মাশরাফির কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে ভাঙা হাতে ব্যাট করেছিলেন তামিম

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৩ মে ২০২০, ১১:৪৭
অ- অ+

ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশে ‍তুমুল জনপ্রিয়তা রয়েছে ওয়ানডের নতুন অধিনায়ক তামিম ইকবালের, ২০১৮ এশিয়া কাপে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভাঙা আঙুল নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মাঠে নেমে তামিমের অসামান্য আত্মত্যাগে জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে গেছে। তবে মানবিক সেই সিদ্ধান্তের পরামর্শ পেয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কাছ থেকে। মুশফিকের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামের আড্ডায় সেই কথাই জানালেন তামিম।

শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১ রানেই নেই বাংলাদেশের দুই উইকেট। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে লাকমলের করা বলে আঙুল ভেঙে হাসপাতালে তামিম ইকবাল। বাঁহাতি এই ওপেনারে হাতে সেলাই লেগেছে কয়েকটি, ততক্ষণে মুশফিক-মিঠুনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ফিফটি করে মিঠুন ফিরলে আবারও ধ্বস বাংলাদেশ শিবিরে। অন্য প্রান্তে আসা যাওয়ার মিছিলে ঠায় দাঁড়িয়ে মুশফিক। তামিম ড্রেসিংরুমে ফিরেই ভাঙা আর সেলাই করা আঙুল নিয়েই ক্রিজে যাওয়ার প্রস্তাব পান মাশরাফির কাছ থেকে।

ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তামিম বলেন, ‘আমি যখন হসপিটালে যাচ্ছিলাম তখন আমি অনবরত মোবাইলে স্কোরটা দেখছিলাম। আমাদের দুই-তিনটা উইকেট দ্রুত পড়ে গেল এরপর তোর (মুশফিক) আর মিঠুন আলির একটা ভালো জুটি হল। এটা আমি চিকিৎসকের কাছে পৌঁছানোর আগের চিত্র। আমি আবার যখন ব্যাক করতেছি মাঠে তখন আবার একটা ধ্বস নামলো, দুই-তিনটা উইকেট পড়ে গেল।’

তামিম মুশফিককে বলেন, ‘আমি যখন ড্রেসিং রুমে ঢুকি দেখি তুই ব্যাটিং করছিস আর কোনরকম চলছে আরকি। তো হঠাৎ কথা বলতে বলতে মাশরাফি ভাই বলল এই যা ব্যাটিং কর। আমি ফাজলামি হিসেবে নিয়েছি শুরুতে। আমি ভাবলাম এটা কি বলে, আমাদের ফিজিও যে ছিল উনিও বলছে পাগল নাকি। আলোচনা করতে করতে দেখি তুই আবার পেটানো শুরু করেছিস। তোরও ১০০ এর কাছাকাছি হয়ে গেছে, তো তখন আলোচনা করতে করতে দেখি ব্যাপারটা সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছে।’

‘তখন আমরা একটা সিদ্ধান্তে আসলাম যে যদি মুশফিক স্ট্রাইকে থাকে তাহলে আমি যাবো। তুই স্ট্রাইকে থাকলে কারণ আমাকে ডাক্তার বলছে এটা নিয়ে দৌড়ানোও যাবেনা যেহেতু নতুন ভাঙা রিপ্লেস হওয়ার একটা ব্যাপার আছে। তো আমি বললাম ঠিক আছে ও যদি স্ট্রাইকে থাকে আমারতো যেতেই হবে, হয়তো একটু দৌড়াতে হবে আর তো বেশি কিছু না। কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে ৫ নম্বর বলে মুস্তাফিজ আউট হয়ে গেল।’

‘আমাদের কিছু মুহূর্ত আসে যেখানে ৫ সেকন্ডে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, সিদ্ধান্তটা কি সেটা হয়তো কেউ বুঝেওনা ঐ সময়টায়। তো আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে, আমি যখন ব্যাটটা নিয়ে হাঁটা শুরু করলাম তখন আমাদের কোচ স্টিভ রোডস এসে থামালো আমায়। পেছন থেকে ডেকে বলল কি করছো তুমি? আমি বললাম সমস্যা নেই, যাই। তখন সে আমাকে বলল- না, এরকমটা প্ল্যান ছিলনা।’

‘আমি পাল্টা বলেছি যে আমি ঠিকঠাক সামলে নিতে পারবো। সে বলেছে হ্যা, যেতে পারো তবে এর দায়ভার পুরোপুরি তোমাকে নিতে হবে। মানে তখন আর দায়ভার তারা কেউ নিতে চাচ্ছিলনা। আর ঐ মোশনের মধ্যেই আমি বলটি খেলেছি। আমার জন্য ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে সহজ বলটাই ও করছে। ও যদি আমার জন্য ইয়র্কার করতো কিংবা উইকেটে বল করতো অনেক কঠিন হয়ে যেত।’

করোনাভাইরাসে বদ্ধ সময়ে ‘দর্শকদের বিনোদিত’ করতে এ লাইভ আড্ডার আয়োজন করেছিলেন তামিম, সেখানেই তার বিরাট আত্মত্যাগের নেপথ্যের নায়ক মাশরাফির কথা তুলে ধরেন। এছাড়াও মুশফিকও পেসার থেকে উইকেটকিপার হয়ে যাওয়ার গল্প শোনান।

(ঢাকাটাইমস/০৩ মে/এআইএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কাকরাইল মোড়ে বাসের পর বাসে আসছেন জবি শিক্ষার্থীরা, চলছে অবস্থান
ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব দিতে নগরভবনের ভেতরে অবস্থান নিয়েছে হাজারো নগরবাসী
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উচ্ছেদ অভিযান, গুঁড়িয়ে দিচ্ছে অবৈধ দোকানপাট
ময়মনসিংহ-১১ আসনের সাবেক এমপি কাজিম উদ্দিন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা