আজ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে

তিন দাবিতে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। আজ বৃহস্পতিবার সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল (বুধবার) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের সংগঠন জুবায়ের আহমেদ। তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে। আগামীকাল সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করা হলো। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা হবে না।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশের হামলায় তাদের ৬০ থেকে ৬৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশ দাবি করেছে, সংঘর্ষে তাদের আট সদস্য আহত হয়ে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, নবম গ্রেডে সহকারী প্রকৌশলী পদে শুধু বিএসসি ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ দিতে হবে এবং তা পরীক্ষার মাধ্যমে হতে হবে।
দশম গ্রেডে উচ্চ ডিগ্রিধারীরাও যেন আবেদন করতে পারেন, সেই সুযোগ রাখতে হবে।
কেবল বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্নকারীরাই যেন নিজেদের প্রকৌশলী লিখতে পারেন—এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন বুয়েটসহ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে যমুনার দিকে অগ্রসর হলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় ধস্তাধস্তি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। পাল্টা শিক্ষার্থীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। ঘটনাস্থলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম জানান, “শিক্ষার্থীদের আলোচনার জন্য শাহবাগেই অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা হঠাৎ যমুনার দিকে রওনা দেন এবং ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে।”
ঢাকার ঘটনায় বুয়েটের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেছেন।
এদিকে প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারীদের পেশাগত দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে এ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বিবেচনা করে ন্যায্য সমাধান প্রস্তাব করা হবে।” তবে আন্দোলনকারীরা এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৮ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন