ছয় বছর ধরে অচল কালিকাপ্রসাদ স্টেশন

স্টেশন আছে, নেই স্টেশন মাস্টার। এতে ছয় বছর ধরে বন্ধ যাত্রীসেবা। ২০১৪ সাল থেকে ভৈরবের কালিকাপ্রসাদ রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। হাজারো যাত্রী দুর্ভোগে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন বলে দাবি এলাকাবাসীর।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, যাত্রীশূন্য স্টেশন মাস্টারের রুমসহ সবখানেই ঝুলছে তালা। এমন সময়ই পাশের মসজিদ হতে বের হয়ে আসেন এ স্টেশনে দীর্ঘদিন কর্মরত থাকা যান্ত্রিক বিভাগের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কর্মী ফজলুল রহমান।
তিনি জানান, ১৯১৫ সালের ২০ জানুয়ারিতে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। তারপর থেকেই অবসর সময় কাটানোর জন্য নিজ কর্মস্থল ত্যাগ না করে দীর্ঘদিন চাকরি করার পর এ স্টেশনে প্রতি মায়ার টানে স্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন তিনি। থাকেন স্টেশনের পাশের একটি মসজিদে, আর খাবারের ব্যবস্থা করেন কর্মজীবনের স্থানীয় এক সহকর্মীর বাসায়।
অচল এ স্টেশন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, এই স্টেশনে ১১ জন কর্মকর্তা কর্মচারী থাকার কথা, কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় নেই কোন কর্মচারী। দীর্ঘ ছয় বছর আগে এ স্টেশনে কর্মরত ছিলেন শরফুল ইসলাম নামে একজন স্টেশন মাস্টার। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি কর্মজীবন হতে অবসর গ্রহণ করার পর থেকেই এই স্টেশনের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। যদিও পরর্বতীতে কালিকাপ্রসাদ রেলওয়ে স্টেশনে মঈনুল ইসলাম নামে একজন স্টেশন মাস্টার হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যোগ দেন। তার কিছুদিন পরই স্টেশনে কোনরকম কার্যক্রম না থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে চলে যান তিনি। তারপর থেকেই স্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
স্টেশন সংলগ্ন বসবাসকারী ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিনিয়ত ব্যবসায়িক কাজে বিভিন্ন জায়গায় মালামাল সরবরাহ করে থাকেন। দীর্ঘদিন এ স্টেশনে কোন মাস্টার ও কর্মচারী না থাকায় মালামাল ও এলাকায় উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী অন্য এলাকায় সরবরাহ করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যায় বলে জানান তিনি।
কালিকাপ্রসাদ এলাকার বাসিন্দা রাকিব মিয়া বলেন, স্টেশন মাস্টার না থাকায় এই স্টেশনে ট্রেন থামে না। যদিও কোন ট্রেন থামে, কিন্তু মাস্টার না থাকায় যাত্রীরা ট্রেনের কোন টিকেট কাটাতে পারে না। ছয় বছর ধরে এ স্টেশনে নেই মাস্টার, নেই কোন কর্মচারী। ফলে যাত্রী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজারো ট্রেনযাত্রী।
আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, কয়েকটা লোকাল ট্রেন ছাড়া আর কোন ইন্টারসিটি এখানে থামে না। যদি ভালো মানের ট্রেন থামত, তাহলে এলাকাবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধা পেত। আর ট্রেন না থাকায় দুর্ভোগে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
এলাকাবাসীর দাবি সরকার যেন শিগগির এই স্টেশনে যাত্রীসেবা শুরু করে এলাকার জনগণের যোগাযোগ ব্যবস্থা যেন সহজতর করে।
(ঢাকাটাইমস/২৬ডিসেম্বর/এলএ)

মন্তব্য করুন