ময়মনসিংহে তিতির পালনে স্বপ্ন বুনছেন খামারি

মনোনেশ দাস, ময়মনসিংহ
  প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল ২০১৭, ০৯:৪৫
অ- অ+

বাংলাদেশে বনাঞ্চলে দেখা মিলত তিতির পাখির। বিলুপ্ত হওয়ায় বন্যপ্রাণী আইনে এখন সংরক্ষিত। সেই তিতির এখন গৃহস্থের বাড়িতে। তিতির পালন করে লাভের স্বপ্ন বুনেছেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার দাপুনিয়া বাজার সংলগ্ন বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল।

জান পাখি ফার্ম নামে খামারে এখন তার কয়েকশ তিতির। আর মাত্র এক মাস পরই এই তিতিরগুলো ডিম দেবে। তার সংগৃহিত প্রতিটি ৬শ টাকা মূল্যের বাচ্চা এখন ২ হাজার টাকা দামে বিক্রি করছেন বলে জানান ইব্রাহিম খলিল।

আমরা যাকে চায়না মুরগি হিসেবে চিনি তারাই মূলত তিতির। আফ্রিকার এই পাখিটি ব্রিটিশ আমলে ইংরেজদের হাত ধরে তাদের শাসনামলে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবেশ করে। সংক্রামক বা পরজীবীঘটিত রোগ কোনটাই সহজে আক্রান্ত করতে পারে না এই পাখি। মাইকোটক্সিন ও আফলাটক্সিনের প্রতি অধিক সহনশীল।

এদের খাদ্য খরচ তুলনামূলক কম। একটি পূর্ণবয়স্ক তিতির দৈনিক ১১৮-১২০ গ্রাম খাবার খায়। কচি ঘাস, পোকামাকড়, সবজি এদের প্রিয় খাবার। গ্রামে সহজেই পাওয়া যায় এসব খাবার। সম্পূরক খাদ্যের পরিমাণ কম লাগে। এদের জন্য ভাল মানের ঘর লাগে না এবং খুব বেশি সরঞ্জামের প্রয়োজন হয় না। প্রতিকূল পরিবেশের সাথে এরা নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।

এটি লালন-পালনকারীরা জানান, দেশি মুরগির চেয়ে লাভজনক তিতির পালন। তাছাড়া হচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় এর সংরক্ষণও।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষক ও পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুবাস চন্দ্র দাস জানান, গত ৩ দশক আগেও গ্রামাঞ্চলে দেশি মুরগির সাথে তিতিরদের চলাফেরা করতে দেখা যেত। কিন্তু হঠাৎ করেই তারা উধাও হয়ে যায়। সংখ্যায় স্বল্প এ পাখিদের দেখা মেলে খাচায় বন্দী অবস্থায়।

২০১০ সাল থেকে বাকৃবির পোল্ট্রি খামারে তিতির পাখি পালন, পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা শুরু হয়। বাচ্চা উৎপাদন ও তা পালনের সকল ধাপে চলে ৭ বছর ধরে গবেষণা।

সারাদেশে এই পাখি ছড়িয়ে দিতে বিনামূল্যে অনেককেই তিনি এই পাখি বিতরণ করা হয় ।

সেখান থেকে এই তিতির সংগ্রহ করেন ইব্রাহিম। তিনি জানান, দেশি মুরগি যেখানে ৬ মাসে সর্বোচ্চ ১ কেজি ওজনের হয় সেখানে তিতির পাখি দেড় কেজি বা তার বেশি। আবার একটি দেশি মুরগি বছরে ৫০-৬০টা ডিম দেয় যেখানে একটি তিতির পাখি বছরে প্রায় ১০০-১২০টি ডিম দেয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে গ্রামীণ পরিবেশে দেশি হাঁস-মুরগির সাথে তিতির পাখি পালনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

বিজ্ঞানভিত্তিক তিতির পালন করে দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে পড়বে একটি ইতিবাচক প্রভাব।

(ঢাকাটাইমস/২৬এপ্রিল/ব্যুরো প্রধান/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ভ্যাপসা গরম ও ভিড়ের কারণে রমনা পার্কেও অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা
প্রেম এক অনিঃশেষ অনুভুতির নাম: এম এম মাহবুব হাসান-এর ‘প্রথম প্রেমের স্পর্শ’ নিয়ে এক শিহরিত শিল্প-ভ্রমণ
গোপালগঞ্জের কারফিউ ১৪ ঘন্টার জন্য শিথিল
ট্রেন থেকে নেমেই জামায়াত নেতাকর্মীদের স্লোগান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা