মনে করেছিলাম সাঈদীর সাজা মওকুফ হবে: মাহবুব
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা মওকুফ হওয়ার আশায় ছিলেন তার আইনজীবী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন। তবে রিভিউ আবেদনের পর আপিল বিভাগের রায়ের পর এ নিয়ে আর কিছু বলার থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সোমবার জামায়াত নেতার ফাঁসি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের এবং খালাস চেয়ে আসামিপক্ষের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। আবেদন করার দেড় বছর পর এর ওপর শুনানি শুরু হয় রবিবার। আর দুই কার্যদিবসেই শেষ হল সব আইনি প্রক্রিয়া।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পিরোজপুরে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিসাবালি নামে দুই জনকে হত্যার দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ, মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দেয়া, জোর করে করে ধর্মান্তকরণের আরও ছয়টি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে প্রমাণ হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো সাজা ঘোষণা করা হয়নি।
পরে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সাঈদীর ফাঁসির সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় আপিল বিভাগ। ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ প্রমাণ হলেও তিনটিতে খালাস দেয় সর্বোচ্চ আদালত। আর তিনটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি একটি অভিযোগে ১০ বছর এবং একটিতে ১২ বছর সাজা দেয়া হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে সাজা বাড়িয়ে ফাঁসি দিতে এবং সাঈদী আপিল করেন মুক্তি চেয়ে।
রিভিউ আবেদনের দেড় বছর পর রবিবার শুরু হয় শুনানি। আর দুই দিনের মাথায় নিষ্পত্তি হল মামলার। রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজাই বহাল থাকল। ফলে তাকে কারাগারে বন্দী অবস্থাতেই মরতে হবে।
আপিল বিভাগের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদেরকে সাঈদীর আইনজীবী বিএনপি নেতা খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম আদালত সাঈদীর সাজা মওকুফ করে দেবে। কিন্তু আপিল বিভাগ তা না করে আমাদের দুইটি রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘যেহেতু সর্বোচ্চ আদালতের রায় এটি, অবশ্যই এর উপরে আমাদের কিছু বলার নেই।’
সাঈদীর আইনজীবী বলেন, ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর এই (আমৃত্যু) সাজা হলো তিনটি চার্জে। আমরা রিভিউ করেছিলাম। শুনানি হয়েছে। আমাদের শুনানির পর তা খারিজ করে দেওয়া হয়।’
মাহবুব হোসেন বলেন, আপিল বিভাগ থেকে বলা হয়েছে যে, একবার লাইফ (আমৃত্যু কারাদণ্ড) সাজা দিলে তা পুনর্বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার নজির নেই। সে কারণে আপিল বিভাগ সেটা খারিজ করে দিয়েছে।
ঢাকাটাইমস/১৫মে/জিএম/ডব্লিউবি