ভার্চুয়াল শুনানি: ই-মেইলে সংগ্রাম সম্পাদকের জামিন আবেদন জমা

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে শুনানির জন্য দেশের উচ্চ আদালত হাইকোর্টে ই-মেইলে আবেদন শুরু করেছেন আইনজীবীরা। এ সময় জমা পড়েছে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক আবুল আসাদের জামিন আবেদন।
সোমবার হাইকোর্টের নির্ধারিত বেঞ্চে কয়েকটি আবেদনের সঙ্গে তার আবেদন জমা পড়ে।
হাইকোর্টের নির্ধারিত বেঞ্চে খবর নিয়ে জানা যায়, হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চে তিনটি জামিন আবেদন জমা পড়েছে। একটি করেছেন আইনজীবী দেওয়ান মো. আবু ওবায়েদ হোসেন। অপর দুটি করেছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মো. শাহীন মিয়া।
এ বিষয়ে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক আবুল আসাদের জামিন আবেদন করেছি। তিনি বয়স্ক ও অসুস্থ। তাই তার জামিন আবেদন করেছি। আশা করছি জামিন পাব।
১৩ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় আবুল আসাদেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’ উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আফজাল বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদকসহ ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়।
এর আগে ১২ ডিসেম্বর দৈনিক সংগ্রামে সংবাদটি প্রকাশিত হয়। এর প্রতিবাদে পত্রিকা অফিসের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন। খবর পেয়ে সংগ্রাম কার্যালয় থেকে সম্পাদক আবুল আসাদকে হেফাজতে নেয় হাতিরঝিল থানা পুলিশ।
এছাড়া মক্কেলদের পক্ষে ই-মেইলে আবেদন করছেন আরেক আইনজীবী দেওয়ান মো.আবু ওবায়েদ হোসেন। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা জামিনই জরুরি। কিন্তু এক বছর ধরে আমার মক্কেল কারাগারে। তার জামিন দরকার। এ জামিন আবেদন আগেও করেছিলাম। কিন্তু তখন শুনানি হয়নি।
ভার্চুয়াল কোর্টের বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে আগে থেকে এটি ছিল। এটা সময়ের দাবি। আমরা একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে শুরু করেছি। এটা ভালো উদ্যোগ।
আবেদন করা আরেক আইনজীবী শাহীন মিয়া বলেন, আমি ই-মেইলে একটি সামারি পাঠিয়েছি। যদি ভালো ফিডব্যাক পাই তাহলে পরিপূর্ণ জামিন আবেদন করব।
এখন এসব আবেদন কতটুকু জরুরি তা যাচাইয়ের পর শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে কজলিস্টে তালিকাভুক্ত হবে। এরপর ভিডিও কনফারেন্সে নির্ধারিত সময়ে আবেদনের ওপর শুনানি হবে। যেখানে আদালত, আবেদনকারীপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ যুক্ত থাকবেন।
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতে সাধারণ ছুটিতে আদালত বন্ধ রেখে গত ২৬ এপ্রিল ভার্চুয়াল কোর্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য সুপ্রিম কোর্টের রুলস কমিটি পুনরায় গঠন এবং ভার্চুয়াল কোর্ট চালুর জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ওইদিন প্রথমবারের ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের ৮৮ জন বিচারপতি।
এর আগে গত ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
এর দুদিন পর ৯ মে ভার্চুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমতে হাইকোর্ট বিভাগ, সময় সময় প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।
(ঢাকাটাইমস/১৩মে/এআইএম/ইএস)

মন্তব্য করুন