্বোত্তম ব্যক্তিকে খুঁজছে সার্চ কমিটি

নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে সার্চ কমিটি সর্বোত্তম ব্যক্তিকেই খুঁজছে বলে জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে জমা দেয়া নাম থেকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পাওয়া ২০ জনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে এই কমিটির পক্ষ থেকে।
বৃহস্পতিবার বিকালে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটির তৃতীয় বৈঠক শেষে এ কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অতিরিক্ত সচিব আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া। বিকাল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত বৈঠক করে সার্চ কমিটি। এরপর কমিটির সিদ্ধান্ত জানান ওয়াদুদ ভুঁইয়া।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জানান, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি বিকাল পাঁচটায় আবার বৈঠকে বসবে সার্চ কমিটি। কমিটিকে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির আগে রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ জমা দিতে হবে। এর আগেই সুপারিশ দিকে সার্চ কমিটি আত্মবিশ্বাসী বলেও জানান অতিরিক্ত সচিব।
ওয়াদুদ ভুঁইয়া জানান, সংক্ষিপ্বত তালিকায় ২০ জনের নাম আছে তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে গোয়েন্দা বাহিনীকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাদের বদলে অন্যান্য বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল ওয়াদুদ। তিনি বলেন, ‘যোগ্যতার ভিত্তি সততা, দক্ষতা, দলনিরপেক্ষতা, কার্যক্ষমতা বিবেচনায় বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে সর্বোত্তম ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘পর্যালোচনার মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকা যখন আরও সংক্ষিপ্ত হবে, তখন আরও তথ্যাদি সংগ্রহ ও বিবেচনা করে এটা চূড়ান্ত করা হবে। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত, কমিটির টিআরও এবং সংবিধানে যে কথাগুলো বলা আছে সবকিছুর আলোকে কমিটি সব গুণাগুণ বিবেচনা করে সর্বোত্তম ব্যক্তিদের সুপারিশ করার প্রয়াস চলছে। এখন পর্যন্ত ২০ জনের তালিকাই পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’ সুপারিশকৃত ব্যক্তিদের নাম ও বিশিষ্টজনদের দেয়া পরামর্শের সারসংক্ষেপ প্রকাশের বিষয়টি কমিটি বিবেচনা করবে বলেও জানান তিনি।
আজকের সভার কাজ সম্পর্কে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘ইতিমধ্যে যে সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়েছে, মূলত তাদের ওপর আহরিত তথ্যাদি পর্যালোচনা করা হয়। এটি আরও পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে কমিটি মনে করে। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যে মতামত কমিটিকে দিয়েছেন, সেগুলো পর্যালোচনা করা হয় এবং একটি সারসংক্ষেপ খসড়া আমরা তৈরি করেছি। এটি চূড়ান্ত হওয়ার পর আমরা আশা করছি, সেটা আপনারা পেতে পারেন।’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, সংক্ষিপ্ত তালিকায় যে নামগুলো ছিল সেগুলোই আছে। কোনো নতুন নাম প্রস্তাব করা হয়নি। ৬ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) বিকেল পাঁচটায় সার্চ কমিটির পরবর্তী বৈঠক হবে। আমরা আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিটি তাদের সুপারিশ চূড়ান্ত এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করতে পারবে।’
আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘যোগ্যতার ভিত্তি সততা, দক্ষতা, দলনিরপেক্ষতা, কার্যক্ষমতা বিবেচনায় বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে সর্বোত্তম ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এক মাসের সংলাপ শেষে গত ২৫ জানুয়ারি ছয় সদস্যের এই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। সেদিনই ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদেরকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
২৭ জানুয়ারি প্রথম বৈঠকে বসে সার্চ কমিটি। ওই বৈঠকে ১২ বিশিষ্টব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শর পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়া ৩১ দলের কাছে পাঁচটি করে নাম চাওয়া হয়।
৩০ জানুয়ারি ১২ বিশিষ্ট জনের সঙ্গে বৈঠকে বসে সার্চ কমিটি। আর পরদিন ২৬টি দল পরদিন তাদের পছন্দের পাঁচ জন করে নাম জমা দেয়।
১ ফেব্রুয়ারি আবারও চার বিশিষ্টজনের সঙ্গে বৈঠক করে সার্চ কমিটি। একই দিন জানানো হয়, রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে পাওয়া নামগুলো থেকে ২০টি নাম বাছাই করে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়েছে।
আগামী সপ্তাহেই শেষ হচ্ছে কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে সার্চ কমিটির মেয়াদ। তার আগেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। আর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণে সার্চ কমিটিতে সুপারিশ জমা দিতে হবে ৮ ফেব্রুয়ারির আগে।
সার্চ কমিটির সদস্যসচিব মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে তালিকা দিয়েছে, তার বাইরেও যদি কারও নাম সুপারিশ করতে হয়, তাহলে সার্চ কমিটি তাও করবে।
২০১২ সালে নির্বাচন কমিশন গঠনের আগেও একইভাবে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
(ঢাকাটাইমস/০২ফেব্রুয়ারি/টিএ/ডব্লিউবি)

মন্তব্য করুন